এমনিতেই ট্রেন ছেড়েছিল এক ঘণ্টা পরে। কিন্তু তার কিছুক্ষণ আগেই অসংরক্ষিত কামরা থেকে বৈধ টিকিটধারী যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল আরপিএফের জওয়ানদের বিরুদ্ধে। বুধবার সন্ধ্যায় হাওড়া স্টেশনের ঘটনা। এর জেরে পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার বহু যাত্রীকে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হল।
কলকাতায় দিনের কাজ সেরে বহু যাত্রী ১৮ নম্বর প্লাটফর্ম থেকে হাওড়া-পুরুলিয়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের একটি অসংরক্ষিত কামরায় ওঠেন। পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা মহম্মদ মিসবাউদ্দিনের দাবি, ‘‘আমি দীর্ঘদিন এই ট্রেনে যাতায়াত করছি। ট্রেনটির ইঞ্জিন থেকে দ্বিতীয় কামরাটি অসংরক্ষিত বলেই সবাই জানে। ট্রেন ছাড়ার কিছুক্ষণ আগে আরপিএফের কয়েকজন জওয়ান এসে আমাদের জানান, কামরাটি সংরক্ষিত। এই কামরা থেকে নেমে যেতে হবে। কিন্তু কামরাটি সংরক্ষিত বলে বারবার জানানো সত্ত্বেও জওয়ানেরা কর্ণপাত করেননি। উল্টে জোর করে নেমে যাওয়ার জন্য।’’ তিনি জানান, শিশু কোলে মা, বয়স্ক যাত্রীরা কোনও রকমে কামরা থেকে নেমে দৌড়ে ভিড়ে ঠাসা অন্য কামরায় ওঠেন।
হয়রানির শিকার হওয়ায় গড়বেতার বাসিন্দা অরিজিৎ তিওয়ারি বলেন, ‘‘কামরাটি যদি সংরক্ষিতই হয়ে থাকে, রেল কেন তা আগাম জানায়নি? একেবারে ট্রেন ছাড়ার আগে এ ভাবে এতগুলো লোকজনকে জোর করে আরপিএফ নামানোয় কত লোককে যে সমস্যায় পড়তে হয়েছে।’’
পুরুলিয়ার কাশীপুরের বাসিন্দা রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ হেমব্রমও ছিলেন ওই কামরায়। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘এমন অভিজ্ঞতা কখনও হয়নি। অসংরক্ষিত কামরা থেকে আরপিএফ এসে সমস্ত যাত্রীদেরই নামিয়ে দিল!’’ তিনি জানান, এ ভাবে ট্রেন ছাড়ার আগের মুহূর্তে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ায় অনেকে অত্যন্ত অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়েন। কামরার আরেক যাত্রী ইন্দ্রাণী মাইতি বলেন, ‘‘ওই ট্রেনটি আরপিএফ সংরক্ষিত বলে দাবি করলেও কোথাও তা লেখা ছিল না। এতটা পথ ভিড়ে ঠাসা কামরায় দাঁড়িয়ে আসতে সবার খুব কষ্ট হয়েছে।’’
আরপিএফ-এর হাওড়ার সিনিয়র কমান্ড্যান্ট সৌরভ ত্রিবেদীকে এ দিন সন্ধ্যায় ফোন করে এবং মেসেজ পাঠিয়েও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, বিষয়টি হাওড়া ডিভিশনের বিষয়। তবে যাত্রীরা অভিযোগ করলে, তা তদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হবে।