বাইক যেতেই পথের জল-কাদা লাগল রবীন্দ্রনাথের ছবিতে

রবীন্দ্রনাথের স্বপ্নের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্বভারতীর এমন জল-কাদার ছবি দেখে বিরক্ত বেশিরভাগই পর্যটকরা। অথচ, বর্ষার শান্তিনিকেতন দেখতে এসে নাকাল হতে হচ্ছে তাঁদের।

Advertisement

অনির্বাণ সেন

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৭ ০৮:০০
Share:

বেহাল: জল-কাদা ভর্তি শান্তিনিকেতনের পথ। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

চিত্র এক। ঘটনাস্থল শান্তিনিকেতন ক্লাব মোড়। ছাতা মাথায় চলেছেন একদল পর্যটক। গন্তব্য রবীন্দ্রভবন। রাস্তায় বর্ষার জমা জল থেকে কোনও রকমে পা বাঁচিয়ে তাঁরা চলছেন। হঠাৎ-ই তাঁদের পাশ দিয়ে চলে গেল একটি চারচাকা। আর যাওয়ার সময় গাড়ির চাকা গর্তে পড়ে ছিটিয়ে গেল নোংরা কাদা মাটি মেশানো জল।

Advertisement

চিত্র দু’ই। এ বার আগের ঘটনাস্থল থেকে শ্রীনিকেতনের দিকে যাওয়ার পথে। সারা বছর ধরে এখানে পর্যটকদের জন্য রবীন্দ্রনাথের মূর্তি, শান্তিনিকেতনি ব্যাগ-সহ হাতের কাজের নানা জিনিস বিক্রি করেন কয়েকজন ঠেলা গাড়িতে। রাস্তা দিয়ে জোরে চলে গেল বাইক। আর সেই বাইকের চাকা থেকে রাস্তায় জমা কাদা জল ছিটল তাঁদের ঠেলা গাড়িতে। নোংরা কাদা জলের হাত থেকে রেহাই পেল না রবীন্দ্রনাথের ছবি-মূর্তিও!

রবীন্দ্রনাথের স্বপ্নের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্বভারতীর এমন জল-কাদার ছবি দেখে বিরক্ত বেশিরভাগই পর্যটকরা। অথচ, বর্ষার শান্তিনিকেতন দেখতে এসে নাকাল হতে হচ্ছে তাঁদের। এখানে পড়াশোনা করতে এসে বা বেড়াতে এসে বেহাল রাস্তার কারণে দুর্ভোগে পড়তে হয় নিত্য পড়ুয়া থেকে পর্যটক— সবাইকেই।

Advertisement

এ ছবি বর্ষায় প্রতিবারের। শান্তিনেকেতনকে মুখ করে বিজ্ঞাপনে ছবি দেয় পর্যটন দফতর। অথচ, বিশ্বভারতী বা রাজ্য সরকারের কোনও মহলেরই হেলদোল নেই এমন কাদা-জলের পথ নিয়ে।

শান্তিনিকেতন ডাকঘরের কাছ থেকে প্রায় দু’কিলোমিটার রস্তা চলে গেছে শ্রীনিকেতন পর্যন্ত। আর এই রাস্তার উপর দিয়েই যেতে হয় উপাসনা গৃহ, কলাভবন, নন্দন, রবীন্দ্র মিউজিয়াম, পল্লিশিক্ষা ভবন, সঙ্গীতশিক্ষা ভবন-সহ একাধিক জায়গায়। কিন্তু সারা রাস্তা জুড়ে রয়েছে ছোট বড় নানা গর্ত। সামান্য বৃষ্টিতেই সেখানে জল জমে সে রাস্তা হয়ে যায় চলাচলের অনুপযোগী। রাস্তার এ বেহাল দশার কথা মেনে নিয়েছেন অনেকেই।

পাঠভবনের অধ্যাপক কিশোর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এটি দীর্ঘ দিনের একটি সমস্যা। এই নিয়ে আমরা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে আগেও জানিয়েছি। কিন্তু কিছু হয়নি।’’

কলাভবনের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র দীপাঞ্জন সরকার থেকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিট প্রেসিডেন্ট অচীন্ত বাগদী সবারই অভিযোগ, ‘‘সামান্য বৃষ্টিতে বেহাল হয়ে পরে এই রাস্তা। কর্তৃপক্ষের অবিলম্বে এ ব্যাপারে ভাবা উচিত।’’

ব্যান্ডেল থেকে সপিবারে রবিবার বেড়াতে এসে ছিলেন অশোক সাহা। তিনি বা, কাছের আমোদপুর থেকে পড়াশোনা সংক্রান্ত খোঁজ খবরের জন্য এসেছিলেন মিতালী দাস। তাঁরা বললেন, ‘‘এ রাস্তায় হাঁটা দায়। জল কাদা বাঁচানোর জন্য রাস্তার দিকে তাকিয়ে হাঁটব না সামনে পিছনে তাকিয়ে গাড়ি দেখব। জল কাদা থেকে বাঁচতে গিয়ে যে কোনও সময় গাড়ির ধাক্কা খেতে হবে।’’

সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন বিশ্বভারতী কর্মসচিব অমিত হাজরা।

তিনি বলেন, ‘‘এই সমস্যার কথা জানি। আমাদের কারিগরি দফতরকে জানিয়েছি। তছাড়া পিডব্লিউডি দফতরের সঙ্গে যৌথভাবে ওই রাস্তার সংস্কার হয়। এ নিয়ে কথা চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন