রজতপুর-নিমতলা রাস্তায় আলু চাষিদের পথ অবরোধ।—নিজস্ব চিত্র।
সরকারের আলু কেনা নিয়ে ক্রমশই জটিলতা বাড়ছে জেলায়। কোথাও পথে নেমে আলু ছড়িয়ে রেখে বিক্ষোভ তো, কোথাও শুরু পথ অবরোধ। আলু চাষিদের অভিযোগ, সরকার নির্ধারিত মূল্যে জেলার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র এবং ক্লাস এইট পর্যন্ত চালু থাকা ডি ডে মিল প্রকল্পের জন্য আলু কেনার সরকারি নির্দেশ সোমবার পাঠিয়ে দেওয়া হলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত কোনও আলু কেনা হয়নি।
জেলার সব থেকে বেশি আলু উত্পাদিত এলাকা হল ময়ূরেশ্বর ২ ব্লক ও নলহাটি ১ ব্লক। ওই দুই ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকদের দাবি অবশ্য বৃহস্পতিবার থেকে আলু কেনা শুরু হবে।
নলহাটি ১ ব্লকের বিডিও তাপস বিশ্বাস বলেন, “আলু কেনার ব্যাপারে আজকে চিঠি পেয়েছি। ব্লকের সমস্ত পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে আলোচনার জন্য আজ বুধবার বসা হবে। সেখানে সিদ্ধান্ত নিয়ে বুধবার এলাকায় প্রচার চালিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে আলু কেনা শুরু করব।”
বিডিও আরো জানান, আলু কেনার জন্য পঞ্চায়েত সমিতির অধীন বাউটিয়া, হরিদাসপুর এবং কুরুমগ্রাম এই তিনটি পঞ্চায়েত এলাকায় চারটি পয়েন্ট করা হবে। তিনি জানান, আলু বিক্রি বাবদ প্রাপ্য টাকা চাষিদের কাছ থেকে ব্যাঙ্কের পাশ বইয়ে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে।
পরিস্থিতি এমনই, অবিলম্বে আলু কেনা শুরু না হলে সরকারে প্রতি ক্ষোভ বাড়বে বলে মনে করছে জেলার বিভিন্নমহল। চাষিদের দাবি, বাজারে আলুর দাম নেই। উত্পাদিত আলুর ঠাঁই নেই হিমঘরেও। ফলে সহায়ক মূল্যে আলুকেনা দ্রুত শুরু করা দরকার চাষিদের। এ দিন হিমঘরে আলু রাখার সরকারি দায়িত্ব-সহ কৃষিঋণ মুকুবের আর্জিতে রাস্তায় আলু ফেলে প্রতীকী বিক্ষোভ ও পথ অবরোধ করলেন বোলপুর এলাকার আলু চাষিরা। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামবে।
মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি বোলপুর থানার, সিয়ান-মুলুক পঞ্চায়েতের দুর্গাপুরে। এ দিন সকালে রজতপুর থেকে নিমতলা যাওয়ার পথে দুর্গা পুরের কাছে অবরোধ করেন শতাধিক চাষি রাস্তায় আলু ফেলে প্রতীকী অবস্থান, বিক্ষোভ ও পথ অবরোধ করেন। ওই পঞ্চায়েতের দুর্গাপুর, ধান্যসড়া ও শিমুলিয়া এলাকার শতাধিক আলুচাষি এ দিনের কর্মসূচিতে যোগ দেন।
স্থানীয় দুর্গাপুরের আলুচাষি দীনেশ ঘড়ুই, প্রভাত মেটে, সুকুমার মাঝি, শিমুলিয়ার প্রদীপ আদক ও ধান্যসড়ার প্রদীপ মাঝি, সোম মুর্মুরা জানান, বিঘের পর বিঘে আলু চাষ হয়েছে। দাম পাওয়া যাচ্ছে না। সরকার সহায়ক মূল্যে আলু কেনার নাম নিচ্ছে না। অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে আলু নষ্ট হবে। চাষিরা সর্বস্বান্ত হবে।