বালির গাড়ি আটকে দিলেন গ্রামবাসী

নদী থেকে বালি তোলার সময়ে বালি বোঝাই গাড়ি আটক করলেন গ্রামবাসীরা। ঘটনাটি কংসাবতী নদীর পাশে পুরুলিয়া মফস্সল থানার সোনাইজুড়ি পঞ্চায়েতের কোটলই গ্রামের। রবিবার সকালে নদী থেকে বালি তোলার সময়ে গ্রামের বাসিন্দারা লরি ও ট্রাক্টর মিলিয়ে মোট ছ’টি গাড়ি আটকে রাখেন। পরে গাড়িগুলিকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৫ ০০:৪০
Share:

কোটলই গ্রামে আটকে রাখা হয়েছে বালির গাড়ি। এসেছে পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র।

নদী থেকে বালি তোলার সময়ে বালি বোঝাই গাড়ি আটক করলেন গ্রামবাসীরা। ঘটনাটি কংসাবতী নদীর পাশে পুরুলিয়া মফস্সল থানার সোনাইজুড়ি পঞ্চায়েতের কোটলই গ্রামের।

Advertisement

রবিবার সকালে নদী থেকে বালি তোলার সময়ে গ্রামের বাসিন্দারা লরি ও ট্রাক্টর মিলিয়ে মোট ছ’টি গাড়ি আটকে রাখেন। পরে গাড়িগুলিকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এ দিন কোটলই ঘাটে বালির গাড়ি আটক করার সময়ে তাঁরা গাড়িগুলির কাছে অনুমতিপত্র দেখতে চেয়েছিলেন। তাতে দেখা যায়, মফস্সল থানার চাষমোড়ের বাসিন্দা শিবু মাহাতোর নামে পাশের পঞ্চায়েত ডুরকুর সাত শিমূলিয়া ঘাটের বালি তোলার অনুমতি রয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেই অনুমতিপত্র নিয়ে বেআইনি ভাবে বালি তোলা হচ্ছিল সোনাইজুড়ি পঞ্চায়েতের কোটলই থেকে।

পুরুলিয়ার দামোদর, কংসাবতী, দ্বারকেশ্বর এই ধরনের বড় নদীগুলি থেকে অবৈধ ভাবে বালি তোলার অভিযোগ রয়েছে সেচ দফতরের কাছে। কিন্তু সীমিত পরিকাঠামো নিয়ে সর্বত্র অভিযান চালিয়ে এই বালি কারবারে পুরোপুরি রাশ টানা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে সেচ দফতরের পক্ষে। এ দিন কোটলই গ্রামের ঘটনায় ফের সামনে এসেছে অবৈধ ভাবে বালির কারবারের ঘটনা। সেচ দফতরের পুরুলিয়ার সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার কৌস্তভজ্যোতি পাল স্থানীয় বাসিন্দাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘গ্রামবাসীরা এ ভাবে এগিয়ে এলেই অবৈধ বালি কারবার নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব।”

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কংসাবতী নদী থেকে কোটলই গ্রামের ঘাটে দীর্ঘদিন ধরেই বালি তোলে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী। গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, বালি তুলতে আসা গাড়িগুলির কাছে এর আগেও তাঁরা বহুবার অনুমতিপত্র দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিবারই ওই ব্যবসায়ীরা তাঁদেরকে ধমকে-চমকে নিরস্ত করত।

ঘটনা হল, বালি বোঝাই গাড়িগুলি গ্রামের উপর দিয়ে যাতায়াত করায় প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় তৈরি রাস্তাটি বেহাল হয়ে পড়ছে। তার জেরেও বিস্তর ক্ষোভ ছড়িয়েছিল বাসিন্দাদের মধ্যে। রবিবার তাই জনা সত্তর-আশি বাসিন্দা নদী থেকে বালি তুলতে আসা গাড়িগুলিকে আটকে অনুমতিপত্র দেখানোর দাবি করেন। গ্রামের বাসিন্দা বিবেকানন্দ রক্ষিত, তাপস সেনরা বলেন, ‘‘গ্রামের পাশে কংসাবতী নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালি তুলে গ্রামের মধ্যে দিয়ে গাড়িগুলি যাওয়ার জন্য রাস্তা খারাপ হয়ে পড়া-সহ বিভিন্ন সমস্যায় বাসিন্দাদের পড়তে হচ্ছে। আমরা বিষয়টি জেলা পরিষদের সভাধিপতি এবং প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও ফল না হাওয়ায় বাধ্য হয়ে নিজেরাই গাড়িগুলিকে আটক করেছিলাম।” তাঁদের অভিযোগ, সকালের দিকে গাড়ি আটকে পুলিশকে খবর দেওয়া হলেও পুলিশ অনেক দেরিতে গ্রামে পৌঁছয়।

জেলা সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো বলেন, ‘‘সারকারি সম্পত্তি চুরি করলে কাউকেই রেয়াত করা হবে না। পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।” এ দিকে রাজ্য সেচ দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী, শনিবার থেকে জেলায় অবৈধ বালি কারবারে রাশ টানতে বিশেষ অভিযানে নেমেছে জেলার সেচ দফতর। কৌস্তভজ্যোতিবাবু জানিয়েছেন, শনিবার থেকে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে। ওই দিন বলরামপুর, নিতুড়িয়া, হুড়া এলাকা থেকে পাঁচটি অবৈধ বালির গাড়ি আটক করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন