পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
নিখোঁজ ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনার তদন্তে কুকুরের দাবিকে ঘিরে দিনভর দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয়রা। দেহ গাছ থেকে নামিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল পাঠানোকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। ঘটনা বোলপুর থানার সিয়ান-মুলুক পঞ্চায়েতের সুকবাজার ডাঙাপাড়ার সকাল আটটা নাগাদ। মৃতের স্ত্রী কল্যাণী লোহারের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে, পুলিশ একটি খুনের মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
বোলপুরের এসডিপিও অম্লান কুসুম ঘোষ এবং বোলপুর থানার আইসি সুবীর চক্রবর্তীকে ঘিরেও এ দিন দুপুর পর্যন্ত চলে বিক্ষোভ। দেহ ফের ঘটনাস্থলে এনে, নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাসে বিক্ষোভ, অবস্থান প্রত্যাহার করেন স্থানীয়রা। পুলিশ দেহ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম পরেশ লোহার (৪৫)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পাড়ার বাসিন্দা পরেশ লোহার একজন বর্গা চাষি। ট্রাক্টরের ভাড়া ৭০০ টাকা মিটিয়ে গ্রামেরই দাদা অজিত লোহারের বাড়ি যাচ্ছে বলে বেরিয়ে রাতে বাড়ি ফেরননি। তাঁর বাড়ির কিছুটা দূরে জরকাডাঙার একটি আতা গাছে তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখে পরিবারে খবর দেন স্থানীয়রা। ‘খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে’— এমন অভিযোগ তুলে তদন্তে কুকুর আনার দাবি তোলেন স্থানীয়রা। পরেশবাবুর স্ত্রী কল্যাণীদেবীর দাবি, ‘‘বর্গাচাষি ছিলেন আমার স্বামী। জমি বিক্রির টাকা দেওয়াকে কেন্দ্র করে মালিকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছিল। তাঁরা তুলে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছিল। আমরা ভয়ে ছিলাম। সোমবার রাতে তাঁকে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দিয়েছে তাঁরই লোকজন।’’
কুকুর আসার পরে, ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পরিবারের অজ্ঞাতসারে নামিয়ে হাসপাতালে পাঠানোর অভিযোগে ফের উত্তেজনা ছড়ায় গ্রামে।
মৃতের পরিবারের পাশাপাশি গ্রামের বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে হাজির বোলপুরের এসডিপিও এবং থানার আইসিকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। উত্তেজিত জনতার সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয় পুলিশ কর্মীদের। ফের দেহ ঘটনাস্থলে এনে, এসডিপিও নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাস দেন। এরপরে দেহ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায় পুলিশ। কল্যাণীদেবীর দাবি, ‘‘মালিক এবং তাঁর লোকজন খুন করেছেন। সেই বিষয় জানিয়ে থানায় অভিযোগ করেছি। গ্রামেই বসত বাড়ি থাকলেও, জমি মালিক থাকেন বর্ধমানে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরে, খুন না আত্মহত্যার ঘটনা পরিষ্কার হবে।