সেজে উঠছে বাথানেশ্বর সর্বজনীনের মণ্ডপ। নিজস্ব চিত্র
মহাবিশ্বে কি মানুষ একা? আর কোথাও নেই প্রাণের অস্তিত্ব? তাবৎ বিজ্ঞানীকূল এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে ফেরেন। এ প্রশ্ন দার্শনিকের। এ ভাবনা কল্পবিজ্ঞান লেখকের। আর ভামুরিয়া বাথানেশ্বর সর্বজনীন পুজো কমিটিরও।
পুরুলিয়ার অন্যতম বড় বাজেটের পুজো হয় নিতুড়িয়ার বাথানেশ্বরে। এ বার তাঁদের থিম, ‘ভিন গ্রহের খোঁজে’। উদ্যোক্তাদের দাবি, খুদে থেকে বড়— সবাই মজবেন এই ভাবনায়। মণ্ডপ সজ্জার কাজ চলছে জোর কদমে।
প্রতি বছরই থিম পুজো করে বাথানেশ্বর সর্বজনীন। জেলার কয়লাখনি অঞ্চলের এই পুজোয় ভিড়ও হয় প্রচুর। নিতুড়িয়ার আরও বেশ কয়েকটি বড় বাজেটের পুজো রয়েছে। সবার মধ্যে একটা অলিখিত প্রতিযোগিতা চলে। এ বারের লড়াইতে থিমকেই হাতিয়ার করছেন বাথানেশ্বর সর্বজনীনের উদ্যোক্তারা। মাঝে ক’টা মাত্র দিন। নাওয়া খাওয়া ভুলে মণ্ডপেই আপাতত ঘাঁটি গেড়েছেন তাঁরা। এক তাড়া কাগজ নিয়ে শিল্পীদের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন কমিটির সম্পাদক হিরালাল মাজি। ফুরসত পেয়ে জানান, এ বার মণ্ডপ ও প্রতিমা সজ্জায় প্রচুর চমক থাকছে। কেমন? মণ্ডপটাই একটা অজনা উড়ন্ত বস্তু; যাকে বলে ইউএফও। ভিতরে মেদিনীপুরের কাঁথি থেকে আসা শিল্পী বিশ্বরঞ্জন রাজ ফুটিয়ে রূপ দিচ্ছেন অন্য গ্রহের পরিবেশকল্পনাকে। সেখানে প্রাণ রয়েছে। আছে জল। বিচিত্র পশু। মণ্ডপের ভিতরে নীল আলোর সৌরজগৎ। তার মধ্যেই পরিবেশের সঙ্গে মানানসই প্রতিমা। গড়ছেন কৃষ্ণনগরের মৃৎশিল্পী শঙ্কর পাল।
উদ্যোক্তারা জানান, তাঁদের এ বারের ট্যাগ লাইন— ‘আমরা ডাকছি, কেউ কি শুনছো?’ হিরালালবাবু বলেন, ‘‘ভিনগ্রহে প্রাণের খোঁজে নিরন্তর বার্তা পাঠাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। মণ্ডপে আমরা সেটাই তুলে ধরছি।’’ উদ্যোক্তাদের মতে, বর্তমান প্রজন্মের একটা বড় অংশ মোবাইলের ভার্চুয়াল দুনিয়ায় মশগুল। কল্পবিজ্ঞানের শিহরণ ক্রমশ অচেনা হয়ে পড়ছে কিশোর-তরুণদের কাছে। সেই দুনিয়ায় ছোট্ট সফর করিয়ে তাদের সাহিত্য আর চলচ্চিত্রে বিস্ময়ে ফেরাতে চান উদ্যোক্তারা।