Mamata Banerjee to bankura

আসছেন মমতা, নজরে কি মতুয়া-ভোটও

এসআইআরে বাঁকুড়া জেলায় ম্যাপিং-এর বাইরে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের বড় অংশই মতুয়া সম্প্রদায়ের। বড়জোড়া ব্লকে সামগ্রিক ভাবে ১৮৭১ জন ম্যাপিং-এর বাইরে রয়েছেন।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:৫৪
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

এসআইআর আবহে রাজ্যের মতুয়া ভোটের কতখানি বিজেপি ধরে রাখতে পারবে, তা নিয়ে জোর চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাস্থল হিসাবে বড়জোড়াকে বেছে নেওয়া নতুন মাত্রা জুড়েছে সেই চর্চায়।

বাঁকুড়া জেলার দামোদর নদের মানাচরগুলিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষজনের বসবাস বেশি। সবচেয়ে বড় মানাচর রয়েছে বড়জোড়ায়। এছাড়া পাশের ব্লক সোনামুখীতেও রয়েছে মানাচর। পাশাপাশি পাত্রসায়র, ইন্দাস ব্লকের মানাচরগুলির সঙ্গেও বড়জোড়ার যোগাযোগ ভাল রয়েছে। এমনই এলাকায় আগামী ৩০ ডিসেম্বর মমতার দলীয় সভা করতে আসার কথা। সে মতো প্রস্তুতি সভা শুরু করেছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। অনেকদিন পরে বড়জোড়ায় কেন সভা করতে আসছেন মমতা? দলীয় নেতৃত্বের আশা, এসআইআরে ভোটাধিকার হারানোর আশঙ্কায় রয়েছেন মতুয়ারা। হয়তো তাঁদের পাশে থাকার বার্তা ওই সভা থেকে দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।

সূত্রের খবর, এসআইআরে বাঁকুড়া জেলায় ম্যাপিং-এর বাইরে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের বড় অংশই মতুয়া সম্প্রদায়ের। বড়জোড়া ব্লকে সামগ্রিক ভাবে ১৮৭১ জন ম্যাপিং-এর বাইরে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৮৫৫ জনই মানাচরের মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ। বড়জোড়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি কালীদাস মুখোপাধ্যায়ও দাবি করেন, ‘‘মতুয়ারা ভোটাধিকার নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন। তাই বড়জোড়ায় মুখ্যমন্ত্রী কী বলেন, তা জানতে মানাচরের মানুষজনের মধ্যে তুমুল কৌতূহল রয়েছে।’’

সদ্য নদিয়ার তাহেরপুরে জনসভা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সেখানে কপ্টার যেতে পারেনি। তবে সমাবেশের উদ্দেশে ভাষণে মতুয়াদের প্রসঙ্গ মোদী না তোলায় সরব হন তৃণমূল। এ বার মতুয়া প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধতেই বাঁকুড়ার মানাচরের ব্লককে মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থল হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।

এ দিকে রাজ্যে পালাবদলের এত বছর পরেও বড়জোড়া বিধানসভা কেন্দ্রে মজবুত জমি তৃণমূল যে গড়তে পারেনি একের পর এক নির্বাচনের ফলাফলেই তা প্রমাণিত বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে জয়ী হয় সিপিএম। ২০২১-এ তৃণমূল জিতলেও ব্যবধান ছিল ৩,২১৬ ভোটের। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে বিজেপি ১৪ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে যায়। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর সভাকে কেন্দ্র করে নির্বাচনের আগে বড়জোড়ায় তৃণমূল হাওয়া বদলাতে মরিয়া হয়ে উঠছে। ওই সভায় লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত করতে তৎপর হয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সভায় দলের বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার পাশাপাশি পশ্চিম বর্ধমান জেলার কর্মীরাও আসবেন। বাঁকুড়ার তৃণমূল সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মতুয়ারা তো বটেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যেতে সমস্ত স্তরের মানুষ উদগ্রীব। আমরা যানবাহনের ব্যবস্থা করছি।’’

তবে বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজিত অগস্তির দাবি, ‘‘বড়জোড়ার মানুষ তৃণমূলের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। তাঁরা ভাবছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে এনে সভা করিয়ে হাওয়া ঘোরাবেন। তবে তা আর হওয়ার নয়।’’ তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তারাশঙ্কর রায়ের দাবি, ‘‘এই সভা অতীতে হওয়া জেলার যে কোনও সভাকে ছাপিয়ে যাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন