পুরভোটে বাঁকুড়া জেলার তিন পুরসভার জন্য এলেন তিন পর্যবেক্ষক। শুক্রবার তাঁরা সর্বদল বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে কথা বললেন। আলোচনা করলেন ভোটের নিয়ম নীতি নিয়ে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, বাঁকুড়া পুরসভার পর্যবেক্ষক নিযুক্ত হয়েছেন প্রসেনজিৎ হাঁস। তিনি থাকবেন সার্কিট হাউসে। বিষ্ণুপুর পুরসভার পর্যবেক্ষক অতনুকুমার রায় ও সোনামুখীর শীতলচন্দ্র মণ্ডল। দু’জনেই থাকবেন বিষ্ণুপুরের ট্যুরিস্ট লজে। এ দিনের সর্বদল বৈঠকে পর্যপেক্ষকদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক বিজয় ভারতী ও জেলা পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার। বৈঠকে তৃণমূল, সিপিএম এবং বিজেপি-র প্রতিনিধিরা ছিলেন। কংগ্রেসের তরফে কেউ উপস্থিত ছিলেন না। পুরভোটে কোথাও ঝামেলা হলে যাতে পুলিশ এফআইআর নেয়, সে বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে বৈঠকে আবেদন করেন বিজেপি-র জেলা সাধারণ সম্পাদক প্রমোদ শীট। পুলিশ সুপার তাঁকে আশ্বস্ত করে কোথাও সমস্যা হলে সরাসরি তাঁকে জানাতে বলেন। সিপিএমের তরফে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মনোরঞ্জন বসু ও বাঁকুড়া জোনাল কমিটির সদস্য অশোক রায়। একাধিক বিষয় তুলে ধরে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে এ দিনের বৈঠকে প্রশ্ন তোলে সিপিএম। কলকাতায় বিজেপি-র প্রর্থী হতে পারেননি রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।
অশোকবাবু বলেন, “মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন পর্যন্ত ভোটার তালিকায় নাম তোলা যায়। কিন্তু রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে সেই সুযোগ দেওয়া হল না। এই ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।” পুরভোটের কয়েক দিন আগেই পোলিং এজেন্টদের নাম প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ ক্ষেত্রে এজেন্টদের (বিশেষ করে বিরোধী দলের) চিহ্নিত হয়ে যাওয়ার ভয় রয়েছে বলে বৈঠকে অভিমত জানান সিপিএম প্রতিনিধিরা। এ ছাড়াও সরকারি জায়গায় যাতে তৃণমূল দলীয় পতাকা বা পোস্টার না দেয়, সে বিষয়েও আবেদন করেছন তাঁরা। তৃণমূলের তরফে বৈঠকে হাজির দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ চট্টোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছেন, শাসকদল পুরভোটে সমস্ত নিয়মকানুন মেনে চলবে। জেলাশাসক বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলিকে ভোটের নিয়ম নীতি সংক্রান্ত বিষয়ে সচেতন করা হয়েছে বৈঠকে। বিভিন্ন দল তাদের মতামত জানিয়েছে। আমরা সব দিক খতিয়ে দেখব।”
কিন্তু, সর্বদল বৈঠকে তাদের প্রতিনিধি না থাকায় বাঁকুড়া কংগ্রেসের অভ্যন্তরেই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। জাতীয় দল হয়েও সর্বদলীয় বৈঠকে আমরা যেতে পারলাম না। ব্যক্তিগত ভাবে আমি জানতেই পারিনি, বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে।” কংগ্রেসের জেলা সভাপতি নীলমাধব গুপ্ত এ জন্য জেলা প্রশাসনকে দায়ী করে বলেন, “সঠিক সময়ে আমাদের খবর দেওয়া হয়নি। জানতে পারলে কেউ না কেউ যেতেন।” জেলাশাসক অবশ্য জানিয়েছেন, সব দলকেই ঠিক সময়ে বৈঠকের খবর জানানো হয়েছিল।