প্রতীকী ছবি।
ভাগাড়-কাণ্ডের জেরে সমস্ত রকমের মাংস বিক্রেতাদের ‘ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অ্যাক্ট’-এর আওতায় আনতে চলেছে তৃণমূল পরিচালিত নলহাটি পুরসভা। এর আগেই অবশ্য দুবরাজপুর এবং সিউড়ি পুর এলাকায় তৎপরতা শুরু হয়েছে।
পুরপ্রধান রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ জানান, রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে স্বাস্থ্যভবনের ফুড সেফটি কমিশনারের নির্দেশে পুর এলাকায় সমস্ত ধরনের মাংস বিক্রেতাদের ‘ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অ্যাক্ট’-এর আওতায় আনতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই মর্মে পুর এলাকার মাংস বিক্রেতাদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আগামী সোমবার থেকে পুরসভার অস্থায়ী স্যানিটারি ইন্সপেক্টর সহ পুরসভার কর্মী, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবেন্দ্রপ্রসাদ সিংহকে নিয়ে গঠিত পাঁচ জনের কমিটি শহরের মাংস বিক্রেতাদের রাজ্য সরকারের পাঠানো নির্দেশিকার আওতাভুক্ত করার কাজ শুরু করতে চলেছে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, নলহাটি পুর এলাকার মধ্যে জাতীয় সড়কের ধারে ৫৬টি খাবারের দোকানে রান্না করা মাংস বিক্রি করা হয়। শহরে ৩৪টি মাংসের দোকান থেকে কাটা মাংস বিক্রি করা হয়। সমস্ত মাংস বিক্রেতাদের দোকানে ‘ফুড সেফটি কমিশনার’-এর নির্দেশিকা
টাঙিয়ে দেওয়া হবে।
দোকানদারদেরও নিয়ম মেনে চলতে হবে বলে পুরপ্রধান পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছেন।
পুরসভার দাবি, ইতিমধ্যে বিভিন্ন মাংস বিক্রেতাদের দোকানে পুরসভা থেকে অভিযান চালানো হয়েছে। মাংসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু, পুরসভায় মাংস পরীক্ষা করার জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে তা পর্যবেক্ষণ করা যায়নি। আবার পুরসভাতে স্থায়ী ইন্সপেক্টর পদ খালি আছে, নেই স্থায়ী কোনও চিকিৎসক। সেই কারণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অসুবিধা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুরপ্রধান রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ।
আবার নলহাটি পুরসভার জন্মলগ্ন অর্থাৎ ২০০০ সাল থেকেই জঞ্জাল ফেলার জন্য স্থায়ী কোনও জায়গা এখনও গড়ে ওঠেনি। এর ফলে জাতীয় সড়কের ধারে এখনও তা ফেলতে হচ্ছে। পুরপ্রধান অবশ্য জানিয়েছেন, এত অসুবিধা সত্বেও শহরের মাংস বিক্রেতাদের প্রতিনিয়ত নজরদারি চালু আছে।
এ দিকে, ভাগাড় কাণ্ডের জেরে ইতিমধ্যেই শহরে মাংস বিক্রি কমে গিয়েছে বলে অনেক দোকানি জানিয়েছেন। জাতীয় সড়কের ধারের এক খাবারের দোকানের মালিক মণিরুল ইসলাম জানান, নলহাটি মূলত ব্যবসার জায়গা। সেই কারণে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ী ছাড়াও পাশের মুর্শিদাবাদের অনেকে শহরে আসেন। বিহার, ঝাড়খণ্ডের ব্যবসায়ীরাও আসেন। জাতীয় সড়কের ধারের দোকানগুলিতেও ভিড় থাকে যথেষ্টই। কিন্তু, মাংসে মন্দা কমবেশি সব জায়গাতেই। দোকানিদের অবশ্য দাবি, ‘‘বাইরের মানুষেরা খেতে আসনে বলে আমাদের সব সময় খাবারের গুণাগুণ বজায় রাখতে হয়। চাহিদা মতো স্থানীয় বাজার থেকেই মাংস কিনে আনা হয়।’’