বোলপুরে নাম জড়াল তৃণমূল নেতার

উঠবে ফ্ল্যাট, উচ্ছেদের চেষ্টা

ফ্ল্যাট তৈরির জন্য ভাড়াটে দোকানিকে মারধর করে উচ্ছেদের চেষ্টার অভিযোগ উঠল এক প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। দোকানের মালিকের সঙ্গে যোগসাজসেই ওই উচ্ছেদের চেষ্টা বলে বোলপুর থানায় লিখিত ভাবে অভিযোগ করেছেন দোকানি সলিল চক্রবর্তী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৬ ০৩:৫২
Share:

এই দোকান ঘিরেই বিতর্ক। (ডান দিকে) অভিযোগকারী সলিল চক্রবর্তী। —নিজস্ব চিত্র

ফ্ল্যাট তৈরির জন্য ভাড়াটে দোকানিকে মারধর করে উচ্ছেদের চেষ্টার অভিযোগ উঠল এক প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। দোকানের মালিকের সঙ্গে যোগসাজসেই ওই উচ্ছেদের চেষ্টা বলে বোলপুর থানায় লিখিত ভাবে অভিযোগ করেছেন দোকানি সলিল চক্রবর্তী।

Advertisement

শান্তিনিকেতন রাস্তার উপরে বোলপুর পুর এলাকার তিন নম্বর ওয়ার্ডের শিবতলা লাগোয়া এলাকায় দোতলা দোকান রয়েছে স্মৃতিকণা চট্টোপাধ্যায়ের। প্রায় ১৮ বছর ধরে সেখানে ব্যবসা করছেন সলিলবাবু ও তাঁর ভাই শৈবালবাবু। সলিলবাবুর অভিযোগ, প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা বর্তমান কাউন্সিলরের স্বামী তমোজিৎ রায় ওরফে অরূপ দোকান ছেড়ে দেওয়ার জন্যে কয়েক মাস ধরেই হুমকি দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে স্মৃতিকণাদেবী, তাঁর ছেলে কৌশিক এবং অরূপ দোকানে এসে হেনস্থা করে। সলিলবাবুর দাবি, ‘‘এ বার আর শুধু শাসানি নয়। দোকানে ঢুকেই ওরা মারধর করে। আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে দশ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।’’ পুড়িয়ে মারার হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে দাবি তাঁর।

গোটা ঘটনায় সলিলবাবুদের পাশে দাঁড়িয়েছে ব্যবসায়ী সংগঠনের কর্তা। সংগঠনের সম্পাদক সুনীল সিংহের সাফ জবাব, ‘‘কারও মাতব্বরি বরদাস্ত করা হবে না। পুলিশ তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিক।’’ তেমনটা না হলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

উচ্ছেদের চেষ্টার অভিযোগ মানতে চাননি প্রাক্তন কাউন্সিলর। একই দাবি করেছেন স্মৃতিকণাদেবী এবং তাঁর ছেলে কৌশিক। পাল্টা অভিযোগও তুলেছেন স্মৃতিকণাদেবী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘গোটা ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক সুনীল নিজেই। সুনীল আমাদের জায়গায় ফ্ল্যাট করতে চেয়েছিল। আমরা রাজি হইনি। তাই উনি আমাদের জায়গায় থাকা ভাড়াটেকে আমাদের নামেই উস্কিয়ে দিয়ে অভিযোগ করিয়েছেন।’’ তবে ফ্ল্যাট তৈরির ইচ্ছের কথা মেনেছেন তিনি। একই সঙ্গে স্মৃতিকণাদেবীর দাবি, বহু দিনের পুরনো বাড়ি ভেঙে ফ্ল্যাট করলে সুবিধে হয়। ভাড়াটে দোকানিকে দোকান-ঘর দেওয়ার শর্তে তিনি তখন রাজি হয়েছিলেন বলেও দাবি স্মৃতিকণাদেবীর।

ব্যবসায়ী সমিতি সম্পাদক তাঁর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগকে ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

এ দিকে, ঘটনার এলাকার তৃণমূল নেতার নাম জড়িয়ে যাওযায় অস্বস্তিতে শাসক দলের জেলা নেতৃত্ব। তোলাবাজির অভিযোগে সল্টলেকের দাপুটে কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতার হওয়া, একুশের মঞ্চ থেকে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া বার্তার পরে এমন ঘটনা অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছে। এখনই এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাননি নেতৃত্বের কেউই। দলেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, উচ্ছেদের চেষ্টার অভিযোগে প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা বর্তমান কাউন্সিলরের স্বামীর ভূমিকাটি ঠিক কী, তা খোঁজ নেওয়া হবে। তেমন যোগ মিললে সতর্ক করা হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন