রাজপথে: তৃণমূলের মিছিলে খোলা জিপে প্রচার অনুব্রত মণ্ডলের। মঙ্গলবার সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র
রবিবার বিকেল থেকে মঙ্গলবার বিকেল। ব্যবধান ৪৮ ঘণ্টা। বিজেপি-র ছোড়া তির ফেরাতে ময়দানে নামলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। মঙ্গলবার সিউড়ির রাস্তায় মিছিল করে তুলোধনা করলেন বিজেপি-কে। অনুব্রতর এ দিনের মেজাজ দেখে দলের কর্মীরা বলছেন, পঞ্চায়েত ভোটের আগে বীরভূমে দু’দলের দ্বৈরথ জমিয়ে দেবেন কেষ্টদা।
গত রবিবার, ২৪ তারিখ বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের রাজনগরের তাঁতিপাড়ায় একটি জনসভা করার কথা ছিল। সভার অনুমতি না পেয়ে ওই দিন বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল করেছিল বিজেপি। সিউড়িতে সেই মিছিল শেষে জেলা পরিষদের মাঠ থেকে দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মতো বিজেপি নেতা-নেত্রীরা আক্রমণের মূল নিশানা করছিলেন তৃণমূলের এই দাপুটে জেলা সভাপতিকেই। অনুব্রতর নাম না করে মুকুল বলেছিলেন, ‘‘২০ জন নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে বড়বড় কথা বলে লাভ নেই। পরের সভায় আমি ওর (অনুব্রত) সম্বন্ধে এমন কিছু বলব, তাতে হয় দলই ওকে বের করে দেবে, নতুবা নিজেই দল ছেড়ে দেবে। এটা আমার চ্যালেঞ্জ।’’ তাঁর দাবি ছিল, রাজ্যের কোথাও জেলা পরিষদ জিতুন বা না জিতুন, বীরভূম জেলা পরিষদ দখল করবে বিজেপিই!
মঙ্গলবার সিউড়ির সেই মাঠ থেকেই প্রত্যাঘাত করলেন অনুব্রত। তার আগে মিছিলও করেছেন তিনি। নিজে হু়ড খোলা জিপে ছিলেন মিছিলের পুরোভাগে। মিছিল শেষে ভিড়ে ঠাসা সভা থেকে বিজেপি-র উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বললেন, ‘‘ওরা জেলা পরিষদের ৪২টি আসন দখল করব বলেছে। তা হলে আমি ন্যাড়া মাথা হব! দল ছেড়ে দেব! যা বলবেন, পানিশমেন্ট নেব। হিম্মত যদি থাকে, বাপের ব্যাটা হলে কথা ‘উইথড্র’ করবেন না। পালিয়ে যাবেন না। চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলাম। না হলে আমি অনুব্রত মণ্ডল নই!’’ তিনিও মুকুলের নাম সরাসরি না নিয়ে আক্রমণ করেছেন। কটাক্ষের সুরে বলেছেন, ‘‘গাছের মুকুলকে বললাম। নাম বলতে ঘৃণা হয়। ওরা বেইমান।’’
তবে, মুকুল পরের সভায় তাঁর সম্পর্কে কী বলেন, সে প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে অনুব্রতর জবাব, ‘‘উনি কী বলবেন বলুন। না বললে দুঃখ পাব। আসলে সংবাদ মাধ্যমের প্রচার পেতেই মুকুল আমার নাম নিয়েছেন। তবুও প্রচার দেয়নি মিডিয়া।’’ একই সঙ্গে বলেছেন, মুকুলের কিছু বলাহর থাকলে বলুন। তিনি তাঁকে ভয় করেন না। অনুব্রতর কথায়, ‘‘আপনাকে (মুকুল) দেখে আমি দল করি না। আমি ’৭১ সাল থেকে রাজনীতি করি। আপনার কোনও জায়গা নেই। মানুষই আপনাকে চায় না।’’
জেলা তৃণমূলের একাংশ অবশ্য মনে করছেন, দু’দিনের মধ্যে বিজেপি-র পাল্টা সভা করে তাদের বেশি গুরুত্ব দিয়ে ফেললেন জেলা তৃণমূল সভাপতি। বরং উপেক্ষা করলেই ভাল হতো। পরে সময় বুঝে বিশাল সভা করে আক্রমণ শানানো যেত।