হতাশ: শুক্রবার সিউড়িতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অফিস থেকে বের হচ্ছেন বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকেরা। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
চাকরি দিয়েও তা কেন কেড়ে নেওয়া হল?
শুক্রবারও এই প্রশ্নের উত্তর পেলেন না সদ্য চাকরি হারানো বীরভূমের প্রাথমিক শিক্ষকেরা।
কাউন্সেলিংয়ের পরে নিয়োগপত্র নিয়ে শিক্ষকপদে যোগ দেওয়ার পনেরো দিনের মাথায় ৪৪ জন শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করে দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। নিযোগ বাতিলের কারণ হিসেবে সংসদের পক্ষে দাবি করা হয়েছে, ওই শিক্ষকদের ভুল করে ‘প্যারাটিচার’ বিভাগে নিয়োগ করা হয়েছিল। তার সাপেক্ষে উপযুক্ত নথিপত্র দেখাতে না পারায় তাঁদের নিয়োগ বাতিল হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বাড়িতে বাড়িতে এমন চিঠি পৌঁছনোর পরে ওই দিনই কয়েক জন শিক্ষক ছুটে এসেছিলেন সিউড়িতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অফিসে। সদ্য নিয়োগ বাতিল হওয়া ওই শিক্ষকদের দাবি ছিল, তাঁরা আদৌ ‘প্যারাটিচার’ হিসাবে নিযুক্ত হননি। অনলাইন আবেদনপত্র থেকে টেট পরীক্ষায় সফল হওয়া পর্যন্ত— কোথাও এমন কোনও তথ্য তাঁরা সংসদকে দেননি। সংসদের তরফ থেকে একাধিক বার নথিপত্র যাচাইয়ের পরে তাঁদের হাতে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল। তার পরেও কেন এ ভাবে তাঁদের নিয়োগ বাতিল করা হল, তা বুঝে উঠতে পারছেন না সদ্য বরখাস্ত হওয়া ওই প্রাথমিক শিক্ষকেরা।
একই প্রশ্ন নিয়ে ফের এ দিন সকলে আসতে পারেন চাকরি হারানো শিক্ষকেরা, এই আশঙ্কা থেকে সকাল থেকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে পুলিশি পাহারা ছিল। উপস্থিত ছিলেন না সংসদ সভাপতি রাজা ঘোষ। জনা ২০-২৫ শিক্ষক এ দিন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে আসেন। পুলিশ তাঁদের মধ্যে চার জনকে সংসদের ভিতর ঢুকতে দেয়। তাঁরা জেলা স্কুল পরিদর্শ (প্রাথমিক) অলোক মহাপাত্রের সঙ্গে দেখা করেন। উপস্থিত ছিলেন ডিএসপি (আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক) আনন্দ সরকার। ঘণ্টাখানেক রূদ্ধদ্বার বৈঠক চলে। বৈঠকে কী হল জানতে চেয়ে ফোন করলে ধরেননি ডিআই।
যদিও বাইরে এসে সংবাদমাধ্যমের সামনে চাকরি হারানো নাজ পারভিন, প্রদীপ সাহারা বলেন, ‘‘ওঁদের সঙ্গে কথা বললাম। কিন্তু, ঠিক কী কারণে আমাদের নিয়োগপত্র বাতিল হয়েছে, তার সদুত্তর সংসদ দিতে পারেনি। শুধু পরামর্শ দিয়েছে, কলকাতায় সংসদের দফতরে গিয়ে কথা বলার।’’
তাই আগামী সোমবার কলকাতায় তাঁরা সংসদ অফিসে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেখানে সন্তোষজনক জবাব না পেলে আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন প্রদীপ-নাজের মতো বরখাস্ত শিক্ষকেরা।