পুরুলিয়ায় প্রত্ন সামগ্রীর প্রদর্শনী

‘প্রত্নতত্ত্বের আলোকে পুরুলিয়া’ শীর্ষক একটি প্রদর্শনী শুরু হয়েছে পুরুলিয়া সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান হলে। রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব ও সংগ্রহালয় অধিকার, তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ এবং সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে এই প্রদর্শনী শুরু হয়েছে সোমবার থেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৬ ০০:১৯
Share:

সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ে মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

‘প্রত্নতত্ত্বের আলোকে পুরুলিয়া’ শীর্ষক একটি প্রদর্শনী শুরু হয়েছে পুরুলিয়া সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান হলে। রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব ও সংগ্রহালয় অধিকার, তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ এবং সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে এই প্রদর্শনী শুরু হয়েছে সোমবার থেকে।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানানো হয়েছে, পুরুলিয়া জেলার পুরাতাত্ত্বিক ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে নিয়েই এই চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। উত্তরে দামোদর অববাহিকা, মধ্যবর্তীতে কংসাবতী নদী অববাহিকা এবং দক্ষিণে সুবর্ণরেখা নদী অববাহিকা জুড়ে পুরুলিয়ার অবস্থান। এই বিস্তীর্ণ এলাকায় গড়ে উঠেছিল অসংখ্য মন্দির। সেই প্রত্ন সম্পদগুলিকে নিয়েই এই প্রদর্শনীর আয়োজন।

ইতিহাসে গবেষকেরা জানাচ্ছেন, উত্তরে তেলকূপী অঞ্চলে ১০০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৭০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে গড়ে উঠেছিল ২৬টি শিখর মন্দির। ১৯৫৯ সালে এই মন্দিরগুলি ডিভিসির জলাধারে নিমজ্জিত হয়। পাশ্বর্বর্তী গুরুডি গ্রামের একটি আশ্রমে রাখা আছে জটামুকুটধারী মহেশ্বর, পার্বতী, বিষ্ণু ও ঋষভনাথের মূর্তি।

Advertisement

তেলকূপীর তিন কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত লালপুর গ্রামে রয়েছে বিশাল অম্বিকা মূর্তি। তেলকূপীর আট কিলোমিটার দক্ষিণে চেলিয়ামার কাছে জেলার সর্বাধিক সুন্দর নান্দনিক নাগারা শৈলির ত্রিতল উত্তরমুখী মন্দিরটি রয়েছে। এ ছাড়া চেলিয়ামার আটচালা টেরাকোটার রাধামাধব মন্দির, আচকোদার চারচালা টেরাকোটার মন্দিরও দৃষ্টিনন্দনীয়।

গড়পঞ্চকোটে পাহাড়ে ৫০০ ফুট উপরে প্রস্তর নির্মিত শিখর দেউল, পাদদেশে টেরাকোটার পঞ্চরত্ন মন্দির, প্রস্তর নির্মিত কঙ্কালী মন্দির, কল্যাণেশ্বরী মন্দির, টেরাকোটার ভগ্ন জোড়বাংলা, ভগ্ন পঞ্চরত্ন মন্দিরের ছবি ঠাঁই পেয়েছে ওই প্রদর্শনীতে। এ ছাড়া কংসাবতী অববাহিকায় থাকা দেউলঘাটা মন্দির, শ্রেষ্ঠ জৈন প্রত্নস্থল পাকবিড়রা প্রভৃতির ছবিও রয়েছে। পাকবিড়রাতেই রয়েছএ রয়েছে বৃহৎ কালো পাথরের তৈরি শীতলনাথের মূর্তি-সহ একাধিক নিদর্শনও।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নচিকেতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, জেলার প্রায় সমস্ত প্রত্নস্থলের ছবিই এই প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপকরঞ্জন মণ্ডল বলেন, ‘‘পুরুলিয়া জুড়ে এ রকম নানা প্রত্ন সামগ্রী ছড়িয়ে রয়েছে। পুরুলিয়ার ইতিহাস সবার জানা উচিত। এই প্রত্ন সম্পদগুলিকে রক্ষা করতে হবে।’’ নচিকেতাবাবু বলেন, ‘‘ এই প্রত্নভূমি এখনও অনেক গবেষণা দাবি করে। সেই লক্ষ্যেই এই প্রদর্শনীর আয়োজন।’’ উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী ও জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের আধিকারিক মানসী মণ্ডল প্রমুখ। প্রদর্শনী চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন