ছাই-ইটে ‘না’ সরকারি কাজেই

ওই সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি ভৈরবদাস মল জানাচ্ছেন, গ্রিন বেঞ্চ প্রথম ছাই-ইট ব্যবহারের নির্দেশ দেয়। রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর বছর তিনেক আগে জেলাশাসকদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয়, সরকারি কাজে এই ইটই ব্যবহার করতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৭ ১৩:২৫
Share:

মজুত: ছাই ইট তৈরি হয়ে জমে রয়েছে। বিক্রি নেই। —নিজস্ব চিত্র।

সরকারি নির্দেশ রয়েছে। তবুও সরকারি নির্মাণ কাজে ছাই-ইট বা ‘ফ্লাই অ্যাশ’ ইট ব্যবহার করা হচ্ছে না পুরুলিয়ায়। এমনই অভিযোগ তুলল ফ্লাই অ্যাশ ইট নির্মাতাদের সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্লাই অ্যাশ প্রোডাক্টর্স ম্যানুফ্যাকচারার্স’। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় দরবার করেও হাতে গোনা দু’-একটি ব্লক ছাড়া এই নির্দেশ কেউ মানছেন না। জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায়ও বলেন, ‘‘ছাই-ইট ব্যবহারে সরকারি নির্দেশ রয়েছে। তবে তা মানা হচ্ছে না বলে আমার কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখা হবে।’’

Advertisement

ওই সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি ভৈরবদাস মল জানাচ্ছেন, গ্রিন বেঞ্চ প্রথম ছাই-ইট ব্যবহারের নির্দেশ দেয়। রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর বছর তিনেক আগে জেলাশাসকদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয়, সরকারি কাজে এই ইটই ব্যবহার করতে হবে। ভৈরববাবু বলেন, ‘‘মাটির ইট তৈরির সময় প্রচুর কয়লা পোড়ানোয় বায়ু দূষণ হয়। কিন্তু বিদ্যুৎকেন্দ্রের ছাই দিয়ে ইট তৈরির সময় কোনও দূষণ হয় না। এই ইটে নোনা লাগে না, নির্মাণের সময়েও জল কম ব্যবহার করতে হয়। তা ছাড়া এই ইট দিয়ে তৈরি ঘর ঠান্ডাও থাকে। তবুও সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, সরকারি কাজেই ছাই-ইটের তেমন চাহিদা নেই।’’

পুরুলিয়া জেলায় অথচ ছাই-ইটের প্রভূত সম্ভাবনা রয়েছে। সাঁওতালডিহি ও রঘুনাথপুর তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে দৈনিক প্রচুর ছাই জমা পড়ছে। কিন্তু সেই ছাইয়ের উপযুক্ত ব্যবহার করা যাচ্ছে না। পুরুলিয়ায় ছাই-ইট তৈরির এখন ১০টি কারখানা রয়েছে। সংগঠনের দাবি, ওই কারখানায় সরাসরি চার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। সংগঠনের দাবি, সরকারি নির্দেশ মেনে ছাই-ইটের ব্যবহার বাড়লে আরও কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, পুরুলিয়া পুর এলাকায় বিভিন্ন ওয়ার্ডে ‘সকলের জন্য বাড়ি প্রকল্পে’ এই ইট ব্যবহারের নির্দেশ থাকলেও তা ব্যবহার করা হচ্ছে না। পুরুলিয়া ২ ব্লক ছাড়া অন্য কোনও ব্লকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরি-সহ বিভিন্ন নির্মাণে এই ইটের ব্যবহার করা হচ্ছে না।

Advertisement

গত এপ্রিলে জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করতে আসা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরেও সমস্যাটি এনেছিলেন ওই সংগঠনের কর্মকর্তারা। তাঁদের আক্ষেপ, আশ্বাস মিললেও পরিস্থিতি পাল্টায়নি। তাঁদের আরও অভিযোগ, জিএসটি-র জেরে তাঁদের শিল্প আরও বিপন্ন হতে চলেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন