খাঁচাবন্দি: শনিবার সিউড়ির রেঞ্জ অফিসে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়
অবশেষে সাফল্য মিলল।
শনিবার বিকালে ধরা পড়ল সিউড়ির গ্রামে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী হনুমানটি। বন দফতরের শত চেষ্টা সত্ত্বেও শুক্রবার অধরা থেকে গিয়েছিল ওই হনুমান। এ দিন ঘুমপাড়ানি গুলি ছুঁড়ে বেঁহুশ করে হনুমানটিকে খাঁচাবন্দি করতে সফল হন বনকর্মীরা। হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন এলাকার মানুষ।
দিন পনেরো-কুড়ি ধরে সিউড়ির কোমা ও পাশের জানুরি গ্রামের বাসিন্দাদের তটস্থ করে রেখেছিল ওই পুরুষ হনুমান। গ্রামবাসীদের দাবি, হনুমানটি খেপে গিয়েছে। তার পর থেকেই ওই হনুমানের কামড়-আঁচড়ে জখম হয়েছেন কমবেশি ২০ জন গ্রামবাসী। হনুমানের উৎপাত থেকে রেহাই দিতে খাঁচা পেতে দিন কয়েক চেষ্টা চালিয়েছিল বন দফতর। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় এবং উৎপাত আরও বেড়ে যাওয়ায় ঘুমপাড়ানি গুলি ছুঁড়ে হনুমানটিকে ধরার ছক করেন বন দফতরের কর্মীরা।
শুক্রবার বিকেল থেকেই সেই চেষ্টা শুরু হয়েছিল। বহরমপুর থেকে নিয়ে আসা হয় এ কাজে বিশেষ ভাবে পারদর্শী দুই বনকর্মীকে। কিন্তু শুক্রবার ঘুমের গুলি ছোঁড়ার কোনও সুযোগ পাননি তাঁরা। উল্টে এক বনকর্মীকে কামড়ে দেয় সে। হাল না ছেড়ে শনিবার সকাল থেকে কার্যত আদাজল খেয়ে পবন নন্দনকে পাকড়াও করার অভিযানে নামেন বনকর্মীরা। তাকে তাক করে একটি ঘুমপাড়ানি গুলিও ছোঁড়া হয়। আপাত দৃষ্টিতে মনে হয়েছিল হনুমানের শরীরে ডার্ট (ঘুমের ওষুধ যুক্ত সিরিঞ্জ) লেগেছে। কিন্তু খানিক পরেই ভুল ভাঙে। আরও দাপিয়ে বেড়াতে থাকে সে। কামড়ে রক্তাক্ত করে দু’জন গ্রামবাসীকে। বন দফতরের সিউড়ি রেঞ্জ অফিসার প্রশান্ত সরকার জানান, সকালে ঘুমের ওষুধ ভর্তি ডার্ট ওর শরীরে লাগেনি। তারপর থেকে দিনভর চেষ্টা চলালেও হনুমানটি লুকিয়ে বেড়াচ্ছিল। বিকেল ৩টের পর থেকে দেখাই মিলছিল না। রেঞ্জারের কথায়, ‘‘গ্রামের বেশ কিছু ফাঁকা বাড়ি মধ্যে সেঁধিয়ে যাচ্ছিল অত্যাচারী হনুমানটি।’’
কিন্তু বিকাল সাড়ে ৪টের সময় সুযোগ এসে যায়। হাতের লাগালে পেয়ে এ বার আর নিশানা ভ্রষ্ট করেননি বনকর্মীরা। গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন, ‘‘পিছনে ঘুমের ওষুধ ভর্তি ডার্ট লাগার পরে মিনিট কয়েক দৌড়ে অবশেষে নেতিয়ে পড়ে সেই পবন নন্দন।’’