বাহুবলীর ঠিকানা এখন পুরুলিয়ার গোশালা। ছবি: সঙ্গীত নাগ
রণে ক্ষান্ত দিল বাহুবলী। আপাতত পেল্লাই সেই ষাঁড়ের ঠিকানা হয়েছে পুরুলিয়ার গোশালায়।
রেল-শহর আনাড়ায় ঘুরে বেড়াত ওই ষাঁড়টি। সম্প্রতি মারকুটে হয়ে ওঠায় আতঙ্কিত ছিলেন বিভিন্ন মহল্লার বাসিন্দারা। তাঁরা গিয়েছিলেন মহকুমাশাসকের (রঘুনাথপুর) কাছে। তাঁর নির্দেশ মতো, মঙ্গলবার দুপুরে ষাঁড় ধরার অভিযানে নেমেছিল ব্লক প্রশাসন। সঙ্গে ছিল পুলিশ। ছিল বন দফতর।
জনা তিরিশের আধ ঘণ্টার চেষ্টায় বাগে আসে বাহুবলী। বিডিও (পাড়া) অনিরুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা ঠিক করেছিলাম বনদফতর আর পুলিশকে নিয়ে ষাঁড়টিকে ধরব। তাই কয়েক দিন দেরি হল।’’
এ দিন দুপুরে আনাড়ায় পৌঁছন পাড়া রেঞ্জের বনকর্মীরা। পুলিশ ও ব্লক অফিসের কয়েক জন কর্মীকে নিয়ে তাঁরা বেরোন বাহুবলীর খোঁজে। এ দিকে, ষাঁড়ের দেখা নেই। শেষে খবর আসে, সে ঘুরে বেড়াচ্ছে বাসস্ট্যান্ডের কাছে। মোটা দড়ি নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে। বাহুবলীর শিঙের গুঁতোয় গত বছর খানেকে প্রায় দশ জন জখম হয়েছেন। কয়েক জনকে যেতে হয়েছে হাসপাতালে। সে কথা মাথায় রেখে গোড়া থেকেই সাবধানে ছিলেন সবাই। আস্তে আস্তে তার কাছে পাঁচ ছ’জন ঘেঁষেন। কৌশলে দাড়ির ফাঁস লাগিয়ে দেওয়া হয় গায়ে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, প্রথমে বাহুবলী বুঝতেও পারেনি তাকে ধরতে আসা হচ্ছে। দড়ির ফাঁস পরানোর পরে টনক নড়ে। খেপে যায় তেড়ে। বাসস্ট্যান্ড থেকে আনাড়া কলোনির মধ্যে রেলের স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত দৌড় করায় বনকর্মীদের। শেষে আর যুঝতে না পেরে থামে।
বাহুবলী ধরা পড়ার খবরে স্বস্তি ফিরেছে রেল-শহরে। এ দিন তাকে পাকড়াও করার ব্যাপারটা দেখতে দর্শকও হয়েছিল বিস্তর। অনেকই মোবাইলে ছবি তুলেছেন।
প্রশাসনের কাছে বাহুবলীকে ধরার আবেদন নিয়ে গিয়েছিলেন রেলকর্মী সংগঠনের নেতা সুব্রত দে। তাঁর আশঙ্কা ছিল, জানুয়ারির শেষে ‘রাজীব গাঁধী উৎসব’-এ ষাঁড় ঢুকে না সব পণ্ড করে বসে। সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘স্থানীয় লোকজনই ষাঁড়টির নামকরণ করেছে বাহুবলী। ওর উপদ্রবে সবাই আতঙ্কিত হয়ে ছিলেন। এ বার শান্তি মিলল।’’