ফাইল চিত্র।
একটি পর্যটনস্থল তখনই পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠে, যদি সেখানে বিনোদনের ভরপুর উপাদান মজুত থাকে। সঙ্গে সেখানে যাতায়াতের ও থাকার সুব্যবস্থা থাকে। সেই পথেই হাঁটছে বক্রেশ্বর উন্নয়ন পর্ষদ। — দাবি, পর্ষদের কর্তাদের।
বৃহস্পতিবার পর্ষদ কমিটির বৈঠকের আগে সেটাই জানালেন পর্ষদের কর্তারা। বক্রেশ্বর মূলত ধর্মীয় তীর্থক্ষেত্র হলেও মূল আকর্ষণ ছিল উষ্ণ প্রস্রবণ। পরিকল্পিতভাবে পরিকাঠামো উন্নয়নে যে ভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে তাতে আগামী দিনে পর্যটকদের কাছে জেলার অন্যতম সেরা পর্যটনকেন্দ্র হতে চলেছে বক্রেশ্বর। ঠিক কী কী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে?
বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমকে ডেকে তা সবিস্তারে জানালেন বক্রেশ্বর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা সিউড়ির বিধায়ক অশোক চট্টোপাধ্যায়, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলাপরিষদ) নিবিল ঈশ্বরারীরা।
দুবরাজপুর ব্লক ও পুরসভা এলাকা মিলিয়ে মোট ৪৫টি মৌজা নিয়ে গঠিত হয়েছে ‘বক্রেশ্বর উন্নয়ন পর্ষদ’। পর্ষদ জানিয়েছে, রাস্তাঘাট, গোটা বক্রেশ্বর ধামজুড়ে সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা, বক্রেশ্বর মহাশ্মশানের যাওয়ার পথ, বাসস্ট্যাণ্ড উন্নত করা, উষ্ণপ্রস্রবণ কুণ্ড থেকে নিকাশি নালা সংস্কারের মতো প্রাথমিক কাজগুলি প্রায় শেষের পথে। বর্তমানে উন্নয়ন পর্ষদের নিজস্ব ভবন না থাকায় সেটি চলে বক্রেশ্বর যুব আবাসে। ঠিক পাশেই পর্ষদের প্রস্তাবিত নতুন বিল্ডিং তৈরিতে ১ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকাও এসে গিয়েছে। এডিএম বলেন, ‘‘এ পর্যন্ত মোট প্রায় ৪ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা এসেছে নানা খাতে। কাজ চলছে। এরপরই দ্বিতীয় ধাপে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’’ চেয়ারম্যান অশোক চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘বক্রেশ্বর ধামের কাছে থাকা তিনটি পৃথক পুকুরকে একত্রিত করা এবং সৌন্দর্যায়ন ঘটানো, বোটিং এর ব্যবস্থা হবে দ্বিতীয় ধাপে। এ ছাড়া একই ভাবে সৌন্দর্যায়ন ঘটনো হবে উষ্ণপ্রস্রবণ ও আশপাশের এলাকাকে। বক্রেশ্বরে পানীয় জলের সঙ্কট সবচেয়ে বড় সমস্যা।’’ পর্ষদ জানাচ্ছে, পর্ষদ এলাকায় ১০০টি মার্ক টু নলকূপ বাসানো, বক্রেশ্বর নদ থেকে গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানীয় জলের ব্যবস্থা এবং শেষ ধাপে সারফেস ওয়াটার ব্যবহার করতে বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জলাধারকে কাজে লাগানো হবে।
পর্ষদের কর্তাদের কথায়, এইগুলি ছাড়াও পর্ষদ এলাকায় থাকা দুবরাজপুরের পাহাড়েশ্বর বা মামা-ভাগ্নে পাবার সংলগ্ন শিব মন্দির এবং বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জলাধার নীল নির্জনকে পর্যটক টানার অন্যতম হাতিয়ার হিসাবে কাজে লাগানো হবে। শুধু তাই নয় যাতায়াত আরও মসৃন করতে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে আলমবাবার মাজারের পাস দিয়ে একটি রাস্তাকে দুবরাজপুর শহরে বাঁচিয়ে পণ্ডিতপুরের কাছে এনে তোলা হবে বক্রেশ্বর রাস্তায়। ৪ কিমি এই প্রস্তাবিত রাস্তার জন্য ৪ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। হবে একটা ইকো পার্কও। অতিরিক্ত জেলা শাসক ও চেয়ারম্যানরা বলছেন, ‘‘শুধু বড়দের নয় বিনোদেনের উপাদান থাকবে শিশুদের জন্যও। দু’ থেকে তিন বছর সময় লাগবে।’’