ব্যাঙ্ক লুটের চেষ্টা মানবাজারে

সিভিক ভলান্টিয়রদের তৎপরতায় ভেস্তে গেল ব্যাঙ্ক ডাকাতির ছক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মানবাজার শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৯ ০০:৪২
Share:

থানার অদূরে এখানেই হানা দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। —নিজস্ব চিত্র।

সিভিক ভলান্টিয়রদের তৎপরতায় ভেস্তে গেল ব্যাঙ্ক ডাকাতির ছক।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাত আড়াইটে নাগাদ মানবাজার থানার অদূরে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় হানা দেয় একদল দুষ্কৃতী। ওই সময় ব্যাঙ্কের বারান্দায় ছিলেন কয়েকজন সিভিক ভলান্টিয়র। পুলিশ জানিয়েছে, ব্যাঙ্কের মধ্যে থেকে আওয়াজ আসায় তাঁদের সন্দেহ হয়। ব্যাঙ্কের ভেতরে ধুপধাপ আওয়াজ হচ্ছিল। তারপরেই ভারি কিছু পড়ার শব্দ কানে আসে সিভিক ভলান্টিয়রদের। ব্যাঙ্কের পাশের গলিতে টর্চের আলো ফেললে দেখা যায় দৌড়ে পালাচ্ছে কয়েকজন যুবক। তখনই ব্যাঙ্কে দুষ্কৃতী হানার বিষয়টি স্পষ্ট হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনার পরেই যোগাযোগ করা হয় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। ব্যাঙ্ক আধিকারিকেরা এলে তাঁদের সঙ্গে নিয়েই ব্যাঙ্কে ঢোকে পুলিশ। দেখা যায় কাগজপত্র তছনছ হয়ে পড়ে রয়েছে মেছেতে। ভল্ট উল্টে পড়ে রয়েছে। মঙ্গলবার বেলার দিকে জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তারা তদন্তে আসেন। ছিলেন ব্যাঙ্কের কর্তারাও।

Advertisement

প্রাথমিক তদন্তের পর জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীরা ব্যাঙ্কের পিছন দিকের কাঠের দরজার তালা ভেঙ্গে ভেতরে ঢোকে। প্রথমেই তারা ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা এবং সাইরেনের তার কেটে দেয়। তারপর ব্যাঙ্ককর্মীদের টেবিলে রাখা কাগজপত্র তছনছ করে। যে ঘরে ভল্ট রাখা থাকে, তার দরজার তালাও ভাঙে দুষ্কৃতীরা। ভল্ট ভাঙার চেষ্টা করে। কিন্তু সেই কাজে তারা সফল হয়নি।

এদিন বেলায় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন ) ধৃতিমান সরকার, মানবাজারের এসডিপিও আফজল আবরার-সহ পুলিশের পদস্থ কর্তারা তদন্ত করতে ব্যাঙ্কে আসেন। ধৃতিমানবাবু বলেন, কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়াররা সজাগ না থাকলে বড় কাণ্ড ঘটতে পারত।’’ ব্যাঙ্কের নিরাপত্তা ব্যহস্থায় ত্রুটি রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই পুলিশকর্তা।

অন্য এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘আগেও একবার ওই ব্যাঙ্কে ডাকাতির চেষ্টা হয়েছিল। নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও মজবুত করা উচিত ছিল ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের। কিন্তু তা হয়নি।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বন্ধ ছিল। এক ব্যাঙ্ক কর্মী পুলিশকে জানিয়েছেন, শাখার ম্যানেজারের ঘরে থাকা কম্পিউটরের সঙ্গে ক্লোজট সার্কিট ক্যামেরার সংযোগ রয়েছে। কম্পিউটর বন্ধ করার সময় ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার সংযোগ ছিন্ন হয়ে গিয়ে থাকতে পারে।

ব্যাঙ্কের চিফ রিজিওনাল ম্যানেজার বিপিনকুমার সাহু বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কে ২৪ ঘণ্টা ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার নজরদারি থাকার কথা। ক্যামেরা বন্ধ ছিল কি না, তা খোঁজ নেব। নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’ এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘ভিডিও ফুটেজ তদন্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু তা মেলেনি। ফলে দুষ্কৃতীদের ধরতে অন্য পন্থা নিতে হচ্ছে।’’

মানবাজার থানার বাজার এলাকায় মোট পাঁচটি ব্যাঙ্কের শাখা কার্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে থানার কাছেই রয়েছে দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা। ব্যাঙ্ক সুত্রে জানা গিয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে আরও একবার এই ব্যাঙ্কে ডাকাতির চেষ্টা হয়েছিল। সেই সময় টানা তিনদিন ব্যাঙ্ক বন্ধ ছিল। দুষ্কৃতীরা সেবারেও সফল হতে পারেনি। সেবার ব্যাঙ্কের পিছনের পাঁচিলের পাশ থেকে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার বাজেয়াপ্ত করেছিল। পুলিশের অনুমান ছিল, ব্যাঙ্কের ভল্ট কাটার জন্যে ওই সিলিন্ডার আনা হয়েছিল। তবে তা ব্যবহারের সুযোগ পায়নি দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনা এলাকার নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন