বলরামপুরের সংঘর্ষে ধৃত বিজেপির ১৫

বলরামপুরে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষের ঘটনায় এক প্রার্থী-সহ ১৫ জন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। যদিও ওই সংঘর্ষে অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীদের কেন গ্রেফতার করা হয়নি, তা নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে পাল্টা নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৮ ০০:০০
Share:

পুরুলিয়া আদালতের পথে ধৃতেরা। বৃহস্পতিবার। ছবি: সুজিত মাহাতো

বলরামপুরে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষের ঘটনায় এক প্রার্থী-সহ ১৫ জন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। যদিও ওই সংঘর্ষে অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীদের কেন গ্রেফতার করা হয়নি, তা নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে পাল্টা নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। জেলা পুলিশের এক কর্তা অবশ্য নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর দাবি, অভিযোগ পেলেই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

মনোনয়নের স্ক্রুটিনি চলার সময় বুধবার দুপুরে বলরামপুর ব্লক অফিসের কাছে দুই দলের কর্মীদের মারপিটে ধুন্ধুমার কাণ্ড বেধে যায়। অভিযোগ, ব্লক অফিসের দরজার পাশ থেকে বিজেপি-র কর্মীদের পুলিশ সরিয়ে দিয়ে তৃণমূল কর্মীদের জমায়েত করার জায়গা করে দিচ্ছিল। তা নিয়ে দু’দলে ইট-পাথর ছোড়াছুড়ি শুরু হয়। গণ্ডগোলের খবর পেয়েই কিছু দূরে থাকা বিজেপি-র আরও লোকজন লাঠি, রড নিয়ে এসে ‘জয় শ্রীরাম’ জিগির তুলে তৃণমূল কর্মীদের উপরে চড়াও হয়ে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ।

হামলায় দু’পক্ষেরই কর্মী-সমর্থকেরা আহত হন। তৃণমূলের দাবি, তাদের ন’জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সুধীরচন্দ্র মাহাতো নামে তেঁতলো অঞ্চল সভাপতি বর্তমানে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বিজেপি-র দাবি, তাঁদেরও তিন কর্মী আহত হয়েছেন। সেই সময়ে পর্যাপ্ত পুলিশ ছিল না। পরে বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

Advertisement

ওই ঘটনায় তৃণমূলের তরফে মোট ৪৪ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তার মধ্যে ১৫ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের জেল হাজতে পাঠায় আদালত।

জেলা বিজেপি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, পুলিশ ধৃতদের বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে জমায়েত, হত্যার চেষ্টা, অগ্নি সংযোগ-সহ আগ্নেয়াস্ত্র আইনেও মামলা রুজু করেছে।

বিজেপি-র বলরামপুরের একটি মণ্ডলের সভাপতি অশ্বিনী সিং সর্দারের দাবি, ‘‘পুলিশ বুধবার রাতে বাড়ি-বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে আমাদের অনেক নিরীহ কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। তাঁরা বুধবার ঘটনাস্থলে হাজিরই ছিলেন না। এমনকী বাড়ির দরজা ভেঙেও পুলিশ কয়েকজনকে তুলে এনেছে। ধৃতদের মধ্যে এক জন দলীয় প্রার্থীও রয়েছেন।’’

মনোনয়ন চলার মধ্যে হুড়াতেও তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সেখানেও ১৫ জন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। গত শুক্রবার কাশীপুর ব্লক অফিসে যাওয়ার পথে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের মারে গুরুতর জখম হন প্রাক্তন সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া-সহ বর্ষীয়ান তিন সিপিএম নেতা ও আরও কয়েকজন কর্মী। সেখানে দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে হামলার নালিশ থানায় জানিয়েছে। যদিও সেই ঘটনায় পুলিশ কাউকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি।

এই ঘটনাগুলি তুলে ধরে বিরোধীদের প্রশ্ন, শাসকদল অভিযোগ করলেই পুলিশ অতিসক্রিয়। অথচ বিরোধীদের ক্ষেত্রে ততটাই নিষ্ক্রিয় কেন?

বিজেপির দাবি, তারা হুড়ায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ ফেরত পাঠিয়ে দেয়।

বিজেপি-র জেলা সম্পাদক গোপাল কাটারুকার অভিযোগ, ‘‘বলরামপুরে তৃণমূলের হামলায় আমাদের যে লোকজন আহত হয়েছেন, তা জানিয়ে বলরামপুর থানায় বৃহস্পতিবার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু, পুলিশ তৃণমূলের কাউকে ধরেনি। আমাদের কেস নম্বরও জানায়নি।’’

যদিও জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, হুড়া ও বলরামপুরের ঘটনায় বিজেপি তাদের কাছে কোনও অভিযোগই জানায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন