যত আসন, তার থেকে ঢের বেশি প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল, বিজেপি। কংগ্রেসও প্রার্থী দেওয়ার দৌড়ে পিছিয়ে নেই। তার পরেও পুরুলিয়া জেলার পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির কিছু আসনে বিপক্ষের কেউ না থাকায় লড়াই হচ্ছে না। অবশ্য সংখ্যাটা হাতে গোনা। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানাচ্ছেন, এখনও পর্যন্ত হিসাব যা, তাতে কোনও প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতেই নির্বাচন হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে সর্বশেষ পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা যাচ্ছে, এই জেলার ১৭০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৯৪৪টি আসনের মধ্যে ১৯টিতেই ভোট হচ্ছে না। ২০টি পঞ্চায়েত সমিতির ৪৪৬ আসনের মধ্যে ৪টি আসনেও ভোট হবে না। কারণ সেখানে শুধু এক জন মাত্রই প্রার্থী রয়েছেন। বিভিন্ন দল সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে, ওই ২৩টি আসনের অধিকাংশ ক্ষেত্রে শুধু শাসকদলেরই প্রার্থী রয়েছেন। ফলে নির্বাচনের আগেই পুরুলিয়ায় এক পা এগিয়ে থাকল তৃণমূল।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা আসনগুলি হল: বলরামপুর পঞ্চায়েতের ১১ নম্বর, বরাবাজার পঞ্চায়েতের ১৪ নম্বর, হুড়ার ২ নম্বর, কাশীপুর ব্লকের বড়রা পঞ্চায়েতের ৬ নম্বর, বেকো পঞ্চায়েতের ১১ নম্বর, কালীদহ পঞ্চায়েতের ৮ নম্বর, রাঙামাটি-রঞ্জনডি পঞ্চায়েতের ৫ ও ৯ নম্বর, হদলদা-উপড়রা পঞ্চায়েতের ২ ও ৪ নম্বর, কাশীপুর পঞ্চায়েতের ১০ নম্বর, পাড়া ব্লকের আনাড়া পঞ্চায়েতের ১১ নম্বর, ঝাপড়া-জবড়রা ১ পঞ্চায়েতের ৭ ও ৮ নম্বর, পুরুলিয়া ১ ব্লকের গাড়াফুসড় পঞ্চায়েতের ৫ নম্বর, পুরুলিয়া ২ ব্লকের গোলামারা পঞ্চায়েতের ১২ নম্বর, রঘুনাথপুর ১ ব্লকের আড়রা পঞ্চায়েতের ১১ নম্বর এবং রঘুনাথপুর ২ ব্লকের জোরাডি পঞ্চায়েতের ৫ নম্বর আসন।
অন্যদিকে, জেলায় পঞ্চায়েত সমিতির আসন মোট ৪৪৬টি। তার মধ্যে শুধু কাশীপুর পঞ্চায়েত সমিতির চারটি আসনে এখনও পর্যন্ত একজন করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন। আসনগুলি হল রাঙামাটি-রঞ্জনডি ২৩ নম্বর, হদলদা-উপড়রা ২১ নম্বর, কাশীপুর ২৪ ও ২৫ নম্বর। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই আসনগুলির বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তৃণমূলের প্রার্থীরাই রয়েছেন। তবে কাশীপুর পঞ্চায়েত সমিতির মোট আসন ৩৩টি। ফলে এখনই কিছু নির্ধারিত হচ্ছে না।
জেলা পরিষদে অবশ্য একটি আসনও নেই যেখানে শুধু একজন প্রার্থী রয়েছেন।
এই পরিসংখ্যান সামনে রেখে বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দিতে না পারার দাবি উড়িয়ে দিচ্ছে তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘পরিসংখ্যানই তো বলে দিচ্ছে বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। একটিও গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি নেই যেখানে ভোট হবে না। আর যে ক’টিতে বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি সেটা বিরোধীদের সাংগঠনিক ব্যর্থতা।’’
তৃণমূলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা বাধা তো দিচ্ছিই না, উল্টে বিরোধীদের বলছি মনোনয়ন জমা দিতে। না হলে তো ভোটই হবে না!’’