Panchayat Poll 2018

মোটরবাইক মিছিল নিয়ে বিতর্কে প্রার্থী

রবিবার সকালে পুরুলিয়া ২ ব্লকের ২১ নম্বর জেলা পরিষদ আসনের প্রার্থী হলধর মাহাতো কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে রাঘবপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা পরিক্রমা করেন। তাঁর সঙ্গে দুশ‌োর বেশি মোটরবাইক নিয়ে কর্মীরা ছিলেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৮ ০১:০৭
Share:

দলেদলে: মিছিলের আগে পেট্রল পাম্পে। রবিবার পুরুলিয়া ২ ব্লকে। ছবি: সুজিত মাহাতো

দলে দলে চলেছে মোটরবাইক। কোনওটার হ্যান্ডেলে বাঁধা তৃণমূলের পতাকা। কোনও আরোহীর হাতে ধরা পতাকা। বিজেপি কর্মীদের দেখা গেলেই সেই বাইক মিছিল থেকে জিগির উঠছে— ‘জয় শ্রীরাম’। কিন্তু দিনের শেষে তৃণমূলের জেলা পরিষদের প্রার্থী হরধর মাহাতোর দলীয় কর্মীদের এই বাইক মিছিল নিয়ে বিতর্ক তৈরি হল পুরুলিয়ায়।

Advertisement

রবিবার সকালে পুরুলিয়া ২ ব্লকের ২১ নম্বর জেলা পরিষদ আসনের প্রার্থী হলধর মাহাতো কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে রাঘবপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা পরিক্রমা করেন। তাঁর সঙ্গে দুশ‌োর বেশি মোটরবাইক নিয়ে কর্মীরা ছিলেন বলে অভিযোগ। রাঘবপুর, বোঙাবাড়ি, গেঙ্গাড়া, ধুরহি, হাতোয়াড়া-সহ বিভিন্ন গ্রামে তাঁরা ঘোরেন। হলধরবাবু ছাড়াও ওই মিছিলে এলাকার তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির কয়েকজন প্রার্থীও ছিলেন বলে দাবি বিরোধীদের। হলধরবাবু বলেন, ‘‘বিজেপি লোকেরা জয় শ্রীরাম বলছিল। আমরা পাল্টা গলা চড়িয়ে জয় শ্রীরাম বলতেই, ওরা পালিয়ে যায়।

পুরুলিয়া জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক অরণ্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনও প্রার্থীই মোটরবাইক নিয়ে মিছিল করতে পারবেন না বলে নির্দেশ রয়েছে। তিনটি স্তরের প্রার্থীরাই এই বিধির আওতায় পড়বেন। কেউ রিটার্নিং অফিসার তথা বিডিও-র কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন।’’

Advertisement

পুরুলিয়া কেন্দ্রের বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের লোকজন নিয়ম-নীতি মানেন না। বিধি ভেঙে মোটরবাইক মিছিলের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানাব। যদিও অভিযোগ জানিয়ে কোনও লাভ হবে কি না সন্দেহ রয়েছে।’’

আর হলধরবাবুর বক্তব্য, ‘‘কর্মীরা যদি একে একে মোটরবাইক নিয়ে মিছিলে আসেন, আমি কি তাঁদের না করতে পারি! গোটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা ঘুরতে অন্তত ৫০-৬০ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করতে হয়েছে। মোটরবাইক ছাড়া কীসে ঘুরব? চার চাকা তো সব পাড়ায় বা টোলায় ঢুকবেও না।’’

হেলমেট ছাড়া মোটরবাইকে সওয়ার হয়ে মিছিল করা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। হলধরবাবুর জবাব, ‘‘হেলমেটে মুখ ঢেকে থাকলে গ্রামের মানুষ তো আমাদের চিনতেই পারবেন না। হেলমেট পরে লোকের সাথে কথাই বা কী ভাবে বলবে? ও সব যাঁরা অভিযোগ তুলছেন, তাঁদের কাজই হচ্ছে খুঁত ধরা।’’

ভোট পর্বের শুরু থেকেই বিতর্ক অবশ্য হরধরের সঙ্গী। গত নির্বাচনে এই ব্লকের ২০ নম্বর জেলা পরিষদ আসন থেকে জয়ী হয়েছিলেন তিনি। এ বারে তাঁর আসনটি তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হওয়ায় তিনি পাশের আসনে লড়তে চান বলে জেলা নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছিলেন। অন্যদিকে এই আসনটিতে লড়তে চেয়েছিলেন দলের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নবেন্দু মাহালি। দল প্রার্থী ঘোষণার আগেই গত নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে এই আসন থেকে নির্বাচিত পুষ্প বাউরি মনোনয়ন পত্র জমা করেন। তাঁর সঙ্গে এই এলাকার একাধিক নেতাও মনোনয়ন জমা দেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন পুরুলিয়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি আনন্দ রাজোয়াড়, আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি প্রফুল্ল মাহাতো, পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সমীরণ মুখোপাধ্যায়।

দলের তরফে প্রার্থী ঘোষণার আগেই হলধরবাবুও নিজের মনোনয়ন জমা করেছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, রাজ্য নেতৃত্ব এই আসনে তাঁকে প্রার্থী করেছে। আর এলাকার তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য ছিল বহিরাগত কাউকে তাঁরা এই আসনে মানবেন না। রাজ্য নেতৃত্ব ও জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতোর হস্তক্ষেপে পরে হলধরবাবু ছাড়া বাকি গোঁজ প্রার্থীরা এই আসনের লড়াই থেকে সরে দাঁড়ান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন