উর্মিলা মুর্মু। নিজস্ব চিত্র
মনোনয়ন দিতে গিয়ে খুন হয়ে যাওয়া রানিবাঁধের বিজেপি কর্মী অজিত মুর্মুর স্ত্রী ভোট দিলেন না। সোমবার দুপুরে পুনশ্যা গ্রামের বাড়িতে ঊর্মিলা বলেন, ‘‘ভোট দেব না। কেন দেব?’’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘বুথে কাউকে ঢুকতেই দেওয়া হচ্ছে না। লোকজনের ভোটার কার্ড নিয়ে তৃণমূলের ছেলেরা নিজেরাই ভোট দিয়ে দিচ্ছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘১৩ বছরের দাম্পত্য জীবনে বহু বার আমরা এক সঙ্গে গিয়ে ভোট দিয়েছি। এ বার স্বামী ভোটে দাঁড়াতে গিয়ে খুন হয়ে গেল।’’ কথা শেষ হওয়ার আগেই গলা বুজে আসে কান্নায়। স্বামীর মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত চেয়ে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হয়েছিলেন ঊর্মিলা। তারপর কি তদন্ত গতি পেয়েছে? তিনি বলেন, ‘‘কিছুই জানতে পারছি না। কী যে তদন্ত হচ্ছে।’’ তিনি জানান, বাবার মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি তাঁর ১১ বছরের ছেলে অমৃতরাম। বাড়িতে তার থাকতে ভাল লাগছে না বলে কিছু দিন আগে তাকে এক আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি।
ঊর্মিলার বাড়ি থেকে কিছুটা দূরেই ভোটগ্রহণ কেন্দ্র। সেখানে যাওয়ার পথে দেখা গেল, তৃণমূলের ভারী জমায়েত। বুথ চত্বরে গিয়ে দেখা গেল, ভোটার প্রায় নেই বললেই চলে। হুড়মুড় করে বুথের ভিতর থেকে বেরিয়ে এলেনএক দল যুবক। ভোট কেমন হচ্ছে জানতে চাওয়ায়, তাঁদের জবাব— ‘‘দারুণ ভোট হচ্ছে। কোনও সমস্যা নেই।’’
ভোটকর্মীদের কাছে খবর নিয়ে জানা গেল, তৃণমূল ছাড়া অন্য দলের এজেন্ট নেই বুথে। পুনাশ্যার বুথে গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনে বিরোধী না থাকায় ভোট হচ্ছে না। তবে পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদে বিরোধীদলগুলির প্রার্থী থাকায় ভোট হচ্ছে। তাহলে বিরোধীদের এজেন্ট নেই কেন?
জবাব দিতে গিয়ে রানিবাঁধ অঞ্চল যুব তৃণমূল সভাপতি সুকুমার মাহাতো দাবি করেন, ‘‘বিরোধীরা এজেন্ট দিতে না পারলে, আমাদের কিছু করার নেই।’’ যদিও বিজেপির বাঁকুড়া জেলা সাংগঠনিক সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্রের দাবি, ‘‘অজিত খুনের পরেও দুষ্কৃতীরা অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারপরে কোন ভরসায় সেখানে এজেন্ট যাবে?’’ যদিও পুলিশ তদন্ত চলছে বলেই দাবি করেছে।