পরিকল্পনা শান্তিনিকেতনে

পথের জট কমাতে ‘রিং-রোড’

বিশ্বভারতী ক্যাম্পাস তথা শান্তিনিকেতন এলাকার যানজট এবং যান চলাচল নিয়ন্ত্রন করতে ‘রিং-রোড’ করতে চলছে বীরভূম জেলা প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৬ ০১:২৩
Share:

বিশ্বভারতী ক্যাম্পাস তথা শান্তিনিকেতন এলাকার যানজট এবং যান চলাচল নিয়ন্ত্রন করতে ‘রিং-রোড’ করতে চলছে বীরভূম জেলা প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলেন, “বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা, এলাকার আশ্রমিক পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখতে বিকল্প রাস্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে একটি রিং-রোড করার পরিকল্পনা করেছে জেলা প্রশাসন।” শান্তিনিকেতন আশ্রমের রাস্তায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা ও বিকল্প রাস্তা নিয়ে আলোচনা বা প্রস্তাব অবশ্য নতুন নয়।

Advertisement

সাহেবগঞ্জ লুপলাইন বরাবর সমান্তরাল ভাবে প্রান্তিক স্টেশন পর্যন্ত একটি রাস্তার পরিকল্পনা ছিল লোকসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের। তা নিয়ে শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদ উদ্যোগও নেয়। কিন্তু নানা প্রশাসনিক টালবাহানায় সেই প্রকল্প আজও বাস্তবায়িত হয়নি! ফলে সমান্তরাল ওই রাস্তার কাজ কার্যত বিশ বাঁও জলে। বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, কয়েক বছর আগে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটে নাম তোলার নানা উদ্যোগ নেয় বিশ্বভারতী। কিন্তু ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তকমা পায়নি। যার একটি কারণ, আশ্রমের ব্যস্ত রাস্তা।

দিন দিন শান্তিনিকেতনে বহিরাগতদের ভিড় বাড়তে থাকায় যানজট এখন বিশ্বভারতী এলাকায় রোজকার সমস্যা। এতে যে কেবল বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে তাই নয়, আশ্রম এলাকার শিল্প সামগ্রী ও শ্যামলীর মতো নির্মাণগুলির ক্ষতি হচ্ছে। শ্যামবাটির রাস্তায় ভারী গাড়ি যাতায়তের ফলে মাটির তৈরি শ্যামলী বাড়ির ক্ষতির কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। শান্তিনিকেতনের শিল্পীমহল মনে করছে, রিং-রোড হলে এলাকার শিল্প-সামগ্রী রক্ষা পাবে।

Advertisement

ঘটনা হল, সাহেবগঞ্জ লুপ লাইনের ওপর বোলপুরে সংকীর্ণ রেলসেতু লালপুল সম্প্রসারণের জন্য বোলপুর-রাজগ্রাম এবং বোলপুর-সিয়ান রাস্তার ওপর চলাচল করা সমস্ত যানবাহন ইদানিং শান্তিনিকেতন রাস্তার ওপর দিয়ে আসাযাওয়া করছে। বছর দুয়েকেরও বেশি দিন ধরে শান্তিনিকেতনের রাস্তা ব্যবহার করছে রুটের যাত্রীবাহী বাসের পাশাপাশি মালবাহী বিভিন্ন গাড়ি। এতে ফি দিন হাজার খানেকের কিছু বেশি বড় গাড়ির আসাযাওয়া করছে ক্যাম্পাসের ভিতর দিয়ে। এর ফলে বিদ্যালয় লাগোয়া এলাকায় দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বিশ্বভারতীর আহ্বানে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে বিশ্বভারতী আর্জি জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরের রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জেলা প্রশাসন একটি বৈঠক করে বিশ্বভারতীর সঙ্গে। ওই বৈঠকে বিকল্প রাস্তা, যান চলাচল নিয়ন্ত্রন, যানজট রোধ-সহ বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

বোলপুর-শান্তিনিকেতনে যানজট রোধে গত পৌষমেলার সময়ে বোলপুরের এসডিপিও অম্লানকুসুম ঘোষের নেতৃত্বে একাধিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়। ওই পরিকল্পনার অন্যতম একটি বিষয় ছিল, শান্তিনিকেতন হেরিটেজ এলাকা বাদ দিয়ে একটি বিকল্প রাস্তার। সেক্ষেত্রে শ্যামবাটি বাজার থেকে লালবাঁধ গা ঘেঁসে শিক্ষাভবন ওঠার রাস্তা ব্যবহার করা হয়। অন্য দিকে বোলপুরের বিডিও অফিসের পিছন থেকে শ্যামবাটি ক্যানাল পর্যন্ত একটি বিকল্প রাস্তার কথাও কেউ কেউ জানাচ্ছেন। এই দু’টি রাস্তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে ওই বৈঠকে।

বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন দত্ত বলেন, “জেলা প্রশাসন সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন