হেলিপ্যাডে আপত্তি, অভিযোগ বিজেপির

সব ঠিকঠাক থাকলে কাল, বুধবার সিউড়িতে ওই সভা করতে পারেন অমিত শাহ। জেলা বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, ‘‘শাসকদল এবং প্রশাসনের অসহযোগিতার মধ্যেই সভার প্রস্তুতি সারা হয়েছে।’’ যদিও প্রশাসন অভিযোগ মানেনি। এ দিন সকালে সিউড়িতে সভাস্থল ঘুরে যান বিজেপির এক নেতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪২
Share:

পরিদর্শন: সিউড়িতে অমিত শাহের সভাস্থলে হেলিপ্যাড তৈরির কাজ দেখছেন বিজেপি নেতারা। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

মাঠ খুঁজে হন্যে হয়ে শেষে ঠিক হয়েছে, ধানজমিতে হবে দলের সভা। বিজেপি-র দুই নেতা সোমবার সকালে ও বিকেলে সরেজমিনে দেখেও গেলেন সভাস্থলের হালহকিকত।

Advertisement

সব ঠিকঠাক থাকলে কাল, বুধবার সিউড়িতে ওই সভা করতে পারেন অমিত শাহ। জেলা বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, ‘‘শাসকদল এবং প্রশাসনের অসহযোগিতার মধ্যেই সভার প্রস্তুতি সারা হয়েছে।’’ যদিও প্রশাসন অভিযোগ মানেনি। এ দিন সকালে সিউড়িতে সভাস্থল ঘুরে যান বিজেপির এক নেতা। বিকেলে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ গিয়ে খুঁটিনাটি দেখেন আসেন। উভয়েই দাবি করেন, ‘‘সভা সফল হবে। কিন্তু সর্বভারতীয় সভাপতির সভা ভণ্ডুল করতে শাসকদলের পক্ষ থেকে অসহযোগিতা চলছে।’’

জেলা বিজেপি নেতাদের ক্ষোভ, সভা করার জন্য মাঠ খুঁজতেই তাঁদের হিমশিম খেতে হয়েছে। সিউড়ি শহরের মধ্যে মাঠ না পেয়ে শেষে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের কাছে কড়িধ্যা এলাকায় দলের নেতা-কর্মীদের মালিকানায় থাকা কৃষিজমিতেই সভা হবে বলে স্থির হয়। বিজেপি-র অভিযোগ, সরকারি দফতরগুলোর অনুমতি পাওয়া নিয়ে টালবাহানা এবং হেলিপ্যাড করার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি এখনও মেলেনি। সভায় লোক আনার জন্য যানবাহন জোগাড় করতেও তাঁদের নাকাল হতে হচ্ছে বলে একান্ত আলোচনায় জানাচ্ছেন বিজেপির স্থানীয় নেতারা। তাঁদের দাবি, সভাস্থলের পাশেই হেলিপ্যাড তৈরির অনুমতি চাওয়া হয়েছিল প্রশাসনের কাছে। কিন্তু, প্রস্তাবিত সভাস্থলের উপর দিয়ে হাইটেনশন লাইন গিয়েছে জানিয়ে হেলিপ্যাডে আপত্তি তুলেছে রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম বা পিডিসিএল। যদিও এমন কোনও তথ্য তাঁদের জানা নেই বলেই দাবি করেছেন বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার পুষ্পেন্দু সেন। তিনি বলেন, ‘‘এটা তো অ্যাভিয়েশনের দেখার কথা। আমাদের এতে কোনও ভূমিকা নেই।’’

Advertisement

রাহুলবাবু অভিযোগ করেন, ‘‘এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছায় সরকার চলছে। নইলে বিরোধী রাজনৈতিক দলের সবকিছু যে কোনও মূল্যে আটকানোর চেষ্টা হত না। প্রথম থেকেই যাতে মাঠ না পাওয়া যায়, ডেকোরেটর না পাওয়া যায় সেই চেষ্টা চলছে। বাংলার মানুষ সেটা দেখুন। এটা সভ্য সরকার নয়। সিপিএম বর্বর ছিল। কিন্তু তৃণমূল তার থেকে নীচে নেমে গিয়েছে!’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘গণতন্ত্রে লড়াই আছে, বক্তব্য রাখার জায়গা আছে। ব্রিগেডের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন আমাদের পাল্টা সভা করবেন। ওঁরা করুন সভা। সেটাই তো চাই। মানুষ বিচার করবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, সব ক্ষেত্রেই বিচারকের ভূমিকা পালন করছে তৃণমূল কংগ্রেস।’’

সভা নিয়ে কোনও ধরনের অসহযোগিতার অভিযোগ অবশ্য মানেনি তৃণমূল। দলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘কোনও অসহযোগিতাই তৃণমূল করেনি। কে কোথায় সভা করবে, কে কোথায় ছাগল চরাবে সেটা তাদের ব্যাপার! ফসল উঠে গিয়েছে, মাঠ এখন ফাঁকা।’’

গত মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়েছে বিজেপি-র ‘গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’ কর্মসূচিতে। আর তার পরের দিনই বিকল্প রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে ‘গণতন্ত্র বাঁচাও সভা’ করার কথা ঘোষণা করেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির এ রাজ্যে যে ক’টি সভা করার কথা, সেই তালিকায় বীরভূমও আছে। প্রথমে ২১ তারিখ সভা করার কথা থাকলেও অমিত শাহের অসুস্থতার জন্য দু’দিন পিছিয়ে ২৩ তারিখ সভা করার কথা জানানো হয়। বিজেপি-র আশঙ্কার আরও একটি কারণ সভায় লোকসমাগম ঘিরে। নেতৃত্বের দাবি, সভায় প্রচুর মানুষের জমায়েতের কথা। প্রচার চলছে পুরোদমে। কিন্তু শাসকদলের হুমকির ভয়ে বাসই পাওয়া যাচ্ছে না। বাস বলা হয়েছে পশ্চিম বর্ধমান ও ঝাড়খণ্ড থেকে। জেলা বিজেপি সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, ‘‘বাস বা বড় গাড়ি না পেলে ছোট গাড়িতে করে সভায় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন