পুরুলিয়ার বিজেপি নেতা ধৃত নলহাটিতে, অস্ত্র, বিস্ফোরক আইনে মামলা

বীরভূম জেলা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, গত ৬ এপ্রিল পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে নলহাটিতে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ঝামেলা হয়। সেই ঘটনায় রঘুনাথপুর ১ ব্লকের একটি মণ্ডলের বিজেপি সভাপতি গণেশের যুক্ত থাকার কিছু প্রমাণ মিলেছে। তার ভিত্তিতেই ওই গ্রেফতার। তা হলে এত পরে কেন? এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি এসডিপিও (রামপুরহাট) অভিষেক রায়। মন্তব্য এড়িয়েছেন বীরভূমের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবালও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামপুরহাট ও রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৮ ০০:৪৫
Share:

চার মাসের পুরনো মামলায় পুরুলিয়ার বিজেপি নেতা গণেশ সিংহকে গ্রেফতার করল বীরভূমের নলহাটি পুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে বিস্ফোরক আইন (৯-বি), অস্ত্র আইন, সরকারি কাজে বাধা, খুনের চেষ্টার মতো একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে। বৃহস্পতিবার রামপুরহাট এসিজেএম আদালতে হাজির করানো হলে সাত দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।

Advertisement

বীরভূম জেলা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, গত ৬ এপ্রিল পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে নলহাটিতে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ঝামেলা হয়। সেই ঘটনায় রঘুনাথপুর ১ ব্লকের একটি মণ্ডলের বিজেপি সভাপতি গণেশের যুক্ত থাকার কিছু প্রমাণ মিলেছে। তার ভিত্তিতেই ওই গ্রেফতার। তা হলে এত পরে কেন? এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি এসডিপিও (রামপুরহাট) অভিষেক রায়। মন্তব্য এড়িয়েছেন বীরভূমের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবালও।

গোটা ঘটনায় পুলিশ-তৃণমূলের যোগসাজস দেখছেন দুই জেলার বিজেপি নেতারা। প্রতিবাদে বুধবার দুপুরে বিজেপি কর্মীরা রঘুনাথপুর থানার সামনে পথ অবরোধও করেন। রঘুনাথপুর ১ ব্লকে বিজেপির ভাল ফল হওয়ার পিছনে গণেশের অবদান আছে বলে দলের কর্মীদের একাংশের দাবি। বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘নির্বাচনে আমাদের সাফল্যের পর থেকেই পুলিশ মিথ্যা মামলায় দলীয় নেতা-কর্মীদের ফাঁসাচ্ছে। গণেশকেও বিজেপি করার ‘অপরাধেই’ গ্রেফতার করা হল।’’

Advertisement

বীরভূম জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক শুভাশিস চৌধুরীর কথায়, ‘‘পুরুলিয়ায় দল এখন শক্তিশালী। সেখারকার সংগঠনকে দুর্বল করতেই তৃণমূল নেতাদের কথা মতো বীরভূমের এক মিথ্যে মামলায় পুলিশ দলের নেতাকে গ্রেফতার করল। এর বিচার হবেই।’’ বীরভূম পুলিশ সে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। একই দাবি তৃণমূলেরও। পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি শান্তিরাম মাহাতোর জবাব, ‘‘কেউ অপরাধ করলে পুলিশ ছাড়বে কেন?’’

পুরুলিয়া বিজেপি সূত্রের খবর, এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে জেলা পরিষদের রঘুনাথপুর ১ ব্লকে ৩৮ নম্বর আসেন প্রার্থী হয়েছিলেন গণেশ। ফল বেরোতে দেখা যায়, তিনি ৪৫৬ ভোটে হারিয়েছেন বিদায়ী কৃষি কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের অনাথবন্ধু মাজিকে। কিন্তু, বিডিও (রঘুনাথপুর ১) অনির্বাণ মণ্ডল গণনার রাতেই থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সেখানে দাবি করেন, গণনার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই বিজেপির কাউন্টিং এজেন্টরা চাপ দিয়ে তাঁদের প্রার্থী জয়ী বলে শংসাপত্র আদায় করে নেন। অনাথবন্ধু পুনর্গণনার দাবি তোলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, বিজেপির কর্মী এবং কাউন্টিং এজেন্টরা গণনাকেন্দ্রে ভয় ও সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করায় তৃণমূলের এজেন্টরা থাকতে পারেননি।

এর পরেই জেলা প্রশাসন অভিযোগটি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠায়। সুপারিশ মেনে পুনর্গণনা হয়। বিজেপি পুনর্গণনা বয়কট করে। তাদের অভিযোগ ছিল, শাসকদলের নির্দেশে জোর করে জেতা প্রার্থীকে হারানোর চেষ্টা করছে প্রশাসন। কোনও দলের এজেন্টই পুনর্গণনার সময়ে কেন্দ্রে ছিলেন না। পরের গণনায় দেখা যায়, ১,০২৯ ভোটে অনাথবন্ধু জিতেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন