প্রতীকী ছবি।
কেন্দ্রের নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে একযোগে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতে কৃষি আইন নিয়ে চাষিদের বোঝাতে ‘চাটাই বৈঠক’ আয়োজনে জোর দিচ্ছে বিজেপি। দলের ‘গৃহ সম্পর্ক অভিযান’-এও বাড়ি-বাড়ি গিয়ে কৃষি আইনের পক্ষে লিফলেট বিলি করছেন বিজেপি নেতারা।
গত লোকসভা নির্বাচনে জেলার দু’টি লোকসভা কেন্দ্র, বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুরে বড় ব্যবধানে জয় পান বিজেপি প্রার্থীরা। পাশাপাশি, জেলার বারোটি বিধানসভাতেই লোকসভায় ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে তৃণমূলের চেয়ে এগিয়ে ছিল বিজেপি। তবে বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় কৃষি আইন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে চলেছে, তা মানছেন জেলার বিজেপি নেতৃত্বের বড় অংশই।
তাই ওই আইন নিয়ে বুথ স্তরে গিয়ে মিটিং-এ জোর দেওয়া হচ্ছে, যার পোশাকি নাম ‘চাটাই বৈঠক’। দলীয় সূত্রে খবর, কৃষি আইন নিয়ে ওঠা নানা প্রশ্নের জবাব কোন পথে দেওয়া হবে, তা মণ্ডল নেতৃত্বকে আলাদা ভাবে বুঝিয়েছেন দলের জেলা নেতারা। মণ্ডল নেতারা বিভিন্ন শক্তিকেন্দ্রের নেতাদের আইন বুঝিয়েছেন।
বিজেপির এক-একটি শক্তিকেন্দ্রের আওতায় চার থেকে সাতটি বুথ রয়েছে। শক্তিকেন্দ্র ও মণ্ডলের কর্মীরা বুথে গিয়ে পাড়ায়-পাড়ায় বৈঠক করে চাষিদের কৃষি আইনের গুরুত্ব বোঝাচ্ছেন। কিছু বৈঠকে দলের জেলা নেতা ও সাংসদও থাকছেন। বৈঠক থেকেই বিলি করা হচ্ছে আইন নিয়ে লিফলেট। সেখানে যেমন কৃষি আইন নিয়ে বিরোধীদের তোলা বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরা হচ্ছে তেমনই পাল্টা যুক্তি দিয়ে সে সব অভিযোগ নস্যাৎও করা হচ্ছে।
বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার বলেন, “রাজনৈতিক স্বার্থে কৃষি আইন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভুল বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছে বিরোধীরা। তবে চাষিদের কাছে গিয়ে আমরা জানতে পেরেছি, বিরোধীদের কথায় তাঁরা বিশ্বাস করছেন না।”
দলীয় সূত্রে দাবি, বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার আওতায় থাকা ১,৬৬০টি বুথের মধ্যে ১,৪২৯টি বুথ এবং বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার আওতায় থাকা ১,৫৯৯টি বুথের মধ্যে ১,৫০০ বুথে এক দফা করে ‘চাটাই বৈঠক’ সারা হয়েছে।
বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র ও বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি হরকালী প্রতিহার বলেন, “চলতি ডিসেম্বরের মধ্যেই আমরা বাকি বুথগুলিতে ‘চাটাই বৈঠক’ শেষ করব। গৃহ সম্পর্ক অভিযানও শুরু হয়েছে। সেখানেও কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের সুফল মানুষের সামনে আমরা তুলে ধরছি।”
যদিও জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী শ্যামল সাঁতরার দাবি, “কেন্দ্রের কৃষি আইনে চাষিদের সর্বনাশ হবে। ‘গ্রামে চলো’ অভিযান করে আমরা এর প্রচার করেছি। বিজেপিকে কৃষকেরা আর বিশ্বাস করেন না।”