প্রতীক্ষা: সোমবার আদ্রা স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র
ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অবরোধের জেরে আদ্রা ডিভিশনের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৬৮ কোটি টাকা। মঙ্গলবার বিবৃতি দিয়ে এ কথা জানিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ। ছাতনা ও শালবনি স্টেশনে অবরোধের জন্য ভারত জাকাত মাঝি পরগনা মহলের কর্মকর্তা ও সদস্য মিলিয়ে মোট ৬৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে রেল। ডিআরএম (আদ্রা) শরদকুমার শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘যে সমস্ত দাবি ও সমস্যার কথা বলে সংগঠনটি রেল অবরোধ করেছিল তার সঙ্গে রেলের কোনও সম্পর্ক নেই। অবরোধের জেরে আমাদের বিশাল টাকার ক্ষতি হয়েছে।”
শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন দাবিতে সোমবার রেল ও রাস্তা অবরোধ করেছিল জনজাতি সংগঠনটি। ভোর থেকে রাত সাড়ে তিনটে পর্যন্ত অবরোধ চলেছে আদ্রা-মেদিনীপুর শাখার শালবনি স্টেশনে। সন্ধ্যা পর্যন্ত অবরোধ চলেছে ওই শাখারই ছাতনা স্টেশনে। অবরোধ ওঠার পরে লাইন পরীক্ষা করে ট্রেন চালাতে লেগেছে আরও বেশ কিছু সময়। ফলে ভোরে ওই শাখায় এক্সপ্রেস ট্রেন চালানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে রেল। মঙ্গলবারও আদ্রা ডিভিশনে আদ্রা-হাওড়া শিরোমণি প্যাসেঞ্জার, শালিমার-ভোজুডি আরণ্যক এক্সপ্রেস, আদ্রা-চক্রধরপুর প্যাসেঞ্জার, হলদিয়া-আসানসোল এক্সপ্রেস ও রাঁচী-হাওড়া স্পেশ্যাল বাতিল করা হয়।
গভীর রাত পর্যন্ত আদ্রা স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকার পরে ঘুরপথে রওনা দিয়েছে ডিব্রুগড়-কন্যাকুমারী বিবেক এক্সপ্রেস ও পুরুলিয়া-ভেল্লিপুরম এক্সপ্রেস। যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, স্টেশনে পর্যাপ্ত খাবারের অভাব ছিল। বাইরে থেকে চ়়ড়া দামে খাবার কিনতে হয়েছে। তবে ডিআরএম দাবি করেছেন, দূরপাল্লার যাত্রীদের যাতে সমস্যায় না পড়তে হয়, সে জন্য রাত পর্যন্ত স্টেশনে ছিলেন এডিআরএম ও সিনিয়র ডিসিএম-সহ কয়েক জন আধিকারিক। তিনি বলেন, ‘‘স্টেশনে পানীয় জলের বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বাতানুকুল কামরায় যাতে এসি ঠিক ভাবে চলে, সে জন্য বিদ্যুতের বন্দোবস্ত করা হয়েছিল স্টেশন থেকে।’’
রেল জানিয়েছে, গভীর রাত পর্যন্ত অবরোধের জেরে শেষ পর্যন্ত আদ্রা ডিভিশনে ৪৪টি ট্রেন বাতিল করতে হয়েছিল। যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছিল ২৫টি ট্রেনের। ২৬টি ট্রেনকে বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড় করিয়ে পর্যবেক্ষণের পরে চালানো হয়েছে। এই সমস্ত কিছুর জন্য যাত্রী পরিবহণেই ডিভিশনের ক্ষতি হয়েছে প্রায় সাড়ে ২৬ কোটি টাকা।
দক্ষিণপূর্ব রেলের এই ডিভিশন বর্তমানে পণ্য পরিবহণ করে ভাল আয় করছে। রেল জানিয়েছে, অবরোধের জেরে ৪৭টি মালগাড়ি চালানো যায়নি। বিভিন্ন জায়গায় দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়েছিল ৪৩টি মালগাড়ি। ৫টি মালগাড়িতে পণ্য তোলা যায়নি। এই সমস্ত মিলিয়ে সোমবার আদ্রা ডিভিশনের ক্ষতি হয়েছে আরও প্রায় ৪২ কোটি টাকা।