দর নেই। রাস্তায় আলু ছড়িয়ে অবরোধ ময়ূরেশ্বরে। রবিবারের নিজস্ব চিত্র।
বাজারে আলুর দাম নেই, হিমঘরেও মিলছে না ঠাঁই। চাষিরা তাই আলু ছড়িয়ে পথ অবরোধ করলেন।
রবিবার সকাল ৯ টা থেকে জেলা কংগ্রেস, কংগ্রেস প্রভাবিত কৃষাণ-খেতমজুর সংগঠন, দিশম আদিবাসী জুমিত গাঁওতা এবং ওঁরাও কল্যাণ সমিতির সম্মিলিত নেতৃত্বে, আত্মঘাতী আলুচাষীদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরন, হিমঘরে আলু রাখার সরকারি দায়িত্ব, কৃষিঋণ মকুব এবং সহায়ক মুল্যে আলু কেনার দাবিতে ময়ূরেশ্বরের গদাধরপুর বাজারে ঘণ্টা খানেক পথ অবরোধ হল। বোলপুর-রাজগ্রাম সড়ক অবরোধ করেন দুই শতাধিক আলুচাষী। রাস্তায় আলু ছড়িয়ে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা।
ওই বিক্ষোভে হাজির ছিলেন স্থানীয় কাঁকসা গ্রামের আলুচাষি শ্রীকুমার মণ্ডল, রাতগড়ার সুভাষ পালরা। কেউ ব্যাঙ্ক, কেউ বা মহাজনের কাছে ঋণ নিয়ে বিঘে প্রতি প্রায় ২০ হাজার খরচ করে ২/৩ জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। বিঘে প্রতি ফলন পেয়েছেন ৯২/৯৫ প্যাকেট (৫০ কেজি)। স্থানীয় আড়তে প্যাকেট প্রতি আলুর দাম মিলছে ১২০/১২৫ টাকা। ওইসব আলু চাষিরা জানান, এমনিতে ওই দামে আলু দিয়ে পথে বসার অবস্থা। তার উপর নগদ টাকাও মিলছে না। কবে মিলবে তার নিশ্চয়তাও নেই। তবুও আড়তদারের গরজেই আলু দিতে হচ্ছে। কারণ হিমঘরেও আলু রাখার সুযোগ মিলছে না।
অজিত মুদি, সন্তোষ মণ্ডলরা বলেন, “এই অবস্থায় কি করে ঋণ মেটাব, কি করেই বা ছেলে মেয়েদের মুখে ভাত জোগাব, তা ভেবেই রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে আমাদের।” কৃষাণ-খেতমজুর সংগঠনের জেলা সভাপতি সৈয়দ কাসাফদ্দোজা, দিশম গাঁওতার পক্ষে সন্দীপ রায় এবং ওঁরাও কল্যাণ সমিতির পক্ষে নিমাই ওরাঁও জানান, সরকার কৃষিতে সাফল্যের জন্য ঘটা করে চাষিদের কৃষকরত্ন পুরস্কার দিচ্ছেন। আর অধিক আলু ফলানোর মাসুল দিতে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হচ্ছে চাষিদের। কারণ আলু তো বটেই অন্যান্য কৃষিপণ্যের বিপনণ এবং সংরক্ষনের বিষয়ে নানা রকম সরকারি ঘোষণা হলেও তার নাগাল প্রকৃত চাষিরা কমই পান।
বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি তৃণমূল নেতা বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, “সরকারি দরে আলু কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির মাধ্যমে আলু কেনা হবে। আর হিমঘরে আলু সংরক্ষণের ব্যাপারে প্রকৃত চাষিরা যাতে সুযোগ পান, তা দেখা হবে।”