হাত-পা বাঁধা বধূর দেহ ঘিরে বিক্ষোভ বক্রেশ্বরে

পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি, ওই মহিলার উপরে যৌন নির্যাতন চালানোর পরে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। পুলিশ দ্রুত দোষীদের খুঁজে বের করুক। দেহ ময়নাতদন্ত থেকে ফিরে আসার পরে সোমবার বিকালেও একই দাবি তুলে বিক্ষোভ দেখান এলাকার মানুষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৪০
Share:

রহস্য: মৃত বধূকে ঘিরে পরিজনেরা। দুবরাজপুরের বক্রেশ্বরে। নিজস্ব চিত্র

এক বধূর দেহ উদ্ধারকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল দুবরাজপুরের বক্রেশ্বরে। রবিবার রাত দশটা নাগাদ বক্রেশ্বর শ্মশান থেকে কিছুটা দূরে ঝোপ জঙ্গল ঘেরা ঝিলিমিলি কাঁদরের পাশ থেকে হাত বাঁধা অবস্থায় দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। বক্রেশ্বর বাগানপাড়ায় তাঁর বাপের বাড়ি।

Advertisement

পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি, ওই মহিলার উপরে যৌন নির্যাতন চালানোর পরে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। পুলিশ দ্রুত দোষীদের খুঁজে বের করুক। দেহ ময়নাতদন্ত থেকে ফিরে আসার পরে সোমবার বিকালেও একই দাবি তুলে বিক্ষোভ দেখান এলাকার মানুষ। মহিলার দেহটি যেখানে মিলেছে তার কাছাকাছি একটি আশ্রম গড়ে বসবাস করা এক বাবাজিকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। খোঁজ চলছে সেই মূহূর্তে কাঁদরে একটি পাম্পসেট লাগিয়ে জমিতে জল দেওয়ার কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিরও। তবে ঘটনাটি ঠিক কী ঘটেছে সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করছে পুলিশ।

জেলা পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার বলেন, ‘‘প্রাথমিকভাবে ওই মহিলাকে খুন করা হয়েছে বলেই অনুমান। তবে আপাতভাবে শারীরিক আঘাত বা যৌন নিগ্রহের কোনও চিহ্ন মেলেনি। কাউকে এখনও গ্রেফতার করাও হয়নি। পুলিশ সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে।’’

Advertisement

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, খয়রাশোলের রূপসপুর গ্রামে বিয়ে হয়েছিল ওই বধূর। ১০ ও ১২ বছরের দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। সব ঠিকঠাকই চলছিল। তাল কাটে গত পৌষ মাসে। বেঙ্গালুরুতে কাজ গিয়ে একটি বহুতল বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে যান স্বামী। মাথায় চোট লাগে। তারপর থেকে মাথায় অসম্ভব যন্ত্রণা। হাঁটাচলাও ঠিক মতো করতে পারেন না। ঘটনার কয়েকমাস পর্যন্ত খয়রাশোলে কাটালেও শেষ পর্যন্ত অসুস্থ স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে মাস কয়েক আগে বক্রেশ্বরে বাপের বাড়ি চলে আসেন বধূ।

পরিজনেরা জানাচ্ছেন, রবিবার সকাল দশটা নাগাদ অসুস্থ স্বামীর মঙ্গলকামনায় বক্রেশ্বর থেকে প্রায় সাড়ে চার কিমি দূরে একব্বরপুরে একটি কালী মন্দিরে পুজো দিতে গিয়ে আর ফেরেননি বধূ। এমনিতে প্রায় প্রতি রবিবার ওই কালীমন্দিরে যেতেন তিনি। কিন্তু এ দিন বেলা তিনটে পর্যন্ত নির্জন রাস্তা ধরে বাড়ি না ফেরায় সকলেই চিন্তিত হয়ে পড়েন। বিস্তর খোঁজাখুজি করে রাত সাড়ে নাটা নাগাদ মৃত অবস্থায় দেহ মেলে ওই বধূর। ঘটনাস্থলের কাছাকাছি থাকা বাবাজির উপরেই সন্দেহ বাড়ে। তবে পুলিশের একটা অংশ মনে করছে, বাবাজীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও ওই বধূর মৃত্যুর পিছনে তাঁর যোগ থাকার স্পষ্ট ইঙ্গিত এখনও মেলেনি। বরং এমনটাও হতে পারে যে ওই বধূকে যে খুন করেছে সে বধূর পূর্ব পরিচিত বা অতি পরিচিত হতে পারে। বধূর বাবা বলছেন, ‘‘আমার একটাই চাওয়া মেয়েটাকে যে মেরেছে তকে খুঁজে শাস্তি দিক পুলিশ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন