ত্রিফলা কাঁটায় বিদ্ধ বোলপুর

ক্রমশ আন্তর্জাতিক মানের শহর হয়ে উঠছে বোলপুর। বহু মানুষ দেশ বিদেশ থেকে শান্তিনিকেতনে বেড়াতে যান। প্রতিদিনই গড়ে প্রায় ২-৩ হাজার পর্যটক আসেন বোলপুর - শান্তিনিকেতনে। 

Advertisement

বাসুদেব ঘোষ 

বোলপুর শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:০০
Share:

ভগ্ন: বোলপুরের রাস্তায় নষ্ট ত্রিফলা আলো। নিজস্ব চিত্র

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনায় শহর কলকাতা থেকে জেলার শহরগুলোতেও ত্রিফলা আলো বসানো হয়েছিল। বোলপুর শহরেও ত্রিফলা আলো বসানো হয়েছিল ধুমধাম করে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সাধের ত্রিফলাই এখন কাঁটার মতো বিঁধছে পুর কর্তৃপক্ষকে। শহরের পথে একের পরে এক নষ্ট ত্রিফলা বাতির কোনওটি ভেঙে ঝুলছে, কোনওটি কাত হয়ে আছে। আলো জ্বলে না বহুদিন ধরে। অনেক টাকা খরচ করে যে সৌন্দর্যায়নের জন্য এই ত্রিফলা আলো বসানো হয়েছিল এখন সেই ত্রিফলার বেহাল দশায় শহরের সৌন্দর্যায়ন ব্যাহত হচ্ছে বলে দাবি এলাকাবাসীর।

Advertisement

ক্রমশ আন্তর্জাতিক মানের শহর হয়ে উঠছে বোলপুর। বহু মানুষ দেশ বিদেশ থেকে শান্তিনিকেতনে বেড়াতে যান। প্রতিদিনই গড়ে প্রায় ২-৩ হাজার পর্যটক আসেন বোলপুর - শান্তিনিকেতনে।

বোলপুর শহরের বিভিন্ন রাস্তায় একসময় ঘটা করে বসানো হয়েছিল ত্রিফলা আলো। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেই আলোর বেহাল অবস্থা। কোথাও বাতিস্তম্ভ ভাঙা তো কোথাও আলো জ্বলে না। বেশিরভাগ ত্রিফলা আলোই ঢেকে গিয়েছে আগাছা ও পরগাছায়। এমনই নানা দৃশ্য দেখা যাবে বোলপুরের কাছে কাছারি পট্টি থেকে স্টেশন রোড যাওয়ার পথে, চৌরাস্তা থেকে বোলপুর হাই স্কুল যাওয়ার রাস্তায়, বোলপুরে নিচু পট্টি এলাকাতেও বেশ কিছু জায়গায় দেখা যায় একই ছবি। বোলপুর শহরের স্টেশন রোড, শ্রীনিকেতন রোড, জামবুনি বাস স্ট্যান্ড ও সংলগ্ন রাস্তা ছাড়াও শহরের বেশ কিছু এলাকায় ত্রিফলা আলোগুলি ভেঙে পড়ে রয়েছে অথচ সেগুলি সারানো হচ্ছে না বলে অভিযোগ।

Advertisement

কাছারি পট্টির বাসিন্দা ঝিলিক শর্মা বলেন, ‘‘এই ত্রিফলা আলোগুলি দীর্ঘ দিন ধরেই অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এর মধ্যে অনেক আলো ভেঙে গিয়েছে। পুরসভার কোনও নজর নেই।’’

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ও রাস্তা আলোকিত করতে সরকারি উদ্যোগে কয়েক বছর আগেই বোলপুর শহর জুড়ে ত্রিফলা আলোগুলি লাগানো হয়েছিল, এই ত্রিফলা আলোগুলি এখন বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। ত্রিফলা আলোর পাশাপাশি লাগানো হয়েছে এলইডি আলোর পথবাতি। পুরসভার বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা জানান, এই এলইডি আলোয় বিদ্যুৎ খরচ কম। আলোও অনেক বেশি। শহর আরও বেশি আলোকিত হলেও সৌন্দর্যায়নের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শহরবাসী। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘‘সৌন্দর্যায়নের নামে লুটের প্রক্রিয়া চলছে। উন্নয়নের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে অথচ কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। ত্রিফলা আলো হোক বা রাস্তা - একইভাবে উন্নয়নের নামে লুঠ করা হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।’’

ত্রিফলা আলোর বিষয়ে বোলপুর পুরসভার উপ-পুরপ্রধান নরেশ বাউরি বলেন, ‘‘চারিদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে উন্নয়ন চলছে সেই উন্নয়নের গতি দেখেই ভয় পেয়ে বিরোধীরা এ সব বলছেন। বোলপুর শহরের বেশ কিছু জায়গায় নতুনভাবে ফুটপাত তৈরি হচ্ছে তার জন্য রাস্তায় থাকা বাতিস্তম্ভগুলিকে সরানোর কাজ চলছে। এর সঙ্গে যে সব ত্রিফলা আলোগুলি ভেঙে গিয়েছে বা খুঁটি ভেঙে পড়ে রয়েছে সেগুলি নতুন করে বসানো হবে।’’

বসন্ত উৎসবের আগেই মেরামত করে আলো বসানোর কাজ শেষ করা হবে বলে জানান তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন