ক্ষোভ কমাতে প্রশাসনের ওষুধ

আরও কাজ দিতে শিবির পঞ্চায়েতে

একশো দিনের প্রকল্পে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লোকজনকে কাজ দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে লাগাতার বিক্ষোভে জল ঢালতে এ বার গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে শিবির করে আরও লোক নেওয়ার কথা জানাল প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া ও মানবাজার শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৭ ০২:১২
Share:

পড়াশোনা: বোরোর বড় মামড়ো স্কুলে শুক্রবার থেকে তালা ঝুলেছিল। শনিবার বারান্দায় চলল ক্লাস। নিজস্ব চিত্র

একশো দিনের প্রকল্পে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লোকজনকে কাজ দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে লাগাতার বিক্ষোভে জল ঢালতে এ বার গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে শিবির করে আরও লোক নেওয়ার কথা জানাল প্রশাসন।

Advertisement

কর্মসূচি শুরু হওয়ার পরে মঙ্গলবার থেকে দফায় দফায় জাতীয় সড়ক অবরোধ করা, একের পর এক স্কুলে তালা দেওয়া চলছিলই। এ বার শনিবার এক সরকারি কর্মীর বাড়িতে চড়াও হওয়ার ঘটনাও ঘটল। তবে এ দিন তুলনায় ক্ষোভ-বিক্ষোভের সংখ্যাও কমেছে।

জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘১০০ দিনের প্রকল্পের আর পাঁচটা কাজের সঙ্গে এই কাজের যে কোনও তাৎ নেই, এখন অনেক মানুষই তা বুঝছেন। তাই ক্ষোভ-বিক্ষোভও কমেছে। ঠিক হয়েছে, প্রশাসন আগামী সোমবার থেকে শনিবার পর্যন্ত প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে গ্রাম রোজগার সপ্তাহ পালন করা হবে। একশো দিনের কাজ করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের কাছ থেকে ‘৪-এর ক’ ফর্ম পূরণ করে জমা নেওয়া হবে। যাঁরা ফর্ম পূরণ করবেন, প্রশাসন তাঁদের ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ দেবে।’’ জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, যে সব পঞ্চায়েতে ১০০ দিনের কাজ কম হয়, সেখানে মাঝেমধ্যেই রোজগার সপ্তাহ পালন করা হয়। ওই শিবির হলে লোকজনের ক্ষোভ কমবে বলে তাঁরা আশাবাদী।

Advertisement

জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বাঘমুণ্ডির বিধায়ক নেপাল মাহাতো অভিযোগ তুলেছেন, ‘‘মানুষ কাজ পেলে তো ভালই। কিন্তু কাজ দেওয়ার পদ্ধতির ভুলেই অশান্তি চলছে। আমরা বিষয়টি বিধানসভায় তুলব।’’ যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘পদ্ধতিতে কোনও ত্রুটি নেই। বিক্ষোভের মূলে আছে বিরোধীদের উস্কানি। আমরা রাজনৈতিক ভাবেই বিরোধীদের এই উস্কানির মোকাবিলা করব।’’

তবে শনিবারও সকাল থেকে দফায় দফায় পুরুলিয়া-জামশেদপুর জাতীয় সড়কে অবরোধ হওয়ায় যাত্রীদের শুক্রবারের মতোই ভোগান্তি শিকার হতে হয়। সকালে পুরুলিয়া মফস্সল থানার টামনায় ঘণ্টাখানেক অবরোধ চলে। এই সড়কেই বলরামপুর থানা এলাকার নামশোলেও আরও আধ ঘণ্টার মতো অবরোধ হয়। দু’টি জায়গাতেই পুলিশ গিয়ে অবরোধ তোলে। এ দিন বরাবাজার থানার টকরিয়া মোড়ে স্বনির্ভর দলের মহিলারা রাস্তায় নেমে পড়ায় যানবাহন আটকে যায়। মানবাজার-বান্দোয়ান রাস্তায় ঘণ্টা দুয়েক অবরোধ চলায় ওই রুটে যান চলাচল ব্যাহত হয়।

এ দিন পুরুলিয়া ১ ব্লকের চাকদা গ্রামে শ্রম দফতরের একটি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত এক কর্মীর বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁর মাকে নিগ্রহ করার অভিযোগ ওঠে কিছু লোকজনের বিরুদ্ধে। পুলিশের কাছে অভিযোগও দায়ের হয়েছে। এই ব্লকের বিডিও দিব্যজ্যোতি দাস জানিয়েছেন, ‘‘পুলিশ ওই ঘটনার তদন্ত করছে।’’

স্কুলে এ দিনও তালা ঝুলেছে। আড়শার হেঁশলা, বেলডি থেকে পুরুলিয়া ১ ব্লকের ডুড়কু, পুরুলিয়া ২ ব্লকের পিঁড়রা, ঝালদা ১ ব্লকের জারগোর প্রাইমারি স্কুলে তালা ঝোলানো হয়। পুলিশ গিয়ে মহিলাদের বুঝিয়ে তালা খোলে। বোরো থানার বড় মামড়ো প্রাথমিক স্কুলে শুক্রবার তালা পড়েছিল। শনিবার সকালে দেখা গেল বারান্দায় বসে ক্লাস হচ্ছে। পরে মানবাজার (২) জয়েন্ট বিডিও সন্দীপ প্রামাণিক ও পুলিশ এসে বুঝিয়ে তালা খোলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন