মাচানতলায় সিসিটিভি। —নিজস্ব চিত্র।
রাস্তায় ছিনতাই, কেপমারি মাঝে মধ্যেই ঘটছে। এটিএম মেশিন পর্যন্তও ভাঙচুর হয়েছে বাঁকুড়া শহরে। এ ছাড়াও বেপরোয়া গাড়ি বা মোটরবাইকের ধাক্কায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। এই সব নিয়ন্ত্রণের দাবি দীর্ঘ দিন ধরেই তুলেছেন শহরবাসী। রাস্তার উপর নজরদারি চালাতে এ বার পদক্ষেপ নিতে চলেছে জেলা পুলিশ। শহরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বসানো হচ্ছে ক্লোসড সার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি ক্যামেরা)। বুধবার মাচানতনা মোড়ে লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
জেলা পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার বলেন, “শহরের নিরাপত্তার কথা ভেবেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সিসিটিভি লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। আপাতত মাচানতলা মোড়ে লাগানো হয়েছে।” খুব শীঘ্রই অন্যান্য এলাকাতেও সিসিটিভি বসানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাচানতলা মোড়ের পাশাপাশি লালবাজার মোড়, স্টেশন মোড়, সতীঘাট মোড়, ভৈরবস্থান এলাকাতেও সিসিটিভি বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সতীঘাট মোড়ে এর আগে প্রকাশ্য রাস্তায় খুনের ঘটনাও ঘটেছে। এ ছাড়াও মাদকচক্রীদের সক্রিয়তাও এই এলাকায় প্রবল বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। শহরের বিভিন্ন এলাকায় কেপমারি, ছিনতাইয়ের ঘটনার অভিযোগ উঠেছে। রাতের বেলায় শহরের বিভিন্ন বন্ধ দোকান ভেঙে চুরির ঘটনাও ঘটেছে একাধিকবার। সিসিটিভি বসালে এই সব ঘটনায় নিয়ন্ত্রণ হবে বলেই মত বাসিন্দাদের।
সারদামণি গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ সিদ্ধার্থ গুপ্ত বলেন, “সিসিটিভি বসানো অনেক আগেই দরকার ছিল। সেক্ষেত্রে দেরি হলেও এটা ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে এর সদ্ব্যবহার যাতে হয় সে দিকে পুলিশকে দৃষ্টি দিতে হবে। শহরের নিরাপত্ত এতে কিছুটা বাড়বে আশা করব।” উল্লেখ্য, সম্প্রতি জেলার জঙ্গলমহলে ফের সংগঠন গড়ে তুলতে তৎপরতা দেখা যাচ্ছে মাওবাদীদের। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা রিপোর্টে সেই তথ্য সামনে এসেছে। বিষয়টি মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজ্য পুলিশেরও। এই পরিস্থিতিতে খাস জেলা শহরে কারা আনাগোনা করছেন সে বিষয়েও জেলা পুলিশ নজর রাখতে চাইছে বলে দাবি পুলিশেরই একাংশের। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “সন্দেহভাজনেরা অনেকেই শহরে গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করেন। সিসিটিভি বসায় অনেকেই আমাদের নজরে পড়বেন।’’
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে কয়েক বছর আগে বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুরের মতো পুর শহরের বিভিন্ন মোড়ে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল বসানো হয়েছিল। বাঁকুড়া শহরে এর দু-একটি কাজ করলেও বিষ্ণুপুরের ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা চালুই হল না। ট্রাফিক লাইটের পিলারগুলি অকেজো হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে বিষ্ণুপুরের বিভিন্ন মোড়ে। তাতে বাতিও জ্বলে না। সিসিটিভিও বিষ্ণুপুরের অকেজ ট্রাফিক সিগন্যালের রূপ নেয় কি না তা নিয়েও অনেকের মধ্যেও আশঙ্কা। জেলা পুলিশ সুপারের অবশ্য বক্তব্য, “মাচানতলার সিসিটিভি আমরা পরীক্ষা মূলক ভাবে বসিয়েছি। কিছুদিনের মধ্যেই বোঝা যাবে প্রকল্পটি সফল হতে পারে কি না।”