Death

Death: ওঝার কাছে গিয়ে মৃত সাপে কাটা শিশু, শিবির গ্রামে

বাঁকুড়ার ইন্দাসের আকুই ১ পঞ্চায়েতের বনকি গ্রামে এই ঘটনার পরে, শনিবার সচেতনতা শিবির করল ‘ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইন্দাস শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২২ ০৭:৩১
Share:

প্রতীকী ছবি।

বছর চারেকের শিশুটিকে বিষধর সাপে ছোবল মেরেছিল। তবে লক্ষণ বোঝা যায়নি বলে দাবি পরিবারের। পরে, অসুস্থ শিশুটিকে ওঝার কাছে ঘুরিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি। বাঁকুড়ার ইন্দাসের আকুই ১ পঞ্চায়েতের বনকি গ্রামে এই ঘটনার পরে, শনিবার সচেতনতা শিবির করল ‘ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি’।

Advertisement

সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সৌম্য সেনগুপ্ত জানান, গত বৃহস্পতিবার সঞ্জয় হাঁসদা নামের ওই শিশুটিকে সাপে ছোবল মারে। পেটে ব্যথা করার সঙ্গে তার দু’চোখের পাতা পড়ে আসছিল। তাঁর কথায়, “শিশুটিকে বাড়ির লোক স্থানীয় এক ওঝার কাছে নিয়ে যান। সেখানে বলা হয়, শিশুটির উপরে না কি ‘আত্মা ভর’ করেছে। অবস্থা আরও খারাপ হলে, ইন্দাস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কিছু পরে শিশুটির মৃত্যু হয়।” মৃত শিশুর মা রেবতী হাঁসদা সংবাদ মাধ্যমের কাছে বলেন, “সে দিন সকালে উঠেই ছেলে বলছিল, পেটে জ্বালা করছে। কথা জড়িয়ে আসছিল। তাই ওকে পাশের গ্রামের এক ওঝার কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। তবে ওঝা বলেনি যে, এটা ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার রোগ।” শরীর খারাপ হলে তাঁরা সাধারণত ওঝার কাছেই যান বলেও দাবি তাঁর। অভিযোগ অস্বীকার করে ওই ওঝার অবশ্যদাবি, “শিশুটিকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেছিলাম। কোনও ঝাড়ফুঁক করিনি।”

ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক (ইন্দাস) সায়ন্তন মণ্ডল, জয়েন্ট বিডিও (ইন্দাস) শিবাশিস দাস প্রমুখ এ দিনের শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন। যুক্তিবাদী সমিতির তরফে সোমেন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সাপে ছোবল মারার লক্ষণ দেখা দেওয়ার একশো মিনিটের মধ্যে রোগীকে নির্দিষ্ট পরিমাণে ‘এভিএস’ (অ্যান্টি-ভেনম সিরাম) দেওয়া গেলে, বাঁচার সম্ভাবনা একশো শতাংশ। কারও কোনও অলৌকিক ক্ষমতানেই এবং সাপে কাটা রোগীকে ওঝার বদলে যে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া দরকার, সে বার্তা শিবিরে দেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, “সাপের ছোবল থেকে বাঁচতে রাতে অবশ্যই মশারি টাঙিয়ে শোয়া, রাতে আলো ছাড়া, হাঁটাচলা না-করা এবং মাঠে চাষের কাজের সময়ে পায়ে চটের বস্তা মোজার মতো বানিয়ে পরা জরুরি।”

Advertisement

সৌম্যও জানান, এই ঘটনা আবারও দেখাল যে, ওঝা-গুণিনদের প্রতি বিশ্বাস কেমন প্রাণঘাতী হতে পারে। সাপের ছোবলের লক্ষণ প্রত্যেকের জানা উচিত। বিশেষ করে যন্ত্রণাহীন কালাচ সাপে ছোবলমারলে পেটে ব্যথা, গলা ব্যথা, ঢোক গেলার অসুবিধা বা দু’চোখের পাতা পড়ে আসার মতো লক্ষণ দেখা যায়। এ সব লক্ষণ দেখা গেলেই, সতর্কহয়ে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের কাছে যাওয়া দরকার।

ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “সচেতনতার অভাব রয়েছে। শিশুটি সময়মতো চিকিৎসা পেলে এ পরিণতি হত না। আমরা সময়ে সময়ে সচেতনতা প্রচার করে থাকি। আগামী দিনেও করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন