ঝরিয়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রান্নাঘরের দরজায় ঝুলছে তালা। — নিজস্ব চিত্র।
চাল ও ডালের সরবরাহ না থাকায় শুক্রবার শিশুদিবসেও উনুন জ্বলল না বাঁকুড়া-১ ব্লকের ঝরিয়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। অভিযোগ, খালি পেটেই ওই কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরেছে শিশুরা। খাবার পেলেন না প্রসুতিরাও। এই ঘটনায় অসন্তুষ্ট এলাকাবাসীদের একাংশ। প্রশাসন জানিয়েছে, সাময়িক সমস্যা হলেও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে খাবার জিনিস সরবরাহ করা হয়েছে। দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে।
বাঁকুড়া-১ ব্লকের ঝরিয়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশু এবং প্রসূতি মিলিয়ে উপভোক্তার সংখ্যা ৫৬। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি সপ্তাহের গোড়ায় ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে যে চাল, ডাল মজুত ছিল, তা পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়। উপভোক্তাদের অভিযোগ, নতুন করে চাল, ডাল সরবরাহ না হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রান্নাবান্না বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ওই দিন থেকেই ওই কেন্দ্রে শিশু ও প্রসূতিরা রান্না করা খাবার পাননি। শুক্রবার শিশু দিবসেও খাবারের জিনিস সরবরাহ না হওয়ায় রান্না বন্ধ ছিল। লেখাপড়া করে খালি পেটে বাড়ি ফিরে যায় শিশুরা।
অভিভাবক সুমিত্রা ঘোষ বলেন, “এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে রান্না করা যে খাবার দেওয়া হয়, তা শিশুদের একবেলার খাবারের চাহিদা মেটায়। কিন্তু চাল ও ডালের সরবরাহ নেই। এই কারণে গত চার দিন ধরে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রান্নাবান্না বন্ধ। এই অবস্থায় শিশুরা কেন্দ্রে এসে খালি পেটেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। প্রশাসনের আরও একটু তৎপর হওয়ার প্রয়োজন ছিল ।’’ স্থানীয় বাসিন্দা হরিপদ ঘোষ বলেন, “এই এলাকা কৃষি প্রধান। ধান কাটার মরসুম চলায় সকলেই শিশুদের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে পাঠিয়ে নিজেরা ধানের জমিতে চলে যান। শিশুরা কেন্দ্রে খাবার পেলে অভিভাবকেরাও নিশ্চিন্তে কাজ করতে যেতে পারেন। কিন্তু খাবার দেওয়া বন্ধ থাকায় সমস্যা বেড়েছে।’’
ঝরিয়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী চম্পা শীট বলেন, “কেন্দ্রে খাদ্য সামগ্রি সরবরাহ না থাকায় রান্নাবান্না করা যায়নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সরবরাহ স্বাভাবিক হলে এই কেন্দ্রেও তা পাঠানো হবে। কিন্তু কবে তা পৌঁছোবে, তা আমাদের জানা নেই।’’ বাঁকুড়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি অংশুমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সারা বাঁকুড়া জেলাতেই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে খাদ্যসামগ্রী সরবরাহে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তার ফলেই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। তবে শুক্রবার বাঁকুড়া-১ ব্লকের সমস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেই খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে যাবে। আশা করি শনিবার থেকে সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’’