কথা ছিল ১৫ অগস্ট, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সাঁইথিয়া গ্রামীণ হাসপাতাল চত্বরে সাফাই অভিযানে নামা হবে। কিন্তু, সিউড়ি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রকিবুল ইসলামের ডেঙ্গিতে মৃত্যু দেখে সে কর্মসূচি এগিয়ে আনল এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তৎপরতার ছবি দেখা গিয়েছে বোলপুরেও। সেখানে কাউন্সিলরদের স্প্রে মেশিন দেওয়া হয়েছে। সাফাই অভিযানে নেমেছে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালও।
শনিবার সকালে সাঁইথিয়ার ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শ’দেড়েক ছেলেমেয়েকে নিয়ে সাফাই অভিযানে নামে। সঙ্গে ছিল ঝাঁটা, ঝুড়ি, বেলচার মতো নানা জিনিস। সংস্থার সম্পাদক দীনেশ সিংহ, সভাপতি সুমিত রায় জানান, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের অনুমতি নিয়ে শুরু হয় অভিযান। চলে প্রায় ঘণ্টা চারেক। আবর্জনা সাফ করে, নোংরা জল সরিয়ে সেখানে দেওয়া হয় ব্লিচিং পাওডার, ফিনাইল ইত্যাদি। এমন কর্মসূচিতে উৎসাহ দিতে উপস্থিত ছিলেন পুরপ্রধান বিপ্লব দত্ত-সহ অনেকেই। এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন রোগী বা তার পরিজনেরা। বিএমওএইচ আশিস চন্দ্র জানান, কর্মীর অভাবে হাসপাতাল চত্বর ঠিক মতো পরিস্কার রাখা যায় না। বাউন্ডারি ওয়াল না থাকায় সমস্যা আরও বাড়ে। এমন উদ্যোগকে তিনি স্বাগত জানিয়েছেন। প্রশংসা করেছেন জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আরিও। এ দিনের কর্মসূচি শেষে রোগীদের মধ্যে ফল-মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
ঘটনা হল, শুধু সাঁইথিয়ার এই হাসপাতাল নয় জেলার অন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বাসস্ট্যান্ড অন্য প্রশাসনিক ভবনের আশাপাশের হালও এমনই। বহু জায়গাতেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় আবর্জনা। ইতিউতি জমে থাকে জল। তাতে বাড়বাড়ন্ত হয় মশার। সিউড়ি পুরসভা মশার বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে দেরিতে হলেও উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে। তৎপরতার ছবি দেখা গিয়েছে বোলপুরেও।
বোলপুরের পুরপ্রধান সুশান্ত ভকত জানান, কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। মশা নিধনের জন্য বিশেষ স্প্রে মেশিন দেওয়া হয়েছে। আজ, সোমবার পুর কর্তৃপক্ষ বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপারের সঙ্গে বৈঠকেও বসছে। রবিবার বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে পুরুষ, মহিলা এবং শিশু ও প্রসূতি ওয়ার্ড, ইনডোর, আউটডোর এলাকা এবং সংলগ্ন জলা-জঙ্গল সাফাই অভিযান শুরু হয়। নালা-নর্দমায় ব্লিচিং দেওয়া হয়।
কী কী সতর্কতা নিতে হবে, তা-ও জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। নিয়মিত মশারির ব্যবহার, বাড়ি ও বাইরের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা, জল জমতে না দেওয়া, ফি সপ্তাহে এয়ার কুলার, ফ্রিজ, জলের ট্যাঙ্ক পরিস্কার রাখার কথা বলা হচ্ছে। সাঁইথিয়ার বিএমওএইচ আশিস চন্দ্র বলেন, ‘‘জ্বর হলেই চিকিৎসককে দেখানো, ডেঙ্গুর রক্ত পরীক্ষা-সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।’’