রামপুরহাট পুরসভার উন্নয়ন সংক্রান্ত কোনও সিদ্ধান্ত আর একক ভাবে পুরপ্রধান নিতে পারবেন না। পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারি ছাড়াও আরও চার জনের কমিটি মিলিত ভাবে উন্নয়ন সহ যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে। ওই কমিটিতে রয়েছেন মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, দু’জন কাউন্সিলর (আব্বাস হোসেন ও পারমিতা রায় চক্রবর্তী) এবং দলের শহর কার্যকারী সভাপতি সৌমেন ভকত। সৌমেনবাবুকে এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে।
শনিবার তারাপীঠে সভা ছিল জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের। সভা শেষে তারাপীঠ-রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের অফিসে রামপুরহাটের তৃণমূলের ১৬ জন কাউন্সিলরকে নিয়ে বসে এই সিদ্ধান্ত নেন অনুব্রত। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দুই মন্ত্রী সহ জেলাস্তরের নেতারা। তবে কমিটি গঠনের এমন রেওয়াজ এই প্রথম নয়। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে হাওড়া পুরসভায় প্রশাসকের মাথায় কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন। নিয়মিত জঞ্জাল
সাফাই হয় না দেখেই ক্ষোভে এমনটা জানিয়েছিলেন।
কেন কমিটি?
তৃণমূল সূত্রেই খবর, কাউন্সিলরদের সঙ্গে পুরপ্রধানের দূরত্ব দিন দিন বাড়ছিল। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিল যে, দলের ১৪ দিন কাউন্সিলর দীর্ঘ দিন পুরসভায় আসতেন না বলেও খবর। কিছু দিন আগে আবার পুরসভার নানা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিল সিপিএম। সব মিলিয়ে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছিল বলেই জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের মত। সেই কমিটি গঠনের ভাবনা বলে খবর।
কমিটি গঠনের কথা মেনে নিয়েছেন পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারি। অশ্বিনীবাবু বলছেন, ‘‘দলীয় কাউন্সিলররা জেলা সভাপতির কাছে কিছু আর্জি জানিয়েছিলেন। সেই মতো একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। যত দিন এই পদে আছি দলের নির্দেশ মেনে কাজ করব।’’ কমিটির সদস্য তথা মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরসভার উন্নয়নের নানা কাজ তারান্বিত করতেই কমিটি
গঠন করা হয়েছে।’’
রামপুরহাট পুরসভায় ১৮ জন সদস্য রয়েছেন। তার মধ্যে বিজেপির চার, সিপিএমের দুই, কংগ্রেসের দুই সদস্য ছিলেন। বাকি সব আসনে তৃণমূল জিতেছিল। বর্তমানে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপির শুভাশিস চৌধুরী এবং ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সঞ্জীব মল্লিক বাদে সকলে তৃণমূলে যোগদান করেছে। এ দিকে, অন্তত মাসখানেক ধরে পুরপ্রধান অশ্বিনী তেওয়ারির কাজকর্ম নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন দলেরই ১৪ জন কাউন্সিলার। এক সময় তাঁরা পুরসভায় যাওয়া বন্ধ করে দেন। এর পরেই বৈঠকে বসেন অনুব্রত। সেখানে চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন একক সিদ্ধান্তে কোনও কাজ করা যাবে না। এর পরেই পাঁচ জনের কমিটি গঠন করে দেন।
সিপিএমের কাউন্সিলর সঞ্জীব মল্লিকের অবশ্য কটাক্ষ, ‘‘এই কমিটি মূলত টাকা ভাগের কমিটি। টাকা ভাগ নিয়ে সমস্যা ছিল শাসক দলের কাউন্সিলরদের। তাই তাঁরা পুরসভায় আসা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এ বার সব মিটে যাবে।’’