পুরপ্রধান নির্বাচন ঘিরে নাটক

পুরপ্রধান নির্বাচন নিয়ে ভোটাভুটি এড়ানো গেলেও পুরসভার অন্দরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চাপা থাকল না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৭ ০১:৩২
Share:

পুরপ্রধান নির্বাচন নিয়ে ভোটাভুটি এড়ানো গেলেও পুরসভার অন্দরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চাপা থাকল না।

Advertisement

পুরুলিয়ার তৃণমূল পুরপ্রধান কে পি সিংহ দেওয়ের মৃত্যুর পরে (১১ মার্চ) সোমবার পুরপ্রধান গঠনের জন্য বিশেষ সভা তলব করেছিলেন উপপুরপ্রধান সামিমদাদ খান। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে পুরপ্রধান হিসেবে সামিমদাদ খানের নাম প্রস্তাবিত হওয়ায়, ওই পদে কে বসবেন তা নিয়ে জল্পনা শেষ হল।

তবে নির্বাচন ঘিরে একপ্রস্থ নাটকও হয় পুরসভার গাঁধি হলে, পুরপ্রধান নির্বাচনের সভায়। উপপুরপ্রধান পদে পদত্যাগ করেন সামিমদাদ। চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল বৈদ্যনাথ মণ্ডল সভাপতি হিসেবে বিভাস দাসের নাম প্রস্তাব দেন। তিনি পুরপ্রধান হিসেবে সামিমদাদের নাম প্রস্তাব করেন। সেই নাম সমর্থন করেন পুরসভার দলনেত্রী ময়ূরী নন্দী।

Advertisement

এ পর্যন্ত মসৃন ভাবে সবকিছু চললেও, তাল কাটে ২০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় নিজের নাম পুরপ্রধান হিসেবে প্রস্তাব করায়। মহকুমাশাসক (সদর) সন্দীপ টুডু তখন নিয়ম অনুযায়ী দেবাশিসবাবুর হয়ে কে প্রস্তাবক, তা জানতে চান। কিন্তু কেউই এগিয়ে আসেননি। এরপরে দেবাশিসবাবু সভা বয়কট করেন।

কেন সভা বয়কট করলেন? দেবাশিসবাবুর বক্তব্য, ‘‘আমি পুরপ্রধান হিসেবে লড়তে চেয়েছিলাম। কিন্তু কোনও প্রস্তাবক বা সমর্থক না থাকায় লড়তে পারলাম না। পুরপ্রধান হিসেবে আমি সামিমদাদ খানকে সমর্থন করি না বলেই ওই সভায় থাকিনি।’’ তবে দলের একটি অংশ মনে করছেন, বৈদ্যনাথবাবুকে কাউন্সিলরদের একাংশ পুরপ্রধান হিসেবে চাইছিলেন। সেই পক্ষের হয়ে দেবাশিসবাবু নিজের নাম ঘোষণা করে সামিদদাদের বিক্ষুদ্ধ গোষ্ঠীর সমর্থন পাবেন বলে আশা করেছিলেন। কিন্তু কেউ এগিয়ে না আশায় হতাশ হয়ে সভা বয়কট করেন। দেবাশিসবাবু অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।

দল সূত্রে জানা গিয়েছে, কাউন্সিলরদের পক্ষ থেকে সামিমদাদ খান ও বৈদ্যনাথ মণ্ডলের নাম উঠে এসেছিল। তাই দলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো এই দু’টি নামই রাজ্য নেতৃত্বের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছিলেন। রাজ্য নেতৃত্ব মুখবন্দি খামে সামিমদাদ খানের নামই জেলা সভাপতির কাছে পাঠায়।

দলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দলের জেলা পর্যবেক্ষক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপ্ত সহায়ক বৈদ্যনাথ মণ্ডলকে ফোন করে তাঁর মতামত জানতে চেয়েছিলেন। তবে বৈদ্যনাথবাবু ওই পদের দায়িত্ব নিতে আগ্রহী নয় বলে জানিয়ে দেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানানো হয়েছে, খানিকটা প্রচারের আলোর বাইরে থেকে রাজনীতি করতে অভ্যস্ত বৈদ্যনাথবাবু। নিজের স্বভাবসিদ্ধ রাজনীতির কারণেই এই দায়িত্ব নিতে চাইলেন না তিনি।

পুরুলিয়ার ২৮তম পুরপ্রধানের দায়িত্ব নিয়ে সামিমদাদ বলেন, ‘‘শহরের সাফাই বিভাগের সমস্যা মিটিয়ে পরিচ্ছন্ন শহর উপহার দেওয়াই লক্ষ। পানীয় জলেরও সঙ্কটও রয়েছে। এই সমস্যাগুলি কাটাতে আমরা গুরুত্ব দেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন