ভিড়: রামপুরহাটের ফ্রি কোচিং সেন্টারে ভিড়। নিজস্ব চিত্র
শুরুতে ২ জন। পরের বছরে ৬ জন। তার পরের বছর ৭ জন। — এই পরিসংখ্যান রামপুরহাটের একটি ফ্রি কোচিং সেন্টারের ছাত্রদের কর্মসংস্থানের। যার উদ্যোক্তা জেলা পুলিশ-প্রশাসন। তাঁদের উদ্যোগেই ২০১৪ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিনা মূল্যে কোচিং নিয়ে ১৫ জন যুবক যুবতী সরকারি চাকরি পেয়েছেন। তিন বছর বয়সে প্রতিষ্ঠানের এমন ধারাবাহিক সাফল্যে জেলা পুলিশসুপার থেকে জেলাশাসক, মহকুমাশাসক থেকে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক, মন্ত্রী থেকে পুরসভার পুরপ্রধান— খুশি সকলেই।
প্রতিষ্ঠানের সাফল্য ঘিরে মঙ্গলবার দুপুরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জড়ো হয়েছিলেন জেলা পুলিশসুপার, মন্ত্রী, মহকুমাশাসক, মহকুমা পুলিশ আধিকারিকরা। রামপুরহাট মহকুমা পুলিশসুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘‘এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায়দের মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ বৃদ্ধি করা, তাঁদেরকে সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনা এবং প্রতিযোগিতার মূলক পরীক্ষায় আদিবাসী যুবকযুবতীদের বসার মতো প্রশিক্ষণ দেওয়ার এই উদ্যোগ প্রথম শুরু করেন আইপিএস কোটেশ্বর রাও।’’
তিনি জানান, রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক থাকাকালীন কোটেশ্বর রাও ২০১৪ সালের ১৪ জুন রামপুরহাট পুরসভার শ্রীফলা এলাকার পুলিশ ব্যরাকের একটি ঘর সংস্কার করে চালু করেছিলেন পুলিশ আদিবাসী এবং সাধারণ ফ্রি কোচিং সেন্টারের।
সেই সময় এসডিপিও-র ওই উদ্যোগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তৎকালীন বীরভুম জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া এবং মন্ত্রী আশিস বন্দ্যপাধ্যায় সহ রামপুরহাট থানার আইসি হিরন্ময় হোড়। রামপুরহাট সার্কেল ইন্সপেক্টর দেবীদয়াল কুন্ডু এবং কয়েকজন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব। সেই সময় ৮০ জন ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে বিনামূল্যে কোচিং শুরু হয়। তৃতীয় বর্ষে ৫০ জন ছাত্রছাত্রী এসডিপিও কমল দাস বৈরাগ্যের সময়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে ৭ জন জুনিয়র কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়েছেন। মঙ্গলবার সেই ৭ জনকেই সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
সংবর্ধনা প্রাপকদের তালিকায় থাকা রামপুরহাট নিশ্চিন্তপুর এলাকার বাসিন্দা জোসাই সোরেন, কেষ্ট সোরেনরা জানালেন, ‘‘এখানে না এলে পরীক্ষার প্রশ্ন পত্রের ধরণ কেমন হয় বা ইংরেজি, অঙ্ক, সাধারণ জ্ঞান এই সমস্ত বিষয়গুলির উন্নতি করতে পারতাম না।’’
কোচিং সেন্টারের সাফল্যের খুশি জেলা পুলিশ সুপার নীলকান্তম সুধীর কুমার বলেন, ‘‘এই সাফল্য উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাক এই কামনা করি।’’
মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, রামপুরহাট মহকুমাশাসক সুপ্রিয় দাস জানান, এই কোচিং সেন্টারের সঙ্গে বিনামূল্যে ডব্লুবিসিএস কোচিং সেন্টারের যোগসূত্র রাখাও হবে। এতে অন্যান্য প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষায় বসার জন্য কোচিং পাবে বলে তাঁরা আশা প্রকাশ করেন।