রিপোর্ট অসম্পূর্ণ, বন্ধ নির্মাণ 

জঙ্গলমহলের মেয়েদের ফুটবল চর্চায় উৎসাহ দিতে রাজ্য সরকার পুরুলিয়ার কাশীপুরে মহিলা ফুটবল অ্যাকাডেমি গড়তে উদ্যোগী হয়। ২০১৫ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলার প্রশাসনিক সভা থেকে কাজের সূচনা করেন।

Advertisement

প্রশান্ত পাল

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৮ ০৭:১০
Share:

কাশীপুরে ফুটবল অ্যাকাডেমির কাজ দেখছেন বিধায়ক। নিজস্ব চিত্র

অসম্পূর্ণ প্রকল্প রিপোর্টের জন্য বরাদ্দ আটকে গিয়েছে কাশীপুরে নির্মীয়মাণ মহিলা ফুটবল অ্যাকাডেমির। আপাতত কাজ বন্ধ। কিছু দিন আগে রাজ্য ক্রীড়া দফতরের প্রধান সচিব এবং পদস্থ কর্তারা সরজমিন পরিদর্শন করেছেন। প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, সমস্ত দেখেশুনে তাঁরা বিশেষ সন্তুষ্ট নন।

Advertisement

জঙ্গলমহলের মেয়েদের ফুটবল চর্চায় উৎসাহ দিতে রাজ্য সরকার পুরুলিয়ার কাশীপুরে মহিলা ফুটবল অ্যাকাডেমি গড়তে উদ্যোগী হয়। ২০১৫ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলার প্রশাসনিক সভা থেকে কাজের সূচনা করেন। দ্রুত কাশীপুরের উপকণ্ঠে ছাতামাড়া এলাকায় ৫ একর জমি দরকার ছিল। খাস জমি পাওয়া গিয়েছিল সাড়ে ৩ একর। বাকিটা কিনে প্রশাসনকে হস্তান্তর করেন বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া। তার পরেই কাজ শুরু হয়।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা পড়ার পরে ক্রীড়া দফতরের প্রধান সচিব সৈয়দ আহমেদ বাবা এবং দফতরের পদস্থ কর্তারা সরজমিন পরিদর্শনে এসেছিলেন। তখন তাঁরা পুরো প্রকল্পের বিস্তারিত রিপোর্ট দেখতে চান। পাননি। প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, কাজ শুরুর সময় থেকেই পুরো প্রকল্পের বিস্তারিত রিপোর্ট ছিল না। সেটি দ্রুত তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছেন কর্তারা।

Advertisement

অ্যাকাডেমি মানে, সেখানে থাকবে অনুশীলনের মাঠ, খেলোয়াড়দের ক্লাসঘর, জিম, আবাসন, মেডিক্যাল ইউনিট ইত্যাদি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরো কাজের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল ৬ কোটি টাকা। ২০১৫ সালে প্রথম দফার ২ কোটি টাকা মেলে। শুরুর সময়ে প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্বে ছিল জেলা পরিষদ। কাশীপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদ্য প্রাক্তন সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘পুরো কাজটার বিস্তারিত প্রোজেক্ট রিপোর্ট আমরা হাতে পাইনি।’’

কেন? জেলা পরিষদের চিফ ইঞ্জিনিয়ার কান্তি বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, জেলা পরিষদ দু’কোটি টাকার বেশি কাজের প্রোজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করাতে পারে না। যা বরাদ্দ মিলেছিল, সেই মতো বিস্তারিত প্রোজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছিল। বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘কাজ শুরুর সময়ে যে দু’কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছিল, সেটা দিয়ে পাঁচিল আর দু’টি গ্যালারি হয়েছে। এক কোটি টাকার ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট ছ’মাস আগে জমা পড়েছে। বাকি এক কোটি টাকার ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা প়ড়েছে মাস দুয়েক আগে।’’ তার পরেই পরিদর্শনে আসেন কর্তারা।

অতঃকিম?

জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘ক্রীড়া দফতরের প্রধান সচিব সম্পূর্ণ প্রকল্পের রিপোর্ট তৈরি করতে বলেছেন। পূর্ত দফতরকে সেটা করতে হলা হয়েছে।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, পূর্ত দফতর অ্যাকাডেমি পরিদর্শন করে ফেলেছে। তবে দফতরের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

সম্প্রতি অনূর্ধ্ব ১৯ বাংলা দলের হয়ে গোয়ায় জাতীয় ফুটবলে প্রতিনিধিত্ব করছেন জয়পুরের শীলা বাগদি। তিনি বলেন, ‘‘জেলায় অ্যাকাডেমি গড়ে উঠলে ভাল প্রশিক্ষকের কাছে অনুশীলনের সুযোগ পেতাম।’’

জয়পুর জেলা কন্যাশ্রী ফুটবলেও দু’বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। জেলা পুলিশ আয়োজিত জঙ্গলমহল কাপ ফুটবলেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ওই দলের সদস্য রীনা মাহাতো, সোমা বাগদি, উষা বাগদিদের কথায়, ‘‘আমরা চাই তাড়াতাড়ি অ্যাকাডেমি গড়ে উঠুক। তাহলে আমাদের মতো অনেকে অনুশীলনের সুযোগ পাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন