Coronavirus

‘ওয়ার রুম’ সামলাচ্ছেন এই ডাক্তার-আমলা

রাজ্যে প্রথম যখন করোনা আক্রান্তের সন্ধান মেলে, তার পরেই জেলার বিভিন্ন ব্লকে স্বনির্ভর দলের মহিলারা ‘স্যানিটাইজ়ার’ ও ‘মাস্ক’ তৈরি শুরু করে দিয়েছিলেন। জেলাশাসক জানান, সেই পরিকল্পনা মূলত আকাঙ্ক্ষাদেবীর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথপুর ও পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২০ ০৩:৩৯
Share:

আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর। নিজস্ব চিত্র

তিনি একাধারে চিকিৎসক এবং প্রশাসক। করোনা-মোকাবিলায় দ্বৈত ভূমিকায় পুরুলিয়াকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর। জেলাশাসক রাহুল মজুমদারের কথায়, ‘‘করোনার সংক্রমণের কথা প্রথম যখন সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে, তখনই আকাঙ্ক্ষা বলেছিলেন, আমাদের প্রস্তুত থাকাটা দরকার। তিনি নিজে চিকিৎসক হওয়ার সুবাদে আমাদের নানা কাজে সুবিধা হচ্ছে।’’

Advertisement

রাজ্যে প্রথম যখন করোনা আক্রান্তের সন্ধান মেলে, তার পরেই জেলার বিভিন্ন ব্লকে স্বনির্ভর দলের মহিলারা ‘স্যানিটাইজ়ার’ ও ‘মাস্ক’ তৈরি শুরু করে দিয়েছিলেন। জেলাশাসক জানান, সেই পরিকল্পনা মূলত আকাঙ্ক্ষাদেবীর। এখন সেগুলি দিয়েই চাহিদা মিটছে পুরুলিয়ার আশাকর্মী, পুলিশ এবং প্রশাসনের লোকজনের।

আদতে আকাঙ্ক্ষাদেবী উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। বয়স তিরিশ ছুঁইছুঁই। এমবিবিএস পাশ করেছেন কলকাতার আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ থেকে। তার পরে প্রথম বারেই সাফল্য আইএএস পরীক্ষায়। গোড়ায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের একটি পদে ছিলেন। সেখান থেকে মহকুমাশাসক হয়ে আসেন রঘুনাথপুরে। পদোন্নতির পরে মার্চে পুরুলিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) হিসাবে কাজে যোগ দেন। আর তার পরেই শুরু হয় করোনার প্রাদুর্ভাব।

Advertisement

মূলত পঞ্চায়েতগুলির মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের উন্নয়নমূলক কাজকর্মের দেখভাল করাই তাঁর কাজ। নিজের দফতরের কাজের পাশাপাশি জেলাশাসকের নির্দেশে করোনার প্রশাসনিক ‘ওয়ার রুম’ সামলাচ্ছেন আকাঙ্ক্ষাদেবী।

প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘কাজটা মোটেও সহজ নয়। আশাকর্মী, সিভিক ভলান্টিয়ার, গ্রামীণসম্পদ কর্মীদের মাধ্যমে নিয়মিত হোম কোয়রান্টিন থাকা লোকজনের সম্পর্কে বিশদে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ দক্ষতার সঙ্গেই করে চলেছেন ম্যাডাম।”

পুরুলিয়া জেলায় নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কোনও খবর এখনও পর্যন্ত নেই। তবে, সংক্রমণ কোনও ভাবে বেশি ছড়ালে কী ভাবে মোকাবিলা হবে, তারই নকল মহড়ার প্রস্তুতিতে এখন ব্যস্ত রয়েছেন নবীন আমলা আকাঙ্ক্ষা।

আকাঙ্ক্ষার নিজের কথায়, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরই দক্ষতার সঙ্গে কাজটা করে চলেছে। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমন্বয় রেখে চলেছি। জেলাশাসকের নেতৃত্বে আমরা সবাই মিলে একটা ‘টিম’ হিসাবে কাজ করছি। এখনও সামনে আরও অনেক কাজ পড়ে।’’

পুরুলিয়ার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গুরুদাস পাত্র আকাঙ্ক্ষার কাজ প্রসঙ্গে বলছেন, ‘‘সমন্বয়ের কাজটা দক্ষতার সঙ্গে করে যাচ্ছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক। নিজে এক জন ডাক্তার হওয়ায় স্বাস্থ্য দফতরের বাড়তি সুবিধা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন