Coronavirus in West Bengal

পুরুলিয়ায় হবে পৃথক হাসপাতাল

পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার জানান, ‘স্পেশাল কোভিড হাসপাতাল’ গড়ার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালকে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২০ ০২:৫৮
Share:

পুরুলিয়া শহরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ঢোকার মুখে গ্রাহকদের হাতে দেওয়া হচ্ছে ‘স্যানিটাইজ়ার’। ছবি: সুজিত মাহাতো

পুরুলিয়ায় ‘হোম কোয়রান্টিন’-এর সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়ানোয় করোনা মোকাবিলায় এ বার পৃথক হাসপাতাল গড়ার সিদ্ধান্ত নিল জেলা প্রশাসন। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সের পরে, এই মর্মে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ যাঁদের ১৪ দিন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা, তাঁদের কেউ কেউ তা মানছেন না বলে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের কাছে খবর আসছে। তেমন কাউকে বাইরে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেলে, এ বার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ‘কমিউনিটি কোয়রান্টিন’-এ রাখা হবে বলেও প্রশাসন ঠিক করেছে।

Advertisement

পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার জানান, ‘স্পেশাল কোভিড হাসপাতাল’ গড়ার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালকে। পাশাপাশি, রঘুনাথপুরেও একই ভাবে একটি পৃথক ‘কোভিড হাসপাতাল’ গড়ে তোলা হবে। সেটির জন্য পাড়া বা সাঁতুড়ির রামচন্দ্রপুরের দু’টি বেসরকারি চক্ষু হাসপাতালের কথা প্রশাসনের ভাবনায় রয়েছে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘সবগুলিই ১ এপ্রিলের মধ্যে ঠিক করে ফেলব।’’

পুরুলিয়ার বিভিন্ন ব্লকের প্রচুর মানুষ কাজের সূত্রে অন্য রাজ্যে থাকেন। তাঁদের অনেকেই জেলায় ফিরছেন। তার পরে রাখা হচ্ছে ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ। প্রশাসন সূত্রের খবর, তেমন লোকজনের সংখ্যা সোমবার দাঁড়ায় ১৬,১৮৭-এ। এই সমস্ত লোকজন স্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শ মানছেন কি না তা আশাকর্মী ও এএনএম-রা নজরে রাখছিলেন। পাশাপাশি, ব্লকে ব্লকে ‘কুইক রেসপন্স টিম’ গড়া হয়েছে। নজর রাখবেন তাঁরাও। জেলাশাসক জানান, সব ব্লকে ‘কমিউনিটি কোয়রান্টিন’ গড়া হয়েছে। ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকা কেউ বাইরে ঘুরে বেড়ালে, তাঁকে সেখানে রাখা হবে।

Advertisement

অন্য দিকে, বাঁকুড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত সন্দেহে কাউকে ‘আইসোলেশন ওয়ার্ড’-এ ভর্তি করা হয়নি। সরকারি ‘কোয়রান্টিন সেন্টার’-এও রাখা হয়নি কাউকে। তবে ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ রয়েছেন প্রায় দু’হাজার মানুষ। বাঁকুড়ার জেলাশাসক এস অরুণপ্রসাদ বলেন, “করোনা-আক্রান্ত রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা চালু করতে আমরা প্রস্তুতি সেরে রেখেছি। গোটা জেলার সার্বিক পরিস্থিতির উপরে প্রশাসনের নজর রয়েছে।”

সপ্তাহখানেক আগেই বড়জোড়ার একটি কারখানায় এসেছিলেন শেওড়াফুলির করোনা-আক্রান্ত প্রৌঢ়। তাঁর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। বড়জোড়ার ওই কারখানা জীবাণুমুক্ত করতে ‘স্প্রে’ করানো হয় বড়জোড়া ব্লক দফতরের উদ্যোগে। বড়জোড়ার ওই ইস্পাত কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনা-আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত হওয়া শেওড়াফুলির প্রৌঢ় গত ১৩ মার্চ ওই কারখানায় এসেছিলেন। কারখানার জেনারেল ম্যানেজার অশোক সিহ জানান, মেরেকেটে দশ মিনিট ছিলেন তিনি। তাঁর সংস্পর্শে আসা পাঁচ জন ব্যক্তির নাম ও তথ্য ব্লক স্বাস্থ্য দফতর ও পুলিশের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।

বড়জোড়া ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক এসএন প্রধান বলেন, “আক্রান্ত প্রৌঢ়ের সংস্পর্শে আসা পাঁচ ব্যক্তির সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। তাঁদের মধ্যে করোনা আক্রান্তের কোনও উপসর্গ নেই। তা-ও ঝুঁকি এড়াতে ১৪ দিন তাঁদের হোম কোয়রান্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন