Coronavirus

কুপন পৌঁছে দেওয়ার তোড়জোড়

সরকার এই পরিস্থিতিতে বিশেষ রেশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। কিন্তু তা তুলবেন কী করে, তা নিয়ে ধন্দে অক্ষয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া ও ইন্দাস শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৩৩
Share:

সাবধানবাণী: বাড়ির বাইরে বেরনো রুখতে স্থানীয় কিছু লোকজন পথেই লিখেছেন সচেতনতার বার্তা। বিষ্ণুপুরের মাধবগঞ্জে শনিবার। ছবি: শুভ্র মিত্র

অক্ষয় মাহাতো। পুরুলিয়ার কাশীপুরের রাঙামাটি-রঞ্জনডি পঞ্চায়েতের টাড়া গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় গাড়িচালক। রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করেছিলেন। কার্ড আসার আগেই শুরু হয়েছে ‘লকডাউন’।

Advertisement

সরকার এই পরিস্থিতিতে বিশেষ রেশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। কিন্তু তা তুলবেন কী করে, তা নিয়ে ধন্দে অক্ষয়। তাঁরই মতো বাঁকুড়ার ইন্দাসের কড়িশুণ্ডা পঞ্চায়েত এলাকার কিছু গ্রাহক শনিবার রেশন ডিলারের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। দুই জেলার প্রশাসনই জানিয়েছে, যে সমস্ত গ্রাহকদের রেশন কার্ড নেই তাঁদের জন্য কুপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দ্রুত সেগুলি পৌঁছে দেওয়া হবে।

পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, জেলায় কার্ডছাড়া গ্রাহক রয়েছেন প্রায় দু’লক্ষ। কারও কার্ড এখনও এসে পৌঁছয়নি। কেউ কার্ড পেয়ে দেখেছেন কোনও ভুল রয়ে গিয়েছে। সংশোধনের আবেদন করেছেন। বাঁকুড়া জেলায় এমন গ্রাহকের নির্দিষ্ট সংখ্যা জানা যায়নি। তবে প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, জেলার জঙ্গলমহলের চারটি ব্লকেই কার্ডহীন প্রায় ১৯ হাজার গ্রাহককে চিহ্নিত করা হয়েছে।

Advertisement

পুরুলিয়া জেলার খাদ্য নিয়ামক শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কার্ড তৈরির কাজ চলছিল। তার মধ্যে লকডাউন ঘোষণা হয়ে গেল। যাঁদের কার্ড নেই, তাঁদের কাছে কুপন পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, বিডিওরা ইতিমধ্যেই বৈঠক করে নতুন কার্ড বা সংশোধনের আবেদনকারীদের তালিকা পাঠিয়ে দিয়েছেন পঞ্চায়েতগুলিতে। পঞ্চায়েতে চলছে কুপন লেখার কাজ।

জানা গিয়েছে, কুপনে গ্রাহক বা উপভোক্তার নাম, রেশনকার্ডের নম্বর, যে রেশন দোকান থেকে খাদ্যপণ্য নেবেন— তা লেখা থাকছে। রাজ্য সরকার এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিশেষ রেশন দেবে। কুপনে লেখা থাকছে, গ্রাহক কোন তালিকাভুক্ত। যা দেখলে স্পষ্ট হয়ে যাবে, এখন তিনি কতটা রেশন পাবেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ছ’মাসের জন্য আলাদা আলাদা খোপ করা থাকছে কুপনগুলিতে।

পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার জানান, আগামী দু’-তিন দিনের মধ্যেই কুপনগুলি গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। ১০ এপ্রিল থেকেই পুরুলিয়ায় গ্রাহকেরা কুপন নিয়ে রেশন তুলতে পারবেন বলে প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে। বাঁকুড়ার জেলাশাসক এস অরুণপ্রসাদও আশ্বাস দিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব গ্রাহকদের কাছে কুপন পৌঁছে দেওয়ার।

রেশন নিয়ে অবশ্য এ দিন বড় কোনও গোলমালের খবর মেলেনি। ‘পশ্চিমবঙ্গ এমআর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক গুরুপদ ধক বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত যা রেশন ছিল, প্রায় সব বিলি হয়ে গিয়েছে। বাকি রেশন শীঘ্রই আসবে।’’ তবে বিষ্ণুপুর শহরের কিছু দোকানে আটার জোগান কম বলে অভিযোগ শোনা গিয়েছে। অন্য দিকে, বড়জোড়ায় পাড়া ধরে রেশন নেওয়ার সময় ভাগ করে দেওয়ায় ভিড় নিয়ন্ত্রণে অনেকটা সুবিধা হয়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় মানুষজন। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ফেয়ার প্রাইস শপ এমআর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন মাহাতো বলেন, ‘‘বেশিরভাগ গ্রাহক ইতিমধ্যেই রেশন তুলে নিয়েছেন। এ দিন সব জায়গায় সুষ্ঠু ভাবে গ্রাহকেরা রেশন তুলেছেন বলে খবর পেয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন