রেশন দোকানে বিস্তর বেনিয়মের অভিযোগ পেয়ে সরেজমিন তদন্তে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেল জেলা খাদ্য দফতর। অভিযোগের সারবত্তা পেয়ে দুই রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করল জেলা খাদ্য দফতর। পুরুলিয়ার জেলা খাদ্য নিয়ামক লতিফউদ্দিন শেখ বলেন, ‘‘পুরুলিয়া ২ ব্লকের শিহলী এবং দুমদুমির চুনারডি টোলার দুই রেশন ডিলার জান মহম্মদ ও ধনঞ্জয় মাহাতোর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই দুই রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং তদন্তে অভিযোগের কিছু সত্যতাও মিলেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
শিহলী গ্রামের রেশন ডিলার জান মহম্মদের বিরুদ্ধে বিধিমতো সপ্তাহে চারদিন দোকান না খোলা, দোকানে মজুত রেশন সামগ্রীর তালিকা না রাখা, এমনকী ওজনে কম সামগ্রী দেওয়ার মতো অভিযোগ উঠেছিল। প্রায় একই অভিযোগ উঠেছে চুনারডি টোলার অপর রেশন ডিলার ধনঞ্জয় মাহাতোর বিরুদ্ধে। সম্প্রতি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পরে রবিবার দু’টি গ্রামে গিয়েছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো এবং জেলা খাদ্য নিয়ামক। সৃষ্টিধরবাবু জানান, আগে ওই দুই গ্রামের রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁর কাছে প্রথমে মৌখিক ও পরে লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। সেই মতো দুই রেশন ডিলারকে সর্তক করা হয়েছিল বলে দাবি সৃষ্টিধরবাবুর। সভাধিপতি বলেন, ‘‘দুই রেশন ডিলারকে সর্তক করার পরেও তাঁদের বিরুদ্ধে বিধিমতো রেশন সামগ্রী না দেওয়ার অভিযোগ ফের জানিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। তারই প্রেক্ষিতে রবিবার দু’টি গ্রামে তদন্তে গিয়েছিলাম আমরা।’’
নিয়ম মতো সপ্তাহে মঙ্গল থেকে শনিবার পর্যন্ত পুরোদিন ও রবিবার অর্ধদিবস রেশন দোকান খোলা থাকার কথা। জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার তদন্তে গিয়ে দেখা গিয়েছিল, দু’টি গ্রামেরই দোকান বন্ধ রয়েছে। সৃষ্টিধরবাবু বলেন, ‘‘রবিবার সকালের দিকে দোকান খোলা রাখা উচিৎ। কিন্তু দেখা গিয়েছিল, দু’টি দোকানই বন্ধ রয়েছে।’’ এ ছাড়াও শিহলী গ্রামের বাসিন্দারা সভাধিপতি ও জেলা খাদ্য নিয়ামককে জানিয়েছেন, এখানে দিনের বেলা দোকান খোলা থাকলেও রেশন সামগ্রী পান না তাঁরা। রাতের দিকে দোকান থেকে রেশন সামগ্রী দেন সংশ্লিষ্ট ডিলার। সভাধিপতি বলেন, ‘‘অভিযোগের প্রেক্ষিতে গ্রাম দু’টিতে তদন্তে গিয়ে বেশ কিছু বেনিয়ম দেখার পরে জেলা খাদ্য নিয়ামককে তদন্তের জন্য বলেছিলাম।’’
এ দিন চেষ্টা করেও অভিযুক্ত দুই রেশন ডিলারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে পশ্চিমবঙ্গ এমআর ডিলার অ্যাসোসিয়শনের পুরুলিয়া জেলা শাখার অন্যতম কর্মকর্তা নিরঞ্জন মাহাতো বলেন, ‘‘আমরা সংগঠনগতভাবে সমস্ত সদস্যদেরই বিধিমতো দোকান খোলা রেখে গ্রাহকদের রেশন সামগ্রী দেওয়ার বিষয়ে বরাবরই বলে থাকি। পুরুলিয়া ২ ব্লকের দু’টি গ্রামের রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা খাদ্য দফতর তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে থাকলে আমাদের কিছু বলার নেই।’’