নেই জলাতঙ্কের টিকা

পুরুলিয়ার জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত বলেন, ‘‘রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের ভাঁড়ারেই এআরভি নেই। সারা রাজ্যজুড়েই এই সমস্যা। পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে এআরভি পাওয়া যাচ্ছে না।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

বাঘমুণ্ডি শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০৭:০০
Share:

বাবার কোলে মহেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র

কুকুরে কামড়ানোর প্রতিষেধক ইঞ্জেকশন এআরভি (অ্যান্টি র‌্যাবিস ভ্যাকসিন) মিলছে না পুরুলিয়া জেলার সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে। হঠাৎ ওই প্রতিষেধকের জোগান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন মানুষজন। প্রতিষেধকের কোর্স চলতে চলতে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কুকুরে কামড়ানো মানুষজন আতঙ্কে রয়েছেন।

Advertisement

পুরুলিয়ার জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত বলেন, ‘‘রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের ভাঁড়ারেই এআরভি নেই। সারা রাজ্যজুড়েই এই সমস্যা। পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে এআরভি পাওয়া যাচ্ছে না।’’

১৮ ডিসেম্বর বাঘমুণ্ডির চিটাহি গ্রামের বাসিন্দা উত্তম কৈবর্তর বছর পাঁচেকের ছেলে মহেন্দ্রকে কুকুরে কামড়ায়। তারপর থেকে ছেলেকে নিয়মিত স্থানীয় পাথরডি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এআরভি ইঞ্জেকশন নেওয়াতে আনছেন উত্তমবাবু। তিনি বলেন, ‘‘বুধবার চিকিৎসক ছেলেকে চতুর্থতম ইঞ্জেকশন নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু, সেখানে গিয়ে জানতে পারি, ইঞ্জেকশন ফুরিয়ে গিয়েছে। জোগান না এলে দেওয়া যাবে না।’’ তাঁর আশঙ্কা, ইঞ্জেকশনের একটা কোর্স হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেলে তাঁর ছেলের কোনও ক্ষতি হয়ে যাবে না তো?

Advertisement

ঘটনাটি জানতে পেরে বাঘমুণ্ডির কংগ্রেস বিধায়ক নেপাল মাহাতো অভিযোগ তোলেন, ‘‘সরকারি চিকিৎসা যে তলানিতে পৌঁছে গিয়েছে, তা হঠাৎ করে জরুরি একটা ইঞ্জেকশনের জোগান বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনাতেই প্রমাণিত। গরিব মানুষ দামী ওই ইঞ্জেকশন কী ভাবে কিনবেন?’’ বিষয়টি তিনি রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তাদের নজরে আনবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন নেপালবাবু।

পাথরডি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিএমওএইচ অমরেন্দ্র রায় বলেন, ‘‘বেশ কিছু দিন ধরেই এআরভি পাওয়া যাচ্ছে না। জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে বিষয়টি জানিয়েছি। এখনও পাইনি।’’

জেলার অন্যত্রও একই সমস্যা। হুড়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আধিকারিক কালীপদ সোরেন বলেন, ‘‘আমাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও বেশ কিছু দিন ধরে এআরভি পাওয়া যাচ্ছে না।’’ ঝালদার বিএমওএইচ দেবাশিস মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও তিন সপ্তাহ ধরে এআরভি নেই। এর মধ্যে জনা তিনেক কুকুরের কামড়ের প্রতিষেধক নিতে এসেছিলেন। ঝালদা পুরসভায় ওই ইঞ্জেকনশন রয়েছে শুনে সেখানে রোগীদের পাঠানো হয়।’’

তাহলে উপায় কী?

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘মাঝখানে স্বাস্থ্য ভবনের অনুমতি নিয়ে আমরা বাইরে থেকে প্রায় ২০০০ এআরভি কিনেছিলাম। সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তা ভাগ করে দেওয়া হয়।’’ তিনি জানান, স্বাস্থ্য ভবন এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করেছে। শীঘ্রই এআরভি পাওয়া যাবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন