রঘুনাথপুর কলেজে ডিএসও-র বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় মহকুমার ছাত্রছাত্রীদের সাফল্যে খুশির পাশাপাশি একটি বিষয়ে আশঙ্কাও দেখা দিয়েছিল পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের মনে। জেলার কলেজগুলির মোট আসন সংখ্যার তুলনায় এ বার উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণদের সংখ্যা অনেকটাই বেশি। এই পরিস্থিতিতে রঘুনাথপুর মহকুমার বেশ কিছু পড়ুয়ার ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার রঘুনাথপুর কলেজের সামনে অবস্থান করে ডিএসও কলেজের আসন সংখ্যা বাড়ানোর আবেদন করেছে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, মহকুমার প্রায় সাতশোরও বেশি পড়ুয়া আবেদন করেও এখনও কোনও কলেজে ভর্তির সুযোগ পাননি। রঘুনাথপুর কলেজের ভর্তির ছ’ দফা মেধা তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। তার পরেও ভর্তির সুযোগ পাননি কমবেশি পাঁচশো আবেদনকারী। কাশীপুরের মাইকেল মধুসূদন কলেজে ন’ দফা মেধা তালিকা প্রকাশের পরেও সুযোগ পাননি প্রায় আড়াইশো আবেদনকারী। দু’টি কলেজই সিধো কানহো বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আসন বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। সেই প্রস্তাব বিবেচনা করে দেখার আশ্বাসও মিলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে।
মহকুমা সদরে রঘুনাথপুরে বিভিন্ন এলাকা থেকে যাতায়াত করা সহজ। রঘুনাথপুর কলেজ পরিচালন সমিতির এক সদস্য বলেন, ‘‘লাগোয়া এলাকা ছাড়াও পাড়া, সাঁতুড়ি-সহ বিভিন্ন ব্লকের ছাত্রছাত্রীরা এই কলেজে ভর্তি হতে আসেন। ফলে প্রতি বছরই মহকুমার অন্য কলেজের তুলনায় রঘুনাথপুর কলেজে ছাত্র ভর্তির চাপ বেশি থাকে।’’ কাশীপুর কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্য তথা কাশীপুরের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘উচ্চমাধ্যমিকে বেশি সংখ্যক ছাত্রছাত্রী উত্তীর্ণ হওয়ায় ভর্তির চাপ বেড়েছে। এখনও বিভিন্ন বিষয়ে আবেদন করা প্রায় আড়াইশো জন সুযোগ পাননি।’’
কলেজগুলির সূত্রে জানা গিয়েছে, অনলাইনে আবেদনের সুযোগ থাকায় এক সঙ্গে অনেক কলেজে আবেদন করছেন অনেকে। তাদের অনেকেই ভর্তি না হওয়ায় বেশ কয়েক দফায় মেধা তালিকা প্রকাশ করতে হচ্ছে। তার পরেও উচ্চমাধ্যমিকে যে সমস্ত ছাত্রছাত্রী ৩০-৪৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন তাঁদের ভর্তি নিয়েই সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। পাড়া ব্লকের সাঁওতালডিহি, রুকনি গ্রামের ছাত্র দীননাথ দে, উমা মাহাতো, সাঁতুড়ির হাসডিমা গ্রামের বিবেক মাহাতো, গোলকুণ্ডার কুণাল মাহাতোরা বলেন, ‘‘রঘুনাথপুর কলেজে পাস কোর্সে ভর্তির জন্য অনলাইনে ফর্ম পূরণ করেছিলাম। এখনও ভর্তির তালিকায় নাম ওঠেনি। এ দিকে ভর্তির শেষ দিন এগিয়ে আসছে। এ বছর আর সুযোগ পাব কি না বুঝতে পারছি না।’’
ডিএসওর পুরুলিয়া জেলা সভাপতি স্বদেশপ্রিয় মাহাতো বলেন, ‘‘কলেজগুলিতে আসন সংখ্যা বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু ভর্তির প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছলেও এখনও তা বাড়েনি। কলেজে এসে ফিরে যাচ্ছেন সুযোগ না পাওয়া পড়ুয়ারা।’’
কলেজে ভর্তির সমস্যা এখনও না মিটলেও রঘুনাথপুরের মাধ্যমিক উত্তীর্ণ পাঁচ পড়ুয়াকে শহরের স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মহকুমা প্রশাসনের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জয় পাল। শহরের এমএম হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ওই পাঁচ জন উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না বলে দাবি করে তাদের নিয়ে মহকুমা শাসকের দ্বারস্থ হয়েছিল ডিএসও। সঞ্জয়বাবু জানান, শহরের দু’টি স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই পাঁচ জনকে ভর্তি নিতে বলা হয়েছে। সেই প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে।