বৃষ্টি থেকে বাঁচতে আছে বর্ষাতি। নেই হেলমেট। পুরুলিয়া শহরের বিটি সরকার রোডে। ছবি: সুজিত মাহাতো
শাল সামলাবেন না ছাতা— পুরুলিয়ার বাসিন্দাদের সোমবার এমনই সঙ্কট ছিল।
রবিবার রাত থেকেই জেলার প্রায় সমস্ত এলাকায় শুরু হয় ঝিরঝিরে বৃষ্টি। সোমবার দিনভর চলেছে। তার দোসর আবার উত্তুরে হাওয়া। হুড়মুড় করে পারদ অনেকটাই পড়ে গিয়েছে দুইয়ে মিলে। রবিবারের ছুটির মেজাজ চুঁইয়ে চলে এসেছিল সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনটিতেও। জেলা সদর শহর তো বটেই, মহকুমাসদর রঘুনাথপুর, ঝালদা ও মানবাজারের রাস্তাঘাটে ভিড় ছিল বেশ কম।
মানবাজারে ব্যাঙ্ক মোড়ে লটারির টিকিট বিক্রি করেন অম্বুজ ধীবর। সোমবার বেলা ১১টা পর্যন্ত রঙিন ছাতা খাটিয়ে বসেছিলেন। বলছিলেন, ‘‘কোনও খদ্দের নেই। অযথা বসে থেকে কী করব? বাড়ি চলে যাব এ বারে।’’ মানবাজারের ইন্দকুড়ির নির্মাণকর্মী শেখ জিয়াউল বলেন, ‘‘শ্রমিকেরা আজ কাজে আসেননি। জোগাড়ে না থাকলে কাজ হবে কী করে!’’
পুঞ্চার বাসকর্মী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় চায়ের দোকানে কাচের গ্লাস দু’হাতে ধরে ওম নিচ্ছিলেন। বললেন, ‘‘খারাপ আবহাওয়ার জন্য আজ যাত্রীও কম। সকাল থেকে এক দফা ভিজেছি। ঠান্ডায় কাঁপুনি ধরে গেল।’’ জেলার বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে এ দিন যাত্রীর সংখ্যা অন্য দিনের তুলনায় কম ছিল। পুরুলিয়া শহরের স্ট্যান্ডে প্রায়ই ঠেলাগাড়ির দাপটে বাস বেরোতে হিমসিম খায়। রবিবার সেই এলাকাও ছিল বেশ ফাঁকা। জেলা বাসমালিক সমিতির সম্পাদক প্রতিভারঞ্জন সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘দু’-একটি ছাড়া প্রায় সব লাইনে বাস ছিল। তবে যাত্রী না থাকায় অধিকাংশ বাস ফাঁকাই চলেছে।’’
পুরুলিয়া শহরে জেলাশাসকের দফতরের সামনে বেশ কয়েকটি অফিস রয়েছে। সাধারণত দেখা যায়, সপ্তাহের প্রথম দিনে ওই রাস্তায় জটে পড়ে নাজেহাল হচ্ছেন পথচারী, অফিস যাত্রীরা। নাগাড়ে বৃষ্টি আর উত্তুরে হাওয়া সোমবার ছবিটা বদলে দিয়েছিল।