Durga Puja 2020

পুজো-অনুদান পুরসভারও, তুঙ্গে বিতর্ক

যে ১৫টি পুজো আর্থিক সমস্যায় ভুগছে সেগুলিকে সাহায্য করতেই নিজস্ব তহবিল থেকে ৫০০০ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত  

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২০ ০২:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

পুজোর অনুদান মামলায় চূড়ান্ত নিষ্পত্তি এখনও বাকি। তবে ৩৪ হাজার পুজো কমিটিকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই বিতর্কে। সেই বিতর্কের মধ্যেই দুবরাজপুর পুরসভা শহরের ১৫টি ‘আর্থিকভাবে দুর্বল’ পুজো কমিটিকে ৫০০০ টাকা করে অনুদান দিয়ে বিতর্কে জড়াল। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আবেদনের ভিত্তিতে শুক্রবার পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের পক্ষ থেকে ১৫টি পুজো কমিটির সম্পাদকের হাতে নির্দিষ্ট অঙ্কের চেক তুলে দেওয়া হয়। এই ‘খয়রাতির’ পিছনে ভোট সর্বস্ব রাজনীতিই দেখছে বিরোধীরা। এ ভাবে অনুদান দেওয়ায় পুরসভার এক্তিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তারা।

Advertisement

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরে মোট ৪০টি দুর্গাপুজো হয়। তারমধ্যে মূর্তি পুজোর সংখ্যা ৩০টি। বাকি পুজো হয় ঘটে। রাজ্য সরকারের থেকে ২০টি পুজো অনুদান বাবদ ৫০ হাজার টাকা করে পেয়েছে। বাকি কুড়িটি পুজোর মধ্যে যে ১৫টি পুজো আর্থিক সমস্যায় ভুগছে সেগুলিকে সাহায্য করতেই নিজস্ব তহবিল থেকে ৫০০০ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। পুর-প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান পীযূষ পাণ্ডে বলছেন, ‘‘এই ১৫টি পুজোর তালিকায় বেশিরভাগই পারিবারিক পুজো। আর্থিক সমস্যার জন্য পুজো চালাতে সমস্যা হচ্ছিল তাঁদের। তাই আবেদনের ভিত্তিতে তাঁদের সাহায্য করা হয়েছে।’’

বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলের প্রশ্ন, ‘‘অর্থকষ্টটা কি শুধু এ বারই হল? মেয়াদ উত্তীর্ণ একটি পুরসভার প্রশাসক বোর্ড কোন আইনে এমন অনুদান দেয়?’’ তাঁর ক্ষোভ, ‘‘যে ভোট সর্বস্ব রাজনীতি করার জন্য পুজো কমিটিগুলিকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দিয়েছে রাজ্য সরকার, সেই একই পথে হেঁটে পুরসভাও শহরের পুজোগুলিকে টাকা দিয়েছে। লক্ষ্য বিধানসভার পাশাপাশি আগামী বছর দুবরাজপুর পুরসভায় ভোটও। মানুষ সব বোঝেন।’’

Advertisement

বিরোধীরা মনে করাচ্ছেন, গত লোকসভা নির্বাচনে দুবরাজপুরে ১৬টি ওয়ার্ডের পুরসভার ১১টিতেই পিছিয়ে ছিল শাসক দল। এই পরিস্থিতিতে পরিস্থিতি সামাল দিতে এমন রাস্তা বেছেছে শাসক দল। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সিপিএমের শীতল বাউড়ির কটাক্ষ, ‘‘সরকারি টাকা এ ভাবে কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অনুদান হিসাবে দেওয়া যায় কি না তা নিয়ে মামলা চলছে। সেই পথেই তো হাঁটল পুরসভা। এখানে ভোটের অঙ্কই প্রাধান্য পেয়েছে। যদি জনহিতকর কাজ করার সদিচ্ছা থাকত তাহলে কয়েকটি পুজোকে অনুদান না দিয়ে কষ্টে থাকা মানুষের জন্য ভাবত পুরসভা।’’

যদিও বিরোধীদের দাবি মানতে চাননি পুর-প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন পীযূষ পাণ্ডে। তিনি বলেন, ‘‘পুজো কমিটিকে অনুদান দেওয়ার সঙ্গে ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই। অহেতুক রাজনীতি করা হচ্ছে। এটা নিতান্ত আর্থিক সমস্যায় পড়া পুজোগুলির পাশি দাঁড়ানো।’’ তবে প্রশাসক বোর্ডের এক্তিয়ার ভাঙার প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি। এই সাহায্য পাওয়া, দুবরাজপুরের প্রাচীনতম পারিবারিক পুজোর অন্যতম আয়োজক গণেশ কবিরাজ পুরসভার এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন