Durga Puja 2022

দুর্গাপুজো নয়, পুরুলিয়ার এই গ্রামের ঐতিহ্য রাজা হুদুড়ের স্মৃতিতে মহিষাসুরের আরাধনা

সাঁওতালদের খেরওয়াল জনগোষ্ঠীর উপাস্য দেবতা হল হুদুড়। জনশ্রুতি, হুদুড় নামে এক অনার্য রাজা ছিলেন। তিনি প্রবল বলশালী রাজা ছিলেন। আর্যরা ভারতে আসার পর তাঁকে পরাজিত করতে পারছিল না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২৩:১৭
Share:

কাশীপুরে হুদুড় পুজোর প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র।

মা দুর্গা নয়, পুরুলিয়ার কাশিপুর থানার ভালাগোড়া গ্রামে অকালবোধনে হয় মহিষাসুরের আরাধনা। নবমীর দিনে আদিবাসী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের তামাম মানুষ হুদুড় ( হিন্দু ধর্ম মতে মহিষাসুরের ) পুজো করেন। স্মরণ সভাও করা হয়।

Advertisement

সাঁওতাল খেরওয়াল জনগোষ্ঠীর উপাস্য দেবতা হল হুদুড়। জনশ্রুতি, হুদুড় নামে এক অনার্য রাজা ছিলেন। তিনি প্রবল বলশালী রাজা ছিলেন। আর্যরা ভারতে আসার পর কোনও ভাবে তাঁকে পরাজিত করতে পারছিল না। তাই রাজাকে হত্যা করার জন্য এক সুন্দরী নারীকে রাজার দরবারে পাঠানো হয়। রাজা হুদুড় তাঁর রূপে মুগ্ধ হয়ে বিবাহের প্রস্তাব দিলে ওই নারী রাজি হন। এর পর ছলনার আশ্রয় নিয়ে ওই নারী রাজা হুদুড়কে হত্যা করেন।

এর পর আর্য নৃপতি হুদুড়ের রাজ্য আক্রমণ করেন। প্রজারা ভীত হয়ে ধর্মগুরুর স্মরণাপন্ন হলে তিনি সকল প্রজাকে নদীতে স্নান করে নারী বেশ ধারণ করে নৃত্য বলেন। নারীদের সেই নৃত্য দেখে আর্য বাহিনী বিরত হয়। এই ভাবে প্রজারা রক্ষা পান। সেই প্রবাদ অনুসরণ করে এখনও নৃত্য হয় মহিষাসুরের পুজোয়। পুরুষরা নারীবেশ ধরে যে নৃত্য করেন, তাকে ধাসাই নাচ বলে।

Advertisement

কাশীপুরে এই পুজোকে হুদুড় দুর্গাপুজো বলা হয়। যদিও জেলার বিজ্ঞান মঞ্চের জেলা সম্পাদক নয়ন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কর্নাটকের মহীশূর রাজ্যের অধিপতি ছিলেন মহিষাসুর। ওই সম্প্রদায়ের মূল জীবিকা ছিল লোহা গলানো। এ ছাড়াও তাঁরা মহিষ পালন করতেন।’’ তিনি জানান, অসুর জাতি ঝাড়খণ্ডের গুমলা জেলায় এখনও রয়েছেন। এ রাজ্যের মালদহ এবং কোচবিহারেও তাঁদের বসবাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন