যানজটে বিরক্ত জিএম নির্দেশ দিতেই উচ্ছেদ শুরু আদ্রা স্টেশন চত্বরে

ঘটনা হল, স্টেশন লাগোয়া ওই এলাকায় বেশ কিছু অবৈধ দোকান রয়েছে। রাস্তার পাশেই ঠেলায় পসরা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন অনেকে। আনাজ নিয়ে বসেন বিক্রেতারা। এর ফলে ক্রমশ সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে ওই রাস্তাটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আদ্রা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৭ ০৭:২০
Share:

বাজার দিয়ে যাওয়ার পথে যানজটে আটকে পড়েছিলেন দক্ষিণ পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার। ক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তার পাশের অবৈধ দোকান ভাঙার নির্দেশ দেন তিনি। জিএম চলে যাওয়ার পরেই, রাতারাতি সেই নির্দেশ পালনে শুরু হয়ে গেল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আদ্রার নর্থ সেটলমেন্টের স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ভাঙা হল অবৈধ দোকান এবং রাস্তা দখল করে থাকা দোকানের অংশ। পুজোর আগে এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ ওই এলাকার ব্যবসায়ীরা। তাঁদের অভিযোগ, ‘ধর তক্তা মার পেরেক’ ঢঙে এই উচ্ছেদ হয়েছে। ব্যবসায়ীদের দিকটি সহানুভূতির সঙ্গে দেখা হয়নি।

Advertisement

বুধবার আদ্রা ডিভিশন পরিদর্শনে এসেছিলেন দক্ষিণ পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার এস এন অগ্রবাল। মূলত আদ্রা-বোকারো শাখা এবং পুরুলিয়া স্টেশন পরিদর্শনের কর্মসূচি ছিল তাঁর। কিন্তু স্পেশ্যাল ট্রেন থেকে নেমেই আচমকা জিএম চলে যান নর্থ সেটলমেন্টের বাজার এলাকা পরিদর্শনে। রেল সূত্রের খবর, স্টেশন সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শন গিয়ে যানজটে আটকে পড়েন জিএম।

ঘটনা হল, স্টেশন লাগোয়া ওই এলাকায় বেশ কিছু অবৈধ দোকান রয়েছে। রাস্তার পাশেই ঠেলায় পসরা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন অনেকে। আনাজ নিয়ে বসেন বিক্রেতারা। এর ফলে ক্রমশ সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে ওই রাস্তাটি। বড় গাড়ি ঢুকলে যানজট অবধারিত। এই সমস্ত দেখে ক্ষুব্ধ জিএম সঙ্গে থাকা ডিআরএম (আদ্রা)-কে দখলি জমি খালি করিয়ে পুরো রাস্তা পরিষ্কার করানোর নির্দেশ দেন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকালে রেলের পদস্থ কর্তা-সহ আরপিএফের কর্মীরা স্টেশন লাগোয়া ওই এলাকায় পৌঁছে যান। ভারী যন্ত্র নিয়ে শুরু হয় অবৈধ দোকান ভাঙার কাজ। রেল সূত্রের খবর, বুধবার বিকেলেই ওই দোকানগুলিতে মৌখিক ভাবে বিষয়টি জানিয়ে রাখা হয়েছিল। আগে থেকে মালপত্র সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তখনই। এ দিন যে সমস্ত বৈধ দোকান নির্দিষ্ট জমি ছাড়িয়ে রেলের জায়গাও দখল করে বসে রয়েছে, সেগুলির বাড়তি নির্মাণ ভেঙে দেওয়া হয়।

পুজোর আগে এই ধরণের ঘটনায় ক্ষুব্ধ অনেক ব্যবসায়ী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু দোকানদারের কথায়, ‘‘দোকানের এলাকা ছাড়িয়ে সামান্য ছাউনি ছিল। যাতে বৃষ্টির ঝাপটা ভিতরে চলে না আসে। যাতায়াতে তাতে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু সেটাও ভাঙতে বাধ্য করা হয়েছে।’’ তাঁদের আরও দাবি, রাস্তার পাশে যাঁরা আনাজ বিক্রি করেন বা ঠেলা নিয়ে বসেন, তাঁদের জন্য স্টেশন চত্বরে মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি করে দেওয়ার জন্য রেল কর্তৃপক্ষের কাছে অনেক বার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু জমি থাকা সত্বেও রেল সেই ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করেনি।

তবে দোকানদাররে অভিযোগ মানতে নারাজ রেলের কর্তারা। ডিআরএম (আদ্রা) শারদকুমার শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট জমির থেকে বেশি জায়গা দখল করে দোকান তৈরি করেছেন অনেকে। অনেকে অনেকটা এলাকা নিয়ে শেড তৈরি করেছিলেন। ফলে রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে পড়েছিল। সাধারণ মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য দোকানগুলির বাড়তি অংশ ভাঙতে বলা হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন