খেতজমিতে আগুন নয়, পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

ধান বা গম কেটে নেওয়ার পরে জমিতে পড়ে থাকা অংশ (নাড়া) আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে মাটিতে মিশিয়ে নিলে জমি নাকি উর্বর হয়। গ্রামে-গঞ্জে প্রচলিত ধারণা মেনে এ যাবত কাল এটাই করে এসেছেন চাষিরা। শুধু নাড়া কেন, জমির আলে থাকা কাশ বা শরের ঝোঁপেও এ ভাবে আগুন দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:৫৯
Share:

ধান বা গম কেটে নেওয়ার পরে জমিতে পড়ে থাকা অংশ (নাড়া) আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে মাটিতে মিশিয়ে নিলে জমি নাকি উর্বর হয়। গ্রামে-গঞ্জে প্রচলিত ধারণা মেনে এ যাবত কাল এটাই করে এসেছেন চাষিরা। শুধু নাড়া কেন, জমির আলে থাকা কাশ বা শরের ঝোঁপেও এ ভাবে আগুন দেওয়া হয়। কিন্তু এমনটা করলে জমি তো উর্বর হবেই না, উল্টে মাটির উপকারি জীবাণু, পোকামাকড় মরে গিয়ে ক্ষতি করবে জমির-ই। সঙ্গে ঘটবে পরিবেশ দূষণ। অন্তত এমনটাই বলছে কৃষি বিজ্ঞান। তাই চাষিরা যেন এমন কাজ ভুলেও না করেন, তা নিয়ে চলছে প্রচার।

Advertisement

গত সোমবার ‘বিশ্ব মৃত্তিকা দিবসে’ সিউড়িতে জমির স্বাস্থ্যপরীক্ষার কার্ড তুলে দেওয়ার সময়ে সমবেত কৃষকদের এ ব্যাপারে সতর্ক করেছেন কৃষি আধিকারিকেরা। জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) সমীর ঘোষ বলেন, ‘‘চাষিদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট বিলি করা হচ্ছে ঠিকই, তবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ব্লক কৃষি দফতর থেকে সরাসরি কৃষকদের এ বিষয়ে সতর্ক করাকে।’’

আধিকারিকেরা জানান, গ্রামের অধিকাংশ চাষিই মনে করেন জমিতে পড়ে থাকা খড়ের অংশ পুড়িয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিলে উৎকৃষ্ট সার হিসাবে কাজে লাগে। পোকামাকড়ও মরে যায়। এই প্রবণতা আরও বেড়ে গিয়েছে গত কয়েক বছর ধরে কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে জমি থেকে ফসল কাটার ফলে। যন্ত্র ফসল কাটলে এখন খড়ের প্রায় আটইঞ্চি অংশ জমিতেই থেকে যায়। সেটাতেই আগুন ধরিয়ে পোড়ানো হচ্ছে। সমীরবাবু জানাচ্ছেন, ফসলের জন্য চাই জমির উপরিভাগে ছ’ইঞ্চি অংশ। এমনিতেই জমিতে হারভেস্টার বা ট্রাক্টরের মতো ভারী যন্ত্র চালালে জমির নীচে একটা একটি শক্ত অংশ তৈরি হয়। যা বৃষ্টির জল ভূগর্ভে প্রবেশে বাধা দেয়। তাতে এমনিতেই মাটির ক্ষতি করছে। কিন্তু যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যন্ত্রের ব্যবহার আবশ্যিক। তার উপর জমিতে আগুন লাগালে উপকারি জীবাণু বা অনুখাদ্য নষ্ট হয়ে এক সময় জমিকে বন্ধ্যাত্বের দিকে ঠেলে দেবে।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন